সিএইচসিপিদের সমন্বয় সভা
চাকরী জাতীয়করণের দাবিতে কলারোয়ায় শনিবার থেকে কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধের ঘোষনা
কলারোয়ায় বিভিন্ন কমিউনিটি ক্লিনিকেরে দায়িত্বরত হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি)দের মাসিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬জানুয়ারী) দুপুরে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সম্মেলন কক্ষে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সিএইচসিপিদের রাজস্ব খাতে স্থানন্তরের দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারাদেশের ন্যায় অনলাইন রিপোর্ট প্রদান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সভায় জানানো হয়- ‘চাকরী সরকারিকরণ/জাতীয়করণের এক দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত ওই কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে কোন সুরুহা না হলে আগামি শনিবার (২০জানুয়ারী) থেকে কর্মদিবসের কর্মঘন্টায় দেশেব্যাপী কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বন্ধ রেখে সিএইচসিপিগণ স্ব-স্ব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে অবস্থান করবেন।’
সভায় নেতৃবৃন্দ আরো বলেন- ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় স্থাপিত কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে প্রান্তিক জনগণের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করণে সিএইচসিপিরা কাজ করে যাচ্ছেন। আর তাই সিএইচসিপিদের চাকুরী জাতীয়করণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা না আসা পর্যন্ত দাবি আদায়ের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’
কলারোয়া উপজেলা সিএইচসিপি এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা সন্তান আবুল কালামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সাধারণ সম্পাদক আবু হাসানসহ উপজেলার ২৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৩জন সিএইচসিপি উপস্থিত ছিলেন।
সভাটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ আমিনুর রহমান।
এর আগে সম্প্রতি সাতক্ষীরা জেলা সিএইচসিপি এ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত জেলা সমন্বয় সভায় ১৭ সদস্য বিশিষ্ট সাতক্ষীরা জেলা দাবী আদায় সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয় এবং কেন্দ্রীয় দাবি আদায় বাস্তবায়নে কর্মসূচী পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
উল্লেখ্য যে, সিএইচসিপি পদে নিয়োগ পাওয়াদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছিলো মহামান্য হাইকোর্ট। তবে অদৃশ্য কারণে তা আজো বাস্তবায়ন হয়নি।
জানা গেছে- কমিউনিটি ক্লিনিকে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোবাইডার (সিএইচসিপি) হিসেবে নিয়োগ পাওয়াদের চাকরি প্রকল্প থেকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। দেশের বিভিন্ন স্থানের ১০ ব্যক্তির করা রিট আবেদনের পূর্ণাঙ্গ রায়ে এ নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো। গত বছরের ২২ মার্চ হাইকোর্ট রায় দিলেও এ নির্দেশনা সম্বলিত পূর্ণাঙ্গ রায় গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশিত হয়।
বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের হাইকোর্ট বেঞ্চ রিট আবেদনকারী ১০ ব্যক্তির ক্ষেত্রে এ রায় দিয়েছেন বলে জানান রিট আবেদনকারীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ছিদ্দিক উল্যাহ মিয়া। তিনি বলেন, এ রায় সারাদেশে কর্মরত সাড়ে ১৩ হাজার ব্যক্তির রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের পথ সুগম হলো।
তবু আদালতের রায়ের বাস্তবায়ন পাচ্ছেন না দেশের কর্মরত সিএইচসিপিরা।
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সারাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিকে ২০১১ সাল থেকে দায়িত্ব পালনরত সাড়ে ১৩ হাজার সিএইচসিপি-কে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর না করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চতুর্থ স্বাস্থ্য জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসুচি (এইচপিএনএসপি) প্রকল্পে স্থানান্তর করা হয়। তাদের আগামি ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত এ প্রকল্পে স্থানান্তর করে গত ১৫ মে চিঠি দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিবেশ ও স্বাস্থ্য বিভাগ।
কিন্তু তাদের নতুন প্রকল্পে স্থানন্তেরর আগেই রাজস্ব খাতে স্থানন্তরের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়।
মো. সহিদুল ইসলাম, কামাল সরকার, জাহিদুল ইসলামসহ ১০ জনের করা এক রিট আবেদনে হাইকোর্ট গত ২২ মার্চ এক রায়ে রিট আবেদনকারীদের (১০ জন) চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন।
সরকার ১৯৯৬ সালে সারাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের প্রকল্প গ্রহণ করেন। এর আওতায় সারাদেশে ১০ হাজার ক্লিনিক স্থাপন করা হয়। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের কারণে এ প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়ে। আওয়ামী লীগ সরকার আবার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালে রিভাইটালাইজেশন অব কমিউনিটি হেলথ কেয়ার ইনিশিয়েটিভ ইন বাংলাদেশ (আরসিএইচসিআইবি) নামে নতুন প্রকল্প নেয়। এ প্রকল্পের আওতায় আগের ১০ হাজার ক্লিনিক সংস্কার করে এবং নতুন আরো সাড়ে তিন হাজার ক্লিনিক স্থাপন করে। সব মিলে সাড়ে তের হাজার ক্লিনিক স্থাপন করা হয়।
২০১১ সালে এসব ক্লিনিকের প্রত্যেকটিতে একজন করে সিএইচসিপি নিয়োগ দেয়া হয়।
২০১৪ সাল পর্যন্ত ৫ বছরের জন্য প্রকল্পে তাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলে এর মেয়াদ আরো দুই বছর অর্থাৎ ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়।
কিন্তু এরই মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তাদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের সুপারিশ করে তা বাস্তবায়নের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়।
২০১৬ সালে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সাড়ে ১৩ হাজার সিএইচসিপি-কে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চতুর্থ স্বাস্থ্য জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসুচি (এইচপিএনএসপি) প্রকল্পে স্থানান্তর করা হয় বলে জানা গেছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন