সাতক্ষীরায় হলুদের বাপ্পার ফলন,জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলায় সরবরাহ
সাতক্ষীরা জেলায় হলুদের বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলাতে সরবরাহ করা হচ্ছে হলুদ। চলতি মৌসুমে এ জেলায় হলুদ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়ে ছিল ৯ হাজার ৫০০ টন। উৎপাদন হয়েছে তার চেয়ে বেশি। এবছর জেলায় হলুদের আবাদ হয়েছে প্রায় সাড়ে ৬০০ হেক্টর জমিতে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরায় মোট ৫৭৮ হেক্টর জমিতে হলুদ আবাদের লক্ষ্য ছিল। লক্ষ্য অনুযায়ী, সদর উপজেলায় ১২০, কলারোয়ায় ৯০, তালায় ২৮৬, দেবহাটায় ১৫, কালীগঞ্জে ১০০, আশাশুনিতে ১৫ ও শ্যামনগরে ৪৩ হেক্টর জমিতে হলুদ আবাদ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চলতি মৌসুমে জেলায় হলুদ আবাদ লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে যায়। জেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী চলতি মৌসুমে জেলার ৬৬৪ হেক্টর জমিতে হলুদ আবাদ হয়েছে। এ হিসাবে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় ৮৬ হেক্টর জমিতে মসলাজাতীয় পণ্যটির আবাদ বেশি হয়েছে। চলতি মৌসুমে জেলায় ৯ হাজার ৯৬০ টন হলুদ উৎপাদন হয়েছে। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ১ হাজার ৮০০, কলারোয়ায় ১ হাজার ৩৫০, তালায় ৪ হাজার ২৯০, দেবহাটায় ১৫০, কালীগঞ্জে ১ হাজার ৫০০, আশাশুনিতে ১৫০ ও শ্যামনগরে ৬৪৫ টন হলুদ উৎপাদন হয়েছে।
চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরায় হলুদ আবাদ লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে গেলেও কয়েক বছর ধরে এর উৎপাদন কমে আসছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, আবাদি জমিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কথা। এ প্রসঙ্গে জেলার তালা উপজেলার খলিষখালী গ্রামের আব্দুল গফুর শেখ জানান, দীর্ঘদিন ধরে তিনি হলুদ আবাদ করে আসছেন। তবে কয়েক বছর ধরে পণ্যটির আবাদ কমিয়ে ফেলেছেন। জমিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় আগের মতো আর উৎপাদন হয় না। ফলে হলুদ আবাদ করে ক্ষতির সম্মুখিন হতে হয়েছে তাকে। এ কারণেই তিনিসহ বেশির ভাগ কৃষক হলুদ আবাদে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। তবে দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে এবছর চাষীরা হলুদ চাষে আগ্রহ দেখায়। কয়েকজন চাষী জানান, সমন্বিত চাষের মাধ্যমে একই জমিতে হলুদের সাথে কয়েক ধরণে সবজির চাষ করা যায়। ফলে তদারকি সহ হলুদ চাষে খরচ অনেক কম। চাষীরা হলুদের সাথে একই জমিতে ঝাল গাছ, বেগুন চাষ, মেটে আলু, ওলের চাকি চাষ করছে। হলুদের সাথে ওই সকল ফসল অতিদ্রুত ফলানো যায়। এতে ওই কৃষকের নিজের পরিবারের চাহিদা পুরণ করে বাজারে বিক্রি করে অধিক লাভবান হওয়া সম্ভব। এ বছর শুকনো হলুদের দাম বেশি থাকায় হলুদ বিক্রিতে মোটামুটি গতবারের থেকে বাজার পাবেন বলে আশা করছেন চাষীরা।
জেলার বেশির ভাগ ক্ষেত থেকে হলুদ তোলা শেষ পর্যায়। প্রান্তীক চাষীরা ইতোমধ্যে পাইকারী ব্যবসায়ীদের কাছে উৎপাদিত হলুদ বিক্রি করে দিয়েছে। তবে জেলার বিভিন্ন বাজারে হলুদের গুড়ার দাম নিয়ে ব্যাপক তারতম্য রয়েছে। খুচরা বাজারে দুইশত টাকা কেজি প্রতি হলুদের গুড়া বিক্রি হচ্ছে অন্যদিকে পাইকারী বাজারে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী আব্দুল মান্নান বলেন, হলুদ বেশ লাভজনক ফসল। সাতক্ষীরায় প্রতি হেক্টরে ১৫-১৬ টন পর্যন্ত হলুদ উৎপাদন হয়। কিন্তু উপকূলীয় জেলা হওয়ার কারণে বেশ কিছুদিন ধরে এখানকার আবাদি জমিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে দেখা দিচ্ছে জলাবদ্ধতা। এ দুই কারণে জেলার কৃষকরা হলুদ আবাদে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। তবে আমরা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কৃষকদের হলুদ আবাদের ক্ষেত্রে সবসময় প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে থাকি। যার ফলে এবছর হলুদের আবাদ বেড়েছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বর্ণিল সাজে সেজেছে সাতক্ষীরার ৫৮৪টি দুর্গাপূজা মন্ডপ
সনাতন ধর্মালম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব (দূর্গাপূজা) কে কেন্দ্রবিস্তারিত পড়ুন
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন