সাতক্ষীরা সরকারি শিশু পরিবারের চার ছাত্রকে বহিষ্কারের সংবাদ সম্মেলন
সাতক্ষীরা সরকারি শিশু পরিবার থেকে চার ছাত্রকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের শিক্ষা ও আবাসন মেয়াদ থাকা সত্ত্বেও তাদের বহিস্কার করার ঘটনায় প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার জেলা নাগরিক সমাজ এর প্রতিবাদ জানিয়ে তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার দাবিতে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। বুধবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এই তথ্য প্রকাশ করে বহিস্কৃত চার ছাত্র জানায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমানযোগ্য অভিযোগ নেই। কর্তৃপক্ষ তাদের পরিবারের কাছে কেবলমাত্র শৃংখলা ভঙ্গের যুক্তি দেখিয়ে বহিষ্কারের চিঠি পাঠিয়েছে। বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাখ্যান করে ফের শিশু সদনে ঢুকলে তাদেরকে পুলিশে দেওয়া হবে বলেও ভয় দেখানো হয়েছে। বহিস্কৃত ছাত্ররা হচ্ছে একাদশ শ্রেণির ছাত্র সাতক্ষীরার ধুলিহর গ্রামের আবদুল করিম, আশাশুনির কাদাকাটি গ্রামের মুরশিদ গাজি, যুগিপোতা গ্রামের এখলাছুর রহমান ও পাটকেলঘাটার শেখ সবুজ হোসেন। সরকারি বিধি মোতাবেক শিশু সদনে তাদের থাকার মেয়াদ আট মাস থেকে চার বছর এখনও সামনে রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে তারা জানায়, ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত সাতক্ষীরা সরকারি শিশু পরিবারে ১০০ শিশুর আবাসন ব্যবস্থা থাকলেও কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা, শিশুদের খাদ্য ও শিক্ষায় যথাযথ সহায়তা না করা , শিক্ষকদের রুঢ় আচরন এমনকি তাদের ওপর যৌন নির্যাতনের ঘটনায় এখন সদনে ৫০ জনেরও কম ছাত্র রয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষক কর্মচারিদের ১৭ টি পদের বিপরীতে রয়েছেন মাত্র ৯ জন। সংবাদ সম্মেলনে তারা জানায় ‘ আমাদের ওপর যৌন নির্যাতন, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না দেওয়া, খেতে না দেওয়া, আত্মীয় স্বজনের সাথে দেখা করতে না দেওয়া সহ নানা বিষয়ে আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেছিলাম। এর ফলে আমাদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। হঠাৎ করে গত ৫ ফেব্র“য়ারি আমাদের বাড়িতে আমাদের চারজনকে বহিষ্কারাদেশ পাঠানো হয়’।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্ররা আরও জানায় ২০১৭ সালের ৩০ জুলাই শিশু সদনে নানাবিধ অনিয়মের পাশাপাশি আমাদের বন্ধুদের ওপর ভয়ংকর যৌন নির্যাতন চালিয়েছিল চারজন কর্মকর্তা কর্মচারি। আমরা এর প্রতিবাদ করলে কয়েকজন কর্মচারিকে কেবলমাত্র বহিষ্কার করেছিল কর্র্তৃপক্ষ। আবারও সেই পুরনো রাগ এবং ক্ষোভের নতুন বহিঃপ্রকাশ ঘটালেন সদন কর্তৃপক্ষ। তারা জানায় যৌন নির্যাতনের প্রতিবাদ করলে শিশুদের দিয়ে শিশুদের মারপিট করানো হয়। আর এ নিয়ে কোনো অভিযোগ করলে উপ তত্ত্বাবধায়ক মো. জামালউদ্দিন পুলিশ ডেকে আমাদের গ্রেফতারের ভয় দেখান। জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মোঃ মহিউদ্দিন ঘটনার তদন্তে এসে সদন কর্তপক্ষের সঙ্গে কথা বলে চলে যাওয়ার সময় তারা কিছু কথা বলতে চাইলে তাদের কথা শোনেননি তিনি। তারা অভিযোগ করে আরও জানায় ২০১৭ সালের ৩০ জুলাইয়ের যৌন নির্যাতন বিষয়ক ঘটনাবলীর পর আট মাস পার হলেও দোষীরা শাস্তি পায়নি। উল্টো শিশুদের বহিষ্কার করছেন তারা। তাদেরকে বহিস্কারের কারণ জানতে চাইলে সরকারি শিশু সদন থেকে জানানো হয় ‘তাদের বিরুদ্ধে শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগ আছে। শিশু পরিবার ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে’। এ বিষয়ে জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা দেবাশীষ সরদার জানান তাদের বিরুদ্ধে শৃংখলা ভঙ্গের নানা অভিযোগ আছে। এদিকে মেয়াদ থাকার পরও চার শিশুকে বহিস্কার করার প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনের ডাক দিয়েছে জেলা নাগরিক সমাজ।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বর্ণিল সাজে সেজেছে সাতক্ষীরার ৫৮৪টি দুর্গাপূজা মন্ডপ
সনাতন ধর্মালম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব (দূর্গাপূজা) কে কেন্দ্রবিস্তারিত পড়ুন
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন