সাতক্ষীরায় বরখাস্তকৃত শিক্ষক স্বপদে বহাল
৩ বছর ৭ মাস ১২ দিন অনুপস্থিত থেকে ও সাতক্ষীরার সাতানি কুশখালি দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক অসিকুর রহমান চাকরিতে বহাল আছেন । তবে কিভাবে বহাল আছেন তার কোন সদউত্তর দিতে পারিনি মাদ্রাসা সুপার, সাবেক ও বর্তমান পরিচালনা কমিটির সভাপতিরা । পরিচালনা কমিিিটর সদস্যদের অভিযোগ মাদ্রাসা সুপার সরকারি নিয়ম নীতির প্রতি তোয়াক্কা না তার ভাইকে আজও স্বপদে রেখে বেতন উত্তোলন করছেন। সম্প্রতি এব্যাপারে সরকারের বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ করেছেন পরিচালনা কমিটির সাবেক সদস্য কুরবান আলি ।
খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, ২০০৭ সালের জনুয়ারি মাসের ১ তারিখে সাতানি কুশখালি দাখিল মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক অসিকুর রহমান কাজ করার জন্য বৈধভাবে সৌদি আরব যান । তিনি সেখানে ২০১১ সারেরে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত কাজ করেন । তার অনুপস্থিতিতে চাকুরি হতে অপসারণ সংক্রান্ত কাগজপত্র ২০০৮ সালের২৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোডের আপিল এ্যান্ড আরবিট্রেশন কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হয় । সভায় কাগজপত্র পর্যালোচনা করে অপসারণ প্রক্রিয়া সঠিক বিবেচিত হওয়ায় সর্ব সম্মিতিক্রমে চাকরি থেকে অপসারনের অনুমোদনের সুপারিস করা হয় । সাথে সাথে তার সাময়িক বরখাস্ত থাকা কালিন সময়ের প্রাপ্য ভাতা পরিশোধসহ বরখাস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য মাদ্রাসা শিক্ষা বোডের রেজিষ্টার প্রফেসার ড. মো: হাফিজুর রহমান মাদ্রাসা সুপার বরাবর একটি পত্র প্রেরন করেন । যার ফলে ২০০৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মাওলানা ওসিকুর রহমানকে স্থাযী ভাবে বরখাস্ত করা হয় ।
মজার ব্যাপার হল মাদ্রাসা সুপার বরখাস্তে কোন কাগজ পত্র মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে পাঠাননি । উল্টো নতুন করে রেজুলেশন তৈরি করে পুনরায় ২০১১ সালের ১৫ জানুয়ারি তাকে স্বপদে বহাল করে । ম্দ্রাসা সুপার মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে একের পর এক মন গড়া রেজুলেশন তৈরি করে চাচাত ভাই ওসিকুর রহমানের চাকুরিতে বহাল রাখার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন । সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত ওসিকুর রহমানকে কাগজ পত্র বৈধ করার জন্য সময় দেওয়া হয় কিন্তু এখনও পর্যন্ত তিনি চাকুরিতে বহাল করার বৈধ কোন কাগজ পত্র জমা দিতে পারেননি ।
নিয়ম অনুযায়ি কতৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ২ বছরের বেশি শিক্ষক প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত তিনি স্থায়ীভাবে চাকরি হারাবেন । অথচ অসিকুর রহমান ৩ বছর ৭ মাস ১২ দিন কতৃক্ষের বিনা অনুমতিতে প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন । স্থায়ী ভাবে বরখাস্ত হওয়ার পর ও কোন শক্তির বলে অসিকুর রহমান স্বপদে বহাল আছেন এবং সুপার কোন ক্ষমতা বলে বরখাস্তের কাগজ পত্র বোডে পাঠাননি এই বিষয়টি অবিভাবক , মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি ও সাধারণ মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছেন।
শিক্ষক অসিকুর রহমান জানান, নিয়ম আছে সরকারি শিক্ষকরা ২ বছর আর বেসরকারি শিক্ষরা ৫ বছর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকতে পারেন । সে কারণে কতৃপক্ষ তাকে স্বপদে বহাল রেখেছেন । তিনি যতদিন অনুপস্থিত ছিলেন ততদিন পর্যন্ত বেতন ভাতা গ্রহণ করেননি ।
মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য জাকির হোসেন ও কুরবান আলি জানান ,শুনেছি মেডিকেল দেখিয়ে অসিকুর রহমানকে চাকরিতে বহাল করেছে। সুপার নিজে রেজুলেশন করে তাদের নিকট থেকে স্বক্ষর করে নেয় ।
সাতানি কুশখালী দাখিল মাদ্রাসার সুপার নজরুল ইসলাম জানান, মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি আবু রায়হান ও সদস্য কুরবান আলি ক্ষমতা প্রয়োগ করে অসিকুর রহমানকে মাদ্রাসায় স্বপদে বহাল রাখতে বাধ্য করেছিলেন । সে কারণে অসিকুর রহমান আজও চাকরিতে বহাল আছে । সাবেক সভাপতি তাকে কাগজ পত্র বোডে পাঠাতে দেননি ।
মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি আবু রায়হান জানান , আরপিটিশন বোড অসিকুর রহমানকে সাসপেন্ড করার অডার দেয় । এসব কাগজ পত্র গোপন করে রাখে সুপার। তারা যখন জানতে পারে তখন ব্যবস্থা নিতে চাইলে সুপার মিটিং না দিয়ে রেজুলেশন কাগজে সহি করে নেয় । এর পর তারা আর মিটিং করতে পারিনি। ক্ষমতা থেকে তারা সরে এসেছেন । তিনি বলেন নতুন কমিটি এর ব্যবস্থা নেবেন । তিনি বলেন দুনীতি গ্রস্থ সুপার নিজে যা ইচ্ছা তাই করে । তবে তিনি জানান সভাপতি থাকা কালিন সময় পর্যন্ত ( এক বছর আগে ) অসিকুর রহমান কোন বৈধ কাগজ পত্র দেখাতে পারিনি ।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি গোলাম মোরশেদ জানান , তিনি মাত্র কয়েক মাস সভাপতি হয়েছেন। দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকার পরও কিভাবে অসিকুর রহমান স্বপদে বহাল আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন এর জবাব দিতে পারবে সরকার ও সাবেক সভাপতি । তিনি কোন ব্যবস্থা নেবেন কি না জানতে চাইলে কোন জবাব দেননি ।
সাতক্ষীরা জেলার ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার এস এম আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সম্প্রতি তিনি একটি অভিযোগ পেয়েছেন । সরেজমিনে তদন্ত করবেন । তিনি আরো বলেন আরবিট্রেশন বোড যদি কাউকে বরখাস্ত করে এবং তিনি যদি কোটে কোন মামলা না করে তবে তার যোগদান আইন সম্মত হয় না । তবে কমিটি যদি তাকে ছুটি দিয়ে থাকে এবং ছুটি নিয়ে সে যদি যায় এবং ২বছরের বেশি অবস্থান করে তবে সেটি ব্রেক অব সার্ভিস হিসেবে গণ্য হবে ।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে সরকার কাজ করছে’: লুৎফুল্লাহ এমপি
সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেছেন- ‘করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবেও উন্নয়নবিস্তারিত পড়ুন
কলারোয়ার দমদম বাজার মার্কেটের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন
কলারোয়ার দমদম বাজার মার্কেটের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হয়েছে।বিস্তারিত পড়ুন