জমে উঠেছে সাতক্ষীরার গুড়পুকুর মেলা ॥ ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড়
কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও সুষ্ঠ পরিবেশ থাকায় জমে উঠেছে সাতক্ষীরার ঐতিহ্যবাহী গুড়পুকুর মেলা। শিশুর হাতে বেলুন বাঁশী, তরুণীর হাতে চুড়ি, খোঁপায় রঙ্গীন ফুল। বৃদ্ধের কাঁধে গাছের কলম, গৃহিনীর কাঁধে মাটির কলস, কাঠের বাসন। লোকজ সংস্কৃতির বিরল নিদর্শন ইতিহাস খ্যাত গুড়পুকুর মেলার সেই পুরনো দিন হয়তো আর নেই। তবু নতুন করে যেনো প্রাণ পেয়েছে এ মেলা।
গুড়পুকরের মেলা থেকে কেউ ফেরে না খালি হাতে এমন দিনটি হারিয়ে যেতে যেতে আবার কিন্তু সমহিমায় ফিরে এসেছে। বোমা সন্ত্রাস আর ধর্মান্ধ শক্তির দাপটে হারিয়ে যাওয়া বাঙ্গালি সংস্কৃতির অন্যতম নিদর্শন সাতক্ষীরার ঐতিহাসিক গুড়পুকুর মেলা আবারও জমে উঠেছে।
৩শ বছরের ঐতিহ্যবাহী গুড়পুকুরের মেলা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে গত ২১ সেপ্টেম্বর। প্রধান অতিথি হিসেবে ফিতা কেটে এ মেলা উদ্বোধন করেন সাতক্ষীরা সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি।
এ মেলা চলবে মাসব্যাপি। তবে ভাল পরিবেশ ও ক্রেতাদের চাহিদার উপর নির্ভর করে এ মেলার সময় আরো বাড়বে বলে জানিয়েছে মেলা কর্তৃপক্ষ। প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মেলায় ভীড় একটু কম হলেও দুপুর গড়িয়ে বিকেল হবার সাথে সাথে মেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সাতক্ষীরা শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে পৌর দীঘির পাড়ে নান্দনিক রূপ আর সৌন্দর্যের পেখম খুলে বসেছে গুড়পুকুরের মেলা। দর্শনার্থীদের চিত্তবিনোদনে মেলায় নাগরদোলা, নৌকা, ট্রেন ভ্রমণসহ রয়েছে নানা আয়োজন।
শিশু-কিশোর, তরুণ -তরুণী, যুব-বৃদ্ধ সবাই ঐতিহ্যবাহী এ মেলা আনন্দ উপভোগ করছেন। স্বজনদের নিয়ে নাগরদোলায় উঠে উপভোগ করছেন অনাবিল আনন্দ। শিশুরা চড়ছে চরকায়। শিশু-কিশোর, যুব-বৃদ্ধ, সবাই ট্রেন ভ্রমণ করে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর প্রয়াস চালাচ্ছেন। মেলায় দা, বটি, কোদাল, খাট-পালং, বাহারী, পোশাক ও জুতার পশরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানীরা। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা ঐতিহ্যবাহী গুড়পুকুরের মেলায় স্টল দিয়েছেন। স্টলগুলো সাজানো হয়েছে নান্দরিক রূপে।
শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্ক ও পৌর দীঘির পাড়কে মুড়ে দেয়া হয়েছে সৌন্দর্যের মোড়কে ও নিরাপত্তার চাদরে। দোকানীরা বলছে তারা বহু-দুর থেকে এসে এ মেলায় স্টল দিয়েছেন। সকল খরচ মিটিয়ে ব্যবসায় লাভবান হতে কম পক্ষে এ মেলা দুই মাস চালানোর দাবী জানিয়েছেন।
২০০৩ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ঐতিহ্যবাহী এ মেলা চলাকালে রকসি সিনেমা হলে এবং যাত্রা প্যান্ডেলে বোমা হামলা চালায় দূবৃত্তরা। বোমা হামলায় নিহত হয় ৩ জন। আহত হয় অর্ধ শতাধিক। ২০০৩ সালের পর থেকে গুড়পুকুরের মেলায় দর্শনার্থীদের ভাটা পড়ে। গত কয়েক বছর নতুন আঙ্গিকে মেলা উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষ।
কঠোর নিরাপত্তা ও চাঁদাবাজমুক্ত পরিবেশে সুষ্ঠুভাবে মেলার আয়োজন করে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষ। মেলায় রয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মেলায় আসছেন সব বয়সের নারী পুরুষ শিশু। তারা ঘুরে ঘুরে দেখছেন। কেনাকাটা করছেন। বিনোদনের সব সুযোগগুলিও ব্যবহার করছেন তারা।
ভিড়ে ঠাসা এ মেলায় দোকানপাট বসেছে অসংখ্য।
মেলার ব্যাপারে মেলার দোকানদের প্রধান সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মানিক শিকদার বলেন, বেচাকেনা ভাল হচ্ছে। মেলায় কোনো জুয়া, সার্কাস, পুতুল নাচ নেই, সন্ত্রাস নেই, চাঁদাবাজি নেই। মেলায় নিশ্চিন্তে ও নির্বিঘ্নে বেচাকেনা করছেন তারা। আর প্রাণ ভরে লোকজ মেলা উপভোগ করছেন উৎসব প্রিয় বাঙ্গালি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বর্ণিল সাজে সেজেছে সাতক্ষীরার ৫৮৪টি দুর্গাপূজা মন্ডপ
সনাতন ধর্মালম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব (দূর্গাপূজা) কে কেন্দ্রবিস্তারিত পড়ুন
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন