জেলা প্রশাসকের মমতা দেখে কেঁদে ফেললেন মা
কোনো কল্পিত নাটকের দৃশ্যপট নয়। সত্যি না, একেবারেই না! এটা মমতাময়ী জেলা প্রশাসকের অন্তরাত্মার দৃশ্যপট। প্রতিদিনের মতো আজও নানা অভাব, অভিযোগ নিয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছিল বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। হঠাৎ আসল অল্পবয়সী এক জননী।
জেলা প্রশাসক সকাল থেকেই বলছিলেন আজকের ঠান্ডাটা একটু বেশি। সদাহাস্য জেলা প্রশাসক তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতেই মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করলেন আপনার কি সমস্যা? মেয়েটি উত্তর শুরু করতে না করতেই বললেন, আহা করছ কি? বাচ্চাটাতো ঠান্ডায় জমে যাচ্ছে, ঈশ। আগে ওকে ভালো করে কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে নাও। মেয়েটি চেষ্টা করল। কিন্তু কিছুতেই গুছিয়ে উঠতে পারছিল না।
জেলা প্রশাসকের বোধহয় মনে হলো, উনি যে রকম তার সন্তানকে যত্ন নিয়েছেন, মেয়েটি সেরকম করে পেরে উঠছিল না। আপসোস করে বললেন, আহারে তুমিতো নিজেকেই গোছাতে পারলে না, এরই মধ্যে মা হয়ে গেলে। আসলে তিনি এ কথার মধ্য দিয়ে বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কেই বলছিলেন।
এবার তিনি নিজেই চেয়ার থেকে উঠে বাচ্চাটিকে কাপড় দিয়ে মোড়াতে গিয়ে দেখলেন, যে কাপড় দিয়ে মোড়ানো ছিল সেটি ভেজা আর ছেড়া। সঙ্গে সঙ্গে আমাকে (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট-Sathiraaj Ranji Sumon) অর্ডার করলেন, এই এনডিসি এক্ষুণি একটা কম্বল এনে দাও। জেলা প্রশাসকের ত্রাণ ভাণ্ডার থেকে কম্বল নিয়ে আসা হলো। এনডিসি হিসেবে একটু সাহস করে বললাম, পিচ্ছিটাকে একটা শীতের পোশাক দিয়ে দিব। প্রায় ধমক দিয়ে বললেন, দিব মানে, নিয়ে আসো। নিয়ে আসা হলো নতুন পোশাক।
অবহেলায় অযত্নে বেড়ে ওঠা আগামীর নতুনকে নতুন পোশাকে মুড়িয়ে দিলেন মমতাময়ী আরেক মা, ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক Tanzia Salma স্যার।
‘মা’ শিরোনামে আমার লেখা একটি কবিতার শেষ দুটি চরণ ছিল এরকম……
এতো এতো মা থেকে খুঁজে নিস তাকে
আমার মাকে, তোর মাকে, সারা বিশ্বের মাকে।।
সেই শিশুটি বুঝি আমার কবিতার মাকে খুঁজে পেয়েছিল এতো এতো মা থেকে…….
শেষ ছবিতে দেখা যাচ্ছে, জেলা প্রশাসকের মমতায় বাচ্চাটি কান্না থামালেও বাচ্চাটির মা না কেঁদে আর পারল না। আসুন আমরা সবাই, এভাবে অন্যকে কাঁদিয়ে নিজেরা একটু হাসি প্রতিদিন!!!!!
এভাবেই নিজের ফেসবুক ওয়ালে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক তানজিয়া সালমার সন্তানকে ঘিরে মমতা দেখে বর্ণনা লিখেছেন একই কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুমন চন্দ্র দাশ।
ঘটনাটি রোববারের। ঘটনার পর পরই তিনি নিজের ফেসবুকে মমতা মিশিয়ে কয়েকটি ছবিসহ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত স্ট্যাটাসটি প্রায় ২১০ জনের ওয়ালে শেয়ার হয়েছে।
এতে অনেকেই ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক তানজিয়া সালমার ভূয়সী প্রশংসা করে বিভিন্ন মতামত লিখেছেন।
Zillur Rahman Shahin লিখেছেন, ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। কি লিখবো। চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে। ধন্যবাদ দিয়ে শেষ হবে না। মা★★★এই তারার মতো জলজল করে।
Faruk Uddin লিখেছেন, ফরিদপুরের ডিসি আমাদের রাজবাড়ীর সন্তান। সেই হিসেবে আমরাও গর্বিত। আর প্রশাসনে মানবিক কর্মকর্তা হলে সারাদেশের জন্যও উপকারী।
Vola Sirajganj লিখেছেন, সত্যিই বলছি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। কি লিখবো। চোখে পানি চলে এসেছে। জনাব উম্মে সালমা তানজিয়া স্যারের কথা সিরাজগঞ্জ জেলার মানুষ সারাজীবন মনে রাখবেন। স্যার অনেক সুন্দর মনের মানুষ। মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করি আল্লাহ পাক স্যারকে ভালো রাখেন। আমিন।
Sumon Hossain লিখেছেন, একজন জেলা প্রশাসক তার অবস্থানের ঊর্ধে্ব থেকে এই শিশুটিকে যে মায়ের মমতা দিয়েছেন তা সত্যিই সকলের বিবেককে নাড়া দিয়েছে। মহোদয় আমি হয়তো আপনার কোনো উপকারে আসতে পারব না। তবে একজন মায়ের সন্তান হিসেবে আপনাকে দোয়া করি আপনার এই মমতা নদীর স্রোতের মতো বহমান থাকে সব সময়।
(সংগৃহিত)
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন