মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিগত অবস্থান
ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন শীর্স্থানীয় কর্মকর্তা নরেন্দ্র মোদির সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানটির নীতিগত অবস্থানের বিষয়ে মুখ খুলেছেন। আগামী মে মাসের নির্বাচনকে সামনে রেখে ঋণ বিতরণ বৃদ্ধি ও ‘পেমেন্ট সিস্টেমের’ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বদলে ভিন্ন একটি কর্তৃপক্ষ গঠনের সরকারি সিদ্ধান্তের বিষয়ে দ্বিমত রয়েছে দেশটির আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাটির। শুক্রবার (২৬ অক্টোবর) ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট ডেপুটি গভর্নর হুশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, সংস্থাটির স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করলে তা দেশটিতে অর্থনৈতিক বিপর্যয় ডেকে আনবে। এদিকে মোদি সরকারের পক্ষে একটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছে, দেশের অন্য সব প্রতিষ্ঠানের মতো কেন্দ্রীয় ব্যাংককেও সংসদের কাছে জবাবাদিহিতা করতে হবে। তারা যে মাত্রায় স্বাধীনতা চাইছে তা দেওয়া হবে না।গত শুক্রবার ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার’ (আরবিআই) ডেপুটি গভর্নর ভিরাল আচার্য খোলাখুলিভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, সংস্থাটি কেন্দ্রের সরকারের কিছু নীতিগত সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নয়। সরকার চাইছে ব্যাংকের ঋণ বিতরণের শর্ত শিথিল করাতে। কিন্তু আরবিআই মনে করে, প্রচুর পরিমাণ খেলাপি ঋণের দায়ে জর্জরিত ব্যাংকগুলোকে যথেষ্ট পরিমাণ আমানত সংগ্রহের আগ পর্যন্ত নতুন করে ঋণ প্রদানের সুযোগ দেওয়া উচিত হবে না। আরবিআই মোট ১১টি ব্যাংককে পুঁজি স্বল্পতার জন্য নতুন ঋণ না দেওয়ার আদেশ দিয়ে রেখেছে।
গত সপ্তাহে ‘পেমেন্ট সিস্টেমের’ জন্য আলাদা নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ গঠনের বিরুদ্ধে বিস্ময়করভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের বিরোধিতা করেছে। সরকার চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে পেমেন্ট সিস্টেমের নিয়ন্ত্রণ না রাখতে। নতুন কর্তৃপক্ষ এর দেখভাল করবে। অথচ কেন্দ্রীয় ব্যাংক এতদিন নিয়মিত ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতাতেই পেমেন্ট সিস্টেমের বিষয়টি তদারকি করে আসছিল।
শুক্রবার ভারতের শীর্স্থানীয় শিল্পপতিদের উপস্থিতিতে ডেপুটি গভর্নর আচার্য মোদি সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করতে গিয়ে আর্জেন্টিনার প্রসঙ্গ টেনেছেন। আর্জেন্টিনার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে সে দেশের সরকারের মতবিরোধের কারণে ২০১০ সালে দেশটির আর্থিক খাতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছিল। আচার্যের ভাষ্য, ‘যেসব সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতাকে সম্মান করে না, আজ হোক আর কাল হোক তারা অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের পরিণতি ভোগ করে এবং দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার স্বাধীনতা খর্ব করার জন্য অনুতাপ করতে বাধ্য হয়। যেসব সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনভাবে কাজ করার পক্ষে অবদান রাখে, সেসব সরকার কম সুদে ঋণ পাওয়া, আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের কাছে টানতে পারা ও দীর্ঘদিন টিকে থাকার মতো সুবিধা উপভোগ করে।’
ডেপুটি গভর্নর আচার্য যখন ভাষণ দিচ্ছিলেন তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন তার তিন সহকর্মী ডেপুটি গভর্নর। তাছাড়া আচার্য নিজে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর উরজিৎ প্যাটেলের নাম নিয়েছেন, ‘তিনি বক্তব্যের বিষয় হিসেবে এই বিষয়টি বেছে নিতে আমাকে অনুপ্রাণিত করেছেন।’ রয়টার্স লিখেছে, এর মাধ্যমে আচার্য সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তাদের ঐক্যের বিষয়টিই সামনে আনতে চেয়েছেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
পাকিস্তানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ১৯ জনের মৃত্যু
পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে শক্তিশালী ৫ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের আঘাতে ১৯বিস্তারিত পড়ুন
২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় হিক্কা
ধেয়ে আসছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিক্কা। এর ফলে ঝড়ের পাশাপাশি ভারীবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন