২৫০ শিক্ষার্থীর লেখাপড়া লাটে, চলছে ফাঁকির মহড়া
সাতক্ষীরার কুখরালি প্রাথমিকের ৬ শিক্ষকের ৪ জন ছুটিতে
চাহিদা অনুযায়ী ছয় জন শিক্ষক শিক্ষিকা থেকেও কর্মস্থলে নেই সাতক্ষীরা শহরের কুখরালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। ফলে আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থীর এ স্কুলের লেখাপড়ায়ও ধ্বস নেমেছে।
এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বলেন তাদের ছেলেমেয়েরা স্কুলে যায় নিয়মিত। বাড়িতে এসে তারা জানায় আজ স্যার ক্লাসে আসেননি। কোনো কোনো দিন তারা জানায় আজ একজন বা দুজন স্যার সবগুলি ক্লাস নিয়েছেন। অভিভাবকদের দাবি এ অবস্থা চলতে থাকলে তাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া লাটে উঠবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে কুখরালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাগজে কলমে রয়েছেন ছয়জন শিক্ষক শিক্ষিকা। এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মনিরা খাতুন ২০১৬ এর এপ্রিল থেকে একই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাতৃত্বকালিন ছুটি ভোগ করেন। এর পর মাত্র কয়েকদিন স্কুলে এসে তিনি ফের একমাস পর ২৭ অক্টোবর থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত মেডিকেল ছুটিতে রয়েছেন। প্রশ্ন উঠেছে মাতৃত্বকালিন ছুটি ভোগের পর মেডিকেল ছুটি পান কিনা তা নিয়ে।
এদিকে এ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা ফাতেমা খাতুন ২০১৪ সালের ৮ আগস্ট থেকে মেডিকেল ছুটি নেন। ২০১৫ সালের ৭ জুন যোগদান করে তিনি ২০১৬ সালের ১৩ জুলাই থেকে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবার মেডিকেলে যান। এভাবে দফায় দফায় মেডিকেল ছুটি নিয়ে তিনি ২০১৭ এর ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত কাটান। এরপর কয়েকদিন হাজিরা দেওয়ার পর থেকে তিনি অননুমোদিত ছুটিতে গেছেন।
বিদ্যালয়ের আরেক সহকারি শিক্ষক মো. মোস্তফা ২০০৭ সালের ২৩ জুলাই যোগদান করেন। এরপর থেকে তাকে সচরাচর স্কুলে পাওয়া যায় না। মোস্তফা স্কুলকে জানান তাকে বেশিরভাগ সময় উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। কারণে অকারণে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে বসিয়ে রাখা হয়। এভাবে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে কাজ আছে এই মিথ্যা কথা বলে তিনি স্কুল ফাঁকি দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবদুল্লাহেল আসলাম হোসেন বলেন ‘মাঝে মধ্যে দুই একদিন তাকে অফিসে ডাকা হয়ে থাকে। তাই বলে মাসের ২০ দিন তিনি এভাবে স্কুল ফাঁকি দেন জানতাম না। এখন থেকে বিষয়টি দেখা হবে’।
সোমবার শিক্ষক মো. মোস্তফার সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন ‘আমি আইসিটি ট্রেইনিংয়ে আছি’। তবে স্কুলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তিনি যে ট্রেইনিংয়ে গেছেন তার কোনো আবেদন বা অনুমতি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার কাছে নেই।
এ বিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষিকা রঞ্জনা খাতুন বর্তমানে বিধি অনুযায়ী প্রাথমিক প্রশিক্ষনে রয়েছেন।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শেখ মাসুদ হোসেন জানান এ বিদ্যালয়ের চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ পাওয়া ছয় শিক্ষকের মধ্যে বিদ্যালয়ে নিয়মিত কর্মরত থাকছেন মাত্র দুজন । এরা হলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মোছা. মেহেরুননেসা ও মো. মিজানুর রহমান। তিনি জানান বিষয়টি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ( ভারপ্রাপ্ত) মো. মহিউদ্দিনকে জানালে তিনি বলেন ‘আপনি লিখিতভাবে আমাকে জানান’।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তাক আহমেদ বলেন ‘বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হবে। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার যাতে ক্ষতি না হয় সেটা নিশ্চিত করা হবে’।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বর্ণিল সাজে সেজেছে সাতক্ষীরার ৫৮৪টি দুর্গাপূজা মন্ডপ
সনাতন ধর্মালম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব (দূর্গাপূজা) কে কেন্দ্রবিস্তারিত পড়ুন
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন