‘ফনী’ আতঙ্কে কলারোয়ায় ধান-ছাগলের-মাংস সমান দরে!!
কলারোয়ায় ধানের দাম নিয়ে শংকায় পড়েছেন কৃষকেরা। ধান কাটা-ঝাড়ার কাজে শ্রমিক সংকট, অতিরিক্ত মজুরির সাথে ঘূর্ণিঝড় ‘ফনী’র আতঙ্কে ধান-ছাগলের-মাংস’র সমান দরে পরিণত হয়েছে।
শুক্রবার দুপুর থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিতে ভিজে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে মাঠের ফসল আর হতাশাগ্রস্থ হয়েছে কৃষক।
ভূক্তভোগি কৃষকরা জানান- প্রতি বিঘা জমি বাৎসরিক লসের হিসাব টেনে-কৃষি শ্রমিকের মজুরি ৪’শ-৫’শ টাকা ও বিঘা চুক্তিতে গেলে ৩-৪ হাজার টাকা, সাথে গভীর নলকূপের পানির মুল্য বাবদ মৌসুমে খরচ প্রায় ৩ হাজার টাকা বিঘা, ধানের বাজারদর মন প্রতি ৭’শ টাকা।
এদিকে কেজিপ্রতি দাম গরুর মাংস ৫’শ টাকা এবং ছাগলের মাংস ৭’শ-৮’শ টাকা।
ধান চাষাবাদে রোপন থেকে গোলাভর্তি বা বাড়িতে আনা পর্যন্ত মন প্রতি প্রায় দেড়’শ টাকা লসে দাঁড়িয়েছে বলে কৃষকদের দাবি। এই হযবরল কষাঘাতে জর্জরিত হয়ে বিপাকে পড়া কৃষকেরা অনেকেই কৃষি কাজে বছরের পর বছর ওই লোকসানের ঘানি টানতে টানতে আগামীতে আর কৃষি (ধানের) কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।
তাদের ভাষ্যনুযায়ী- ধানের দাম এবং ছাগলের-মাংসের দাম প্রায় সমান হয়ে পড়েছে। এক মন ধান বিক্রি করে যদি এক কেজি ছাগলের মাংস কেনার সাধ্য না হয় তাহলে কি প্রয়োজন আছে এতো কষ্ট করে পাথর ফাঁটা রোদে ফসল ফলানোর?
তারা বলছেন- ধান বিক্রি করে মহাজনের ধার দেনাসহ পরিবারের বাৎসরিক চাহিদা মেটানো অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।তারপরও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসলের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতির কবলে পড়তে হচ্ছে বলে আক্ষেপ করেন কৃষকেরা।
জানা গেছে- কলারোয়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকার কৃষি শ্রমিক ব্যবসা বাণিজ্যসহ বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত থাকার কারণে প্রত্যেক মৌসুমেই কৃষি শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়েছে। বর্ষায় অল্প কিছু শ্রমিক পাওয়া গেলেও, ধানের মৌসুমে কাজের পরিমাণ বেশি থাকায় কৃষি শ্রমিকদের চাহিদাটাও বেশি হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং মজুরি তালমিলিয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। আর ধানের বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী-কৃষি শ্রমিকদের মজুরি বেশি হওয়াতে সাধ্যের বাইরে চলে যাওয়ায় সাধারণ কৃষকেরা অনেকটাই বিপাকে পড়েছেন।
উপজেলার যুগীখালী,কুশোডাঙ্গা এবং দেয়াড়াসহ অন্যান্য এলাকার লসের ঘানি টানা হতাশাগ্রস্ত একাধিক কৃষকেরা আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের আর কোনো উপায় নেই। এখন চাষের কাজে শ্রমিক পাওয়া মুশকিল হয়ে গেছে, তারপরেও নানা দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এবং বাজারদর একেবারেই কম। অগত্যা পরিবারে খাওয়ার মত অল্প কিছু জমিতে (ধানের ফসল)কৃষি কাজ করে অন্য চাষাবাদ করতে হবে। তা না হলে ফসলী জমিতে মাত্রাতিরিক্ত খরচে-লস স্বীকার করতে করতে একসময় বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হতে হবে বলে আশংকা প্রকাশ করেন হতাশাগ্রস্তে মাথায় হাত উঠানো কৃষকেরা।
এদিকে কৃষি শ্রমিকরা জানান, গিরস্থের কাজ করে টাকা নিব, যেখানে বেশি মজুরি পাওয়া যাবে সেখানেই আগে কাজ করতে হবে। তাছাড়া সিরিয়াল অনুযায়ী আমরা কাজ করে থাকি (আগে যার সাথে চুক্তিবদ্ধ হই) সেখানেই আগে কাজ করতে হয়।
এছাড়া দলে কৃষি শ্রমিকের সংকট থাকায় গিরস্থের কাজের চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়ে উঠেনা। তাই কৃষি শ্রমিকদের একটু মজুরি বেশি, তাতে গিরস্থের লস হলে আমরা কি করতে পারি বলে কৃষি শ্রমিকরা ব্যক্ত করেন।
এদিকে ব্যবসায়ী সংশ্লিষ্টদের কাছে ধানের বাজারদর ভাল আশা করছেন মাথায় হাত উঠে যাওয়া হতাশাগ্রস্ত সাধারণ কৃষকেরা।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে সরকার কাজ করছে’: লুৎফুল্লাহ এমপি
সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেছেন- ‘করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবেও উন্নয়নবিস্তারিত পড়ুন
কলারোয়ার দমদম বাজার মার্কেটের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন
কলারোয়ার দমদম বাজার মার্কেটের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হয়েছে।বিস্তারিত পড়ুন