কলারোয়ায় ২২ লাখ টাকায় প্রধান শিক্ষক নিয়োগ!
বিজ্ঞ আদালতে নিয়োগ প্রক্রিয়া কার্যক্রম নিয়ে.মামলা চলমান থাকলেও আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সাতক্ষীরার কলারোয়ার একটি হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
কলারোয়ার ধানদিয়া ইউনিয়ন ইন্সটিটিউশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২২ লাখ টাকার বিনিময়ে আব্দুল আজিজকে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার বেলা ৩টার দিকে স্কুলে বোর্ড গঠনের মাধ্যমে এ নিয়োগ প্রদান করা হয়।
প্রধান শিক্ষক পদে আবেদনকৃত কয়েকজন প্রার্থী জানান, বিদ্যালয়ের সভাপতি জয়নগর ইউপি চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন আল মাসুদ কয়েকজন প্রার্থীর নিকট নিয়োগের জন্য ২০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করায় উপজেলার খোর্দ্দ-বাটরা গ্রামের মৃত খোশাল গাজীর ছেলে (প্রধান শিক্ষক পদে প্রার্থী) হাবিবুর রহমান ১৫/০৩/১৮ ইং তারিখে কলারোয়ার সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা (নং-২৫/১৮) দায়ের করেন। মামলার পরবর্তী শুনাণীর দিন ধার্য করা হয় ৭/৫/২০১৮ তারিখে। এরই মধ্যে যে নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয় নিয়ে আদালতে মামলা চলমান সেই প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে, সরাসরি আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে।-এমনই অনুযোগ করেছেন ভুক্তভোগিরা।
মামলার বাদি ও প্রধান শিক্ষক পদের প্রার্থী মো: হাবিবুর রহমান জানান- বিদ্যালয়ের সভাপতি তার নিয়োগের জন্য তার নিকট ২০ লাখ টাকা দাবি করায় আদালতে মামলা করা হয়।
তিনি বলেন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ১০/১২ জন ব্যক্তি উক্ত পদে দরখাস্ত করেন। এ সময় তিনি আদালতের কাগজ সাংবাদিকদের দেখান।
মামলার বিবরণে দেখা গেছে- হাবিবুর রহমান কলারোয়ার ধানদিয়া ইউনিয়ন ইন্সটিটিউশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদটি শুন্য হওয়ায় গত ৫ নভেম্বর ২০১৭, তারিখে একটি দৈনিকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। আবেদনের পর বিদ্যালয়ের সভাপতি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাকে (হাবিবুর রহমান) প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রদানের কথা বলে ২০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন।
বিবরণে আরো উল্লেখ করা হয়েছে- একই সময় আবুল কাশেম নামে অন্য এক প্রার্থীকে (আবেদনকারী) নিয়োগ দেয়ার কথা বলে তার নিকট ৩০লাখ টাকা ঘুষ দাবী করেন। এই ঘুষের টাকা দিয়ে তাদেরকে নিয়োগ প্রদান করা হবে বলে পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাদেরকে জানান।
অন্যদিকে গোপনে কমিটির সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুকৌশলে আব্দুল আজিজ নামে আরেক আবেদনকারীর নিকট থেকে ২০লাখ টাকা নিয়ে তাকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রদান নিশ্চিত করেন এবং ২৪ মার্চ শনিবার নিয়োগ বোর্ডের দিন ধার্য করেন।
তিনি উল্লেখ করেন, এ বিষয়টি জানার পর সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করা হয় এবং বিদ্যালয়ে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নিয়োগ দাবী করেন। কিন্ত জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ব্যবস্থা গ্রহন না করে বিষয়টি নিয়ে তালবাহনা করায় তিনি কলারোয়ার সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ধানদিয়া ইউনিয়ন ইন্সটিটিউশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সামসুদ্দিন আল মাসুদ, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শ্রী বিকাশ চন্দ্র বৈদ্যসহ ১৮জনকে বিবাদী করে মামলা দায়ের করেন।
হাবিবুর রহমান আরো জানান- মামলায় আদালত পরবর্তী ৭/৫/১৮ তারিখ শুনানীর দিন ধার্য করেন।
শনিবার খোজ নিয়ে জানা গেছে- নিয়োগ পরীক্ষায় নিয়োগ পাওয়া আব্দুল আজিজসহ মাত্র ৪জন প্রার্থী অংশ নেন। এছাড়া আবেদন করা অন্য আরো ৭/৮ জন প্রার্থীকে প্রবেশ পত্র দেয়া হয়নি বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েক প্রার্থী জানান- আগে থেকে উপজেলার ক্ষমতাশীন দলের কয়েক শীর্ষ নেতা তাদেরকে নিরব থাকার জন্য বলেন। ভয়ে তারা কেউ কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে সভাপতির সাথে কথা বলেন। বলেই তিনি ফোন বন্ধ করে দেন।
উপজেলার ধানদিয়া ইউনিয়ন ইন্সটিটিউশন মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জয়নগর ইউপি চেয়ারম্যান সামছুদ্দীন আল মাসুদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, নিয়োগে কোন অনিয়ম হয়নি। নিয়োগ বোর্ডে তিনিসহ উপস্থিত ছিলেন, ডিজির প্রতিনিধি সাতক্ষীরা সরকারি বালক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো: আলাউদ্দীন, জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরা পারভীন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ, বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রতাপ কুমার ঘোষ।
নিয়োগে কোন অনিয়ম হয়নি বলে দাবি করেন তিনি। তবে ২৫ তারিখে প্রবেশ পত্র দিয়ে ২৮ তারিখে পরীক্ষা গ্রহনের বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
কলারোয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হামিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে জানার জন্য বিদ্যালয়ের সভাপতির সাথে যোগাযোগ করেন। আমি কিছুই জানিনা।
এ বিষয়ে কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরা পারভীন জানান, নিয়োগ বোর্ডে আমি অবজারভার হিসেবে দায়ীত্ব পালন করেছি। পরীক্ষা সুষ্ঠ ভাবে সম্পন্ন হচ্ছে কিনা সেটা দেখার জন্য আমি উপস্থিত ছিলাম। এখানে ডিসি স্যারের কোন প্রতিনিধি ছিলো না। এছাড়া আমি কমিটির কোন সদস্য না, কোন কাগজে আমার স্বাক্ষর নেই।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে সরকার কাজ করছে’: লুৎফুল্লাহ এমপি
সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেছেন- ‘করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবেও উন্নয়নবিস্তারিত পড়ুন
কলারোয়ার দমদম বাজার মার্কেটের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন
কলারোয়ার দমদম বাজার মার্কেটের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হয়েছে।বিস্তারিত পড়ুন