মনিরামপুরের রাজগঞ্জে ভাসমান সেতু দেখতে উপচে পড়া ভিড়
মনিরামপুরের রাজগঞ্জে ভাসমান সেতু দেখতে উপচে পড়া ভিড় হচ্ছে।
সরকারের অনুদান কিংবা প্রকৌশলীর সহযোগিতা ছাড়াই সাতক্ষীরা ও যশোর জেলার মধ্যবর্তী মনিরামপুর থানাধীন ঝাঁপা বাওড়ে ৫৬ যুবক এবং গ্রামবাসীর উদ্দোগে নির্মিত হয়েছে ভাসমান সেতু। সেই সেতুটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর জনসাধারণের চলাচলের জন্য খুলেও দেয়া হয়েছে। চলাচলের পাশাপাশি সেতুটি দেখতে গত কয়েকদিন হাজারো মানুষ প্রতিদিন সেখানে মিলিত হচ্ছেন।
খোজ নিয়ে জানা গেছে- ‘একতাই বল’ কথাটির প্রমাণ করেছেন যশোরের মণিরামপুরের ঝাঁপা বাওড় বেষ্টিত ঝাঁপা গ্রামবাসী ও সেখানকার ৫৬ যুবকের দল। ‘দেশের প্রথম দীর্ঘতম ভাসমান সেতু’ নির্মাণের মধ্যে দিয়ে তারা জয় করেছেন ঝাঁপা বাওড়।
প্লাস্টিকের ড্রামের ওপর নির্মিত হয়েছে ওই ভাসমান সেতুটি। একটি ড্রামের সাথে অপর ড্রামটি সংযোগ স্থাপন করে তার উপরে পাটাতন দিয়ে দীর্ঘ ওই সেতুটি নির্মান করা হয়েছে। দু’ধারে দেয়া হয়েছে দড়ির রেলিংও।
১৫-২০ হাজারেরও বেশি মানুষের দু:খ দুর্দশার কথা ভেবেই স্বেচ্ছাশ্রমে ৫৬জন যুবক ১০০০ ফুট ভাসমান সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করেন৷ সেতুটি ভাসমান রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে প্লাষ্টিক ড্রাম। ১০০০ ফুট সেতুতে ব্যবহার করা হয়েছে ৮৩৯ টি ড্রাম৷ যাতে পানি প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য ড্রামের মুখে থ্রেট টেফ দিয়ে আটকানো হয়েছে৷ ফ্রেম তৈরি করা হয়েছে লোহার এঙ্গেল দিয়ে। ফ্রেমের দুই পাশে দু’সারি ড্রাম দিয়ে পানিতে ভাসান হয়েছে সেতু৷ সেতুতে এঙ্গেল ও পাত ব্যবহার হয়েছে ২০টন৷ পাটাতনের সিট ব্যবহার হয়েছে ১৩টন৷
এ পর্যন্ত ব্যায়ের হিসাব জানতে চাইলে উদ্যোক্তা আসাদুজ্জামান বলেন- সব মিলে খরচ প্রায় ৬০-৭০ লক্ষ টাকা। পারাপারের বিষয়ে কোন টোল আদায় হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন- আগের নিয়মই থাকবে, নৌকায় যেমন পারাপার হতো সেই হিসেবেই পারাপার হবে।
যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জের ঝাঁপা বাওড়ে নির্মিত বৃহত্তম ভাসমান সেতুটি গত ২ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকাল ৫টা ১০মিনিটে যশোরের জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দীন ফিতা কেটে উদ্বোধনের মাধ্যমে খুলে দেয়া হয়৷
বিভিন্ন এলাকা থেকে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়ে মিলন মেলায় পরিনত হচ্ছে সেখানকার জনপদ। সেতুটি একনজর দেখার জন্য ভীড় জমাচ্ছেন ব্রিজের দু-পাশে।
কথা হয় ১৬গাধা মল্লিকপুর গ্রাম থেকে মেয়ের বাড়ী ঝাঁপা গ্রামে বেড়াতে আসা জনৈক রুহুল আমিন নামের এক ব্যক্তির সাথে। তিনি বলেন- ঝাঁপা গ্রামে মেয়ে বিয়ে দিয়েছি ২০বছর আগে। তখন পারাপার হতাম হাতে চালিত নৌকায়, তার অনেক বছর পর পারাপার হতাম ট্রলার নৌকায়। আজ ব্রিজ দিয়ে হেটে হেটে মেয়ের বাড়ী আসলাম৷ আর ঘাটে এসে নৌকার জন্য বসে থাকতে হবে না৷
সাতক্ষীরার কলারোয়া থেকে আসা দর্শনার্থী সুমন হোসেন বলেন- অনলাইন পত্রিকা ও টিভিতে দেখে ফ্যামিলি নিয়ে এসেছি। ব্রিজ দেখে মনটা ভরে গেছে৷
জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দীন ফিতাকেটে উদ্বোধন শেষে নিজের অভিমত ব্যক্ত করে বলেছিলেন- প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন সময়ে সেনাবাহিনী অস্থায়ী ভাসমান সেতু তৈরি করে। পরে আবার সেটা উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু প্লাস্টিকের ড্রামের ওপর এতো বড় ভাসমান সেতু হতে পারে, তাও আবার বেসরকারি উদ্যোগে- এমনটি কোনোদিন দেখিনি বা শুনিনি। গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে এতবড় একটা কাজ করতে পেরেছেন সেই জন্য আমি উদ্যোক্তাসহ ঝাঁপা গ্রামবাসীকে সাধুবাদ জানাই।’
বাঁওড়ের ওপর স্থায়ী সেতু তৈরির ব্যাপারে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছিলেন জেলা প্রশাসক।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে সরকার কাজ করছে’: লুৎফুল্লাহ এমপি
সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেছেন- ‘করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবেও উন্নয়নবিস্তারিত পড়ুন
কলারোয়ার দমদম বাজার মার্কেটের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন
কলারোয়ার দমদম বাজার মার্কেটের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হয়েছে।বিস্তারিত পড়ুন