কলম থেকে কলাম...
বিএনপির হাতেই আছে ‘নির্বাচনী ট্রাম্পকার্ড’
নির্বাচনী রাজনীতিতে অনেকটি পিছিয়ে জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। ব্যাপক জনসমর্থন থাকলেও বিগত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের পর কোনঠাসা হয়ে পড়ে দলটি। বিশেষ করে রাজপথে আন্দোলন করে সফল হতে পারেনি, বরং গ্রেফতার আর মামলা বিপর্যস্ত নেতাকর্মীরা। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, পর পর দুই টি সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলে দলের নিবন্ধন বাতিলের (গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ৯০ অনুচ্ছেদের ১ ধারার ই উপধারা) বিধান রয়েছে। এ অবস্থায় বিএনপি’র মতো অন্তত দুই ডজন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাঁচাতে একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতেই হবে। তবে বিএনপি আগামী নির্বাচন বর্জন করলেও নিবন্ধন বাতিল হবে না, এক্ষেত্রে একটু কৌশলী হতে হবে। বলা যেতে পারে বিএনপির হাতে আছে কাঙ্খিত ‘নির্বাচনী ট্রাম্পকার্ড’।
নবম ও দশম সংসদের সাধারণ নির্বাচনে অংশ না নিয়েও নিবন্ধন টিকেছে খেলাফত মজলিসের। দলটি ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর এবং ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করেছিল। দু’টি সাধারণ নির্বাচনে অংশ না নেয়ার তথ্য থাকায় এ বিষয়ে দলটির কাছে জানতে চিঠি দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। ২০০৯ সালে রংপুর-৩ ও ২০১১ সালে হবিগঞ্জ-১ উপ নির্বাচনে দলটি প্রার্থী দিয়েছিল বলে জানানো হয়। দলটির জবাবে সন্তুষ্ট হয়ে কমিশন থেকে জানানো হয়, উপ নির্বাচনে অংশ নেয়ায় তাদের নিবন্ধন বাতিল বহাল রয়েছে।
মূলত দুইবার নির্বাচনে অংশগ্রহন বাধ্যতামূলক হওয়ার আইনী কারণে আগামী নির্বাচনী সংলাপ ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে পেরে উঠছে না বিএনপি। সরকারের সংশ্লিষ্টদের উপলদ্ধি বিএনপির সাথে সংলাপ করার কোন প্রয়োজনীয়তা নেই। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। নির্বাচনকালীণ সরকারও সংবিধান অনুযায়ী হবে। আবার রাজপথে আন্দোলন করে সরকার পতন ঘটনোর মতো সক্ষমতা নেই দলটির। ফলে নির্বাচনী রাজনীতিতে সেফ জোনে রয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এতো কিছুর পরে বিএনপির হাতেই আছে নির্বাচনী ‘ট্রাম্পকার্ড’। আর এই ট্রাম্পকার্ড প্রয়োগ করে সরকারের উপর বাড়তি চাপ প্রয়োগ করা যাবে।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে কি হতে পারে সেই ট্রাম্পকার্ড। সেই ট্রাম্পকার্ডটি হলো চলমান দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহন। সমালোচকরা বলতে পারে, যে দলটি ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচন বর্জন করেছে, তারা আবার সেই নির্বাচনে কিভাবে অংশ নেয়। তবে হ্যাঁ রাজনীতিতে শেষ বলে কিছুই নেই। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন আয়োজন করেছিল বিগত কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ কমিশন। গত বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিদায় নিয়েছে সমালোচিত কমিশন। ফলে বর্তমান কেএম নূরুল হুদা কমিশনের অধীন দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে দোষের কিছু নেই। এই কমিশনই তো আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজন করবে। এই কমিশনের অধীন রয়েছে সামনে দশম জাতীয় সংসদের গাইবান্ধা-১ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনের উপ-নির্বাচন। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১৩ মার্চ এই দুই উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী মাসের ৫ ফেব্রুয়ারি তফসিল ঘোষণা করবে কমিশন।
এই দুই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিতে পারে। নির্বাচনে হারলেও সমস্যা নেই, আবার জিতলেও দশম সংসদের প্রতিনিধিত্ব পাবে দলটি। ফলে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী দশম সংসদ নির্বাচনের বর্জনকারী দল হিসাবে আর বিএনপিকে অ্যাখ্যা দেয়া যাবে না। দশম জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী দল হিসাবে বিএনপিকে নির্বাচন কমিশন আমলে নেবে। নিবন্ধন হারানোর ভয় দেখিয়ে প্রতিপক্ষের বিএনপিকে চাপে রাখার কৌশল ব্যর্থ হবে। বরং বিএনপিই প্রতিপক্ষকে চাপে রেখে দাবি আদায় করতে পারবে।
দীর্ঘদিন নির্বাচন কমিশনের সংবাদ সংগ্রহের অভিজ্ঞতার আলোকে বলবো, বিএনপির উচিত হবে দশম সংসদের আগামী উপ-নির্বাচনে অংশগ্রহন করার। এই নির্বাচনে অংশগ্রহনের মাধ্যমে নিজেদের হাতে থাকা ‘ট্রম্পকার্ড’ আগামী নির্বাচনে কাজে লাগাতে পারবে। বিএনপির নেতৃবৃন্দের কাছে প্রত্যাশা করবো তারা নির্বাচনী রাজনীতিতে পিছিয়ে না থেকে সামনের দিকে এগুবে।
লেখক : সাইদুর রহমান, গণমাধ্যম কর্মী।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন