সাতক্ষীরার কুল সীমানা পেরিয়ে বিদেশও যাচ্ছে
সাতক্ষীরা জেলার একটি প্রসিদ্ধ ফলের নাম কুল। এ জেলার নামকরণে গাণিতিকভাবে যে সাতটি জিনিস প্রসিদ্ধ তার মধ্যে কুল অন্যতম। জেলার প্রসিদ্ধ সাতটি জিনিস হলো- কুল, ওল, আম, ঘোল, সন্দেশ, মাদুর ও গাছের কলম।
তাই সাতক্ষীরায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হচ্ছে বিভিন্ন জাতের কুল। জেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে এই কুল। চলতি মৌসুমে জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক কুল চাষ করা হয়েছে। এবার উৎপাদনও বাম্পার হয়েছে বলে জানান চাষিরা।
অল্প সময়ে অধিক লাভজনক এ ফসলটি চাষে কৃষকদের মধ্যে খুবই আগ্রহ বাড়ছে বলে জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
সাতক্ষীরার বাউ, নারিকেল, গাব, বিলেতি ও আপেলকুলসহ বিভিন্ন প্রকার কুলের সুনাম রয়েছে দেশ-বিদেশে। বর্তমানে হাইব্রিড এসব কুল বাণিজ্যিকভিত্তিতে চাষ শুরু হওয়ায় ও লাভ বেশি হওয়ায় এর চাষ জেলায় বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। স্বল্প খরচ ও ঝুঁকি কম থাকায় জেলার বেকার যুবসমাজ ও চাষিদের একটি বিরাট অংশ এখন কুল চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। কুল চাষ করে এ জেলার অনেকেই তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়ে দূর করেছে বেকারত্ব, সৃষ্টি করেছে নুতন কর্মসংস্থানের।
সাতক্ষীরার বাউ, নারিকেল, বিলেতিসহ বিভিন্ন জাতের কুল দীর্ঘদিন ধরে তার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। দেশে-বিদেশে দিন দিন এর চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলায় এর চাষও বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত বছর এ জেলায় সর্বমোট ৪৯০ হেক্টর জমিতে ৩ হাজার ৪৩০ মে.টন বিভিন্ন জাতের কুল উৎপাদন হয়েছে। কুল উৎপাদন হয়েছিল হেক্টরপ্রতি ৭ টন।
চলতি বছরে এ জেলায় ৫শ হেক্টর জমিতে কুল চাষ হয়েছে। এবারে হেক্টরপ্রতি সাড়ে সাত থেকে আট টন কুল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
কুল চাষ করেই জেলার সহস্রাধিক পরিবার তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। ব্যক্তিগত উদ্যোগেই চাষিরা তাদের জমিতে বাণিজ্যিকভিত্তিতে কুল চাষ করে থাকে। তবে সুষ্ঠু বিপণন ব্যবস্থা না থাকায় চাষিরা তাদের উৎপদিত কুলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তারা। সরকারিভাবে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস থেকে তেমন কোন সহযোগিতা না পাওয়ায় চাষিরা কুল চাষে কিছুটা হলেও পিছিয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে উজ্জ্বল সম্ভাবনাময়ী মৌসুমী এ ফলের চাষ করে একদিকে যেমন এলাকায় নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হতে পারে, তেমনি দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব।
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের কুল চাষি আইয়ুব হোসেন জানান, পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমে এক বিঘা জমিতে বাউকুল চাষ করি। পরীক্ষামূলক হলেও প্রথম বছরে সব খরচ বাদ দিয়ে তার ৬৫ হাজার টাকা লাভ হয়।
তিনি জানান, ফসলটি লাভজনক হওয়ায় অন্যান্য ফসল উৎপাদন কমিয়ে দিয়ে ৫ বিঘার একটি বাগান করে তাতে বাউকুল চাষ করছেন গত তিন বছর ধরে। এতে তার প্রতি মৌসুমে সাড়ে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা লাভ হয়।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী আব্দুল মান্নান জানান, সাতক্ষীরার মাটি কুল চাষের জন্য উপযোগী। স্বল্প খরচে অধিক লাভজনক এ ফসলটি চাষে এ জেলার কৃষকদের মধ্যে খুবই আগ্রহ বাড়ছে।
তিনি জানান, চলতি মৌসুমে এ জেলায় ৫শ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের কুল উৎপাদন হয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর, কলারোয়া ও তালা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি কুল চাষ হয়েছে। আগামী বছর কুল চাষ এ জেলায় আরো বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আরো জানান।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে সরকার কাজ করছে’: লুৎফুল্লাহ এমপি
সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেছেন- ‘করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবেও উন্নয়নবিস্তারিত পড়ুন
কলারোয়ার দমদম বাজার মার্কেটের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন
কলারোয়ার দমদম বাজার মার্কেটের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হয়েছে।বিস্তারিত পড়ুন