এমপির পছন্দের ব্যক্তিই হবেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি
সংসদ সদস্যের পছন্দের ব্যক্তিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সভাপতি করার প্রবিধানমালা তৈরি করা হয়েছে। এতে যোগ্য বা অযোগ্য যেকোনো ব্যক্তিই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হওয়ার সুযোগ পাবেন।
তবে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর পাসের হার কম হলে জবাবদিহিতা করতে হবে কমিটির সদস্যদের। এ ছাড়া যখন তখন শিক্ষকদের বহিষ্কারের ক্ষমতাও থাকছে না কমিটির।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে এক বৈঠকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা প্রবিধানমালা ২০০৯ সংশোধন খসড়া চূড়ান্ত করা হয়। এখন তা অনুমোদনের জন্য শিক্ষামন্ত্রীর কাছ যাবে। মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাভেদ আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।
বিদ্যমান প্রবিধানে সংরক্ষিত আসনের এমপি, জনপ্রতিনিধি, সরকারি/আধা-সরকারি/স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের বর্তমান সাবেক কর্মকর্তা, শিক্ষানুরাগী এবং স্থানীয় সমাজসেবকদের মধ্য থেকে সভাপতি করার কথা আছে। এতে সংসদ সদস্যের ‘অভিপ্রায়’ অনুযায়ী সভাপতি করার কথা নেই। যে কারও সভাপতি হওয়ার ক্ষেত্রে একটা বিধিনিষেধ ছিল।
সংশ্লিষ্টরা জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বর্তমানে পরিচালনা কমিটির একশ্রেণির সদস্যের নানা ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে প্রতিষ্ঠানের সভাপতির বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারী ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানের অর্থ লুট, শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ-বাণিজ্য করার অভিযোগ আছে। ফলে যোগ্য সভাপতি নির্বাচন প্রতিষ্ঠানের শান্তি-শৃঙ্খলা ও লেখাপড়ার জন্য জরুরি।
তবে প্রস্তাবিত প্রবিধানে বেশকিছু ইতিবাচক প্রস্তাব রাখা হয়েছে। তার মধ্যে আছে- ‘ইচ্ছা হলেই’ কোনোরকম অভিযোগ তুলে অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষকসহ কোনো শিক্ষককে বরখাস্ত করা যাবে না। এ ধরনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের আগে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের পূর্বানুমতি নিতে হবে। কাউকে ৬০ দিনের বেশি সাময়িক বরখাস্ত করে রাখলে পুরো বেতন-ভাতা দিতে হবে। অস্থায়ী কমিটিতে কোনো ব্যক্তি একবারের বেশি থাকতে পারবেন না। অস্থায়ী কমিটি শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিতে পারবে না।
প্রস্তাব অনুযায়ী, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে কম অথবা কাঙ্ক্ষিত ফল না করলে পরিচালনা কমিটিকে শিক্ষা বোর্ডের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পর পর তিন বছর এমন হলে এমপিও বাতিল বা প্রতিষ্ঠানের পাঠদানের অনুমতি ও স্বীকৃতি বাতিল করা হবে। একই সঙ্গে পরিচালনা কমিটি বাতিল করতে পারবে শিক্ষা বোর্ড।
পরিচালনা কমিটির সদস্য নির্বাচনের ক্ষেত্রেও কিছুটা স্বচ্ছতা আনার প্রস্তাব আছে। এরমধ্যে আছে, নির্বাচনের বিষয়ে নোটিশ ছাড়াও জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে হবে। মনোনয়নপত্রের দাম সর্বোচ্চ ৫ হাজার এবং সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা। প্রস্তাবে দাতা সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে টাকা জমা দেয়ার সময় কমিয়ে অর্ধেক বা ৯০ দিন করা হয়েছে। আর দেড়লাখের পরিবর্তে অর্থের পরিমাণ যথাক্রমে ৫০ হাজার ও ৩ লাখ টাকা করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানকে জমি লিখে দিলে আজীবন দাতা সদস্য হবেন ব্যক্তি। তার অনুপস্থিতিতে তার সন্তান হতে পারবেন।
কমিটির সভাপতি বা কোনো সদস্য প্রতিষ্ঠান থেকে পারিশ্রমিক নিতে পারবেন না। কেবল সভা চলাকালীন ‘হালকা খাবারের’ জন্য সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা খরচ করা যাবে। কমিটির দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের আবেদনে সভাপতি পরিবর্তনের আবেদন করা যাবে। তদন্ত কমিটির মাধ্যমে দোষী সাব্যস্ত হলেই কেবল শিক্ষককে শাস্তি দেয়া যাবে। কোনো শিক্ষক অদক্ষতা, দুর্নীতি, কর্তব্যে অবহেলা, প্রতিষ্ঠানের স্বার্থের পরিপন্থী কোনো কাজ বা পেশাগত অসদাচরণের জন্য দোষী হলে শাস্তি দেয়া যাবে। অপরাধের ধরন অনুযায়ী ৫ ধরনের শাস্তি দেয়া যাবে।
এগুলো হলো- তিরস্কার, নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বার্ষিক প্রবৃদ্ধি (ইনক্রিমেন্ট) স্থগিত রাখা, প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হলে দোষী শিক্ষকের বেতন থেকে আদায় এবং চাকরি থেকে অপসারণ ও বরখাস্ত করা। বরখাস্ত বা অপসারণের প্রস্তাব শিক্ষা বোর্ডের আপিল ও সালিশি কমিটির মাধ্যমে পরীক্ষিত এবং বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন