কেশবপুরে সাবদিয়া-বাজিতপুর রাস্তাটি যাতায়াতে ঝুকিপূর্ন
প্রভাবশালীরা পাকা প্রাচীর নির্মাণ করে রাস্তার সীমানা দখল
যশোরের কেশবপুরে পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডে সাবদিয়া-বাজিতপুর গ্রামের যাতায়াতের রাস্তাটি সংস্কারের অভাবে দীর্ঘদিন অবহেলা ও অযতেœ পড়ে থাকায় জনগণের ভোগান্তি দিনদিন বাড়ছে। রাস্তার দু’ধারের জমি প্রভাবশালীরা দখলে নিয়ে প্রাচীর ও বসতবাড়ি করায় সংস্কারে বাঁধা ও জটিলতা বেড়েছে বলে জানায় এলাকাবাসী।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার মাইকেল সড়কের বাম পার্শ্বে সাবদিয়া-বাজিতপুর গ্রামের রাস্তাটি উপজেলার ধোপাপাড়ার মোড় নামক স্থান হয়ে তেঘরী-আটংন্ডা সড়কে উঠেছে। ওই রাস্তাটি প্রায় ১.৫ কি.মিটার দৈর্ঘ্যরে এবং ১২ ফুট প্রস্থের হলেও স্থান বিশেষ রাস্তা ঘেঁষা জমির প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সরকারী রাস্তার জায়গা দখল করে পাকা প্রাচীর নির্মাণ, পাকা ঘর নির্মাণ, গাছা-গাছালি লাগিয়ে রেখেছে। দেখা গেছে সাবদিয়া গ্রামের মৃত ছবর মোড়লের পুত্র ফজলে করিম মোড়ল রাস্তার মাঝবরাবর ভিতরে এসে দখল করে পাকা প্রাচীর নির্মাণ করে দীর্ঘদিন ভোগদখল করে আসছে। স্থানীয় জনগণ দাবী করে বলেন, ফজলে করিম মোড়লের পরিবারের সদস্য মোকাররম হোসেনের স্ত্রী শামীমা নার্গিস কেশবপুর পৌরসভার বিগত কমিশনার থাকার সুবাদে প্রশাসনিক ক্ষমতা ব্যবহার করে দীর্ঘদিন পাকা প্রাচীরটি রেখে যানবাহন ও জনগণের যাতায়াতে বাঁধা সৃষ্টি করে আসছে। সাবেক মেয়র আব্দুস সামাদ বিশ্বাস ঐ রাস্তাটি পীচকরন করতে চাইলেও ফজলে করিম গংদের ঐ প্রাচীর না ভাঙ্গতে পারায় রাস্তাটির কার্যক্রম আর সামনের দিকে এগোয় নি। ফজলে করিমের প্রতিবেশী সহ একই গ্রামের মৃত ইলাহী বক্স মোড়লের পুত্র রেজাউল ইসলাম, মশিয়ার রহমানের পুত্র শাহজাহান কবীর বলেন, বিএনপি’র পৌর সভাপতি সাবেক মেয়র আব্দুস সামাদ বিশ্বাসের ঘনিষ্টজন ও দলীয় নেতানেত্রী হওয়ায় উক্ত স্থানের রাস্তা থেকে প্রাচীর উচ্ছেদ সম্ভব হয়নি। স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে তারা প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আসছে। প্রাচীরটি ভেঙ্গে ফেলে যানবাহন ও যাতায়াতের রাস্তাটি মুক্ত করে রাস্তাটি বাজিতপুর মোড়ল পর্যন্ত সংস্কার ও পীচকরনের জন্য প্রশাসনের হস্থক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী।
একই রাস্তায় প্রায় ৫০ ফুট দূরে মাংস ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাকের বাড়ির সামনে রাস্তা ঘেঁষে বিশাল পুকুর। পুকুরটি রাস্তা সংলগ্ন হওয়ায় রাস্তার জমি পুকুরের মধ্যেও রয়েছে। সাবদিয়া গ্রামের মৃত ইজাহার মোড়লের পুত্র আনিছুর রহমান গংদের পুকুরের মোড় ঘুরতে অনেক সময় ভ্যানগাড়ী পুকুরের মধ্যে পড়ে পথচারীরা আহত ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে আসছে। মোড় ঘুরতে বিপদজনক এ পুকুরটি ভরাট করে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্কুলগাামী শিক্ষার্থীসহ সর্বসাধারনের জন্য নিরাপদ যাতায়াতের রাস্তা হিসেবে সংস্কারের দাবী করেছে।
আরো ১০০ ফুট দূরে গিয়ে শাহজাহান কবীর গংদের পুকুর। পুকুরটি মধ্যে রাস্তার প্রায় ২/৩ ফুট ভেঙ্গে আছে। পুকুর মালিকদের পুকুর পাড়ে কোন জমি না থাকায় আমিন মোড়ল রাস্তার জমিতে দীর্ঘদিন কয়েকটি মেহগনি গাছ লাগিয়ে ভোগদখল করে আসছে। গাছগুলি বড় হলে কয়েকটি কেটে নিলেও এখনও বড় একটি মেহগনি গাছ ও শিশু গাছ রয়েছে। রাস্তা ঘেঁষে মৃত আপ্তাব মোড়লের পুত্র লিয়াকত আলীর দোতলা বাড়ির ছাদের পানি রাস্তায় পড়ে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের বইপুস্তকসহ জামাকাপড় ভিজে যেতে হয় বলে সাবদিয়া-বাজিতপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী।
রাস্তা দিয়ে যতই সামনে এগুতে যাবেন ততই ভাঙ্গা আর ভাঙ্গা, গর্তের পর গর্ত। সোলিং এর ইট নাই। রাস্তার মাটি ধুইয়ে পাশের জমিতে মিশিছে। রাস্তার শেষ সীমানায় সাবদিয়া-বাজিতপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের সামনে রাস্তার উপর বিশাল বটগাছ। বট গাছের ঝুরি রাস্তার প্রায় অংশ জুড়ে নিয়েছে। ঐস্থানে রাস্তা ঘেঁষে মৃত গণেশ সিংহ গংদের জমিতে বিশাল গর্ত। চলাচলকারীদের যানবাহনসহ অনেক সময় শিক্ষার্থীদের ভ্যান গর্তে পড়ে আহত হয়েছে বলে জানায় সাবদিয়া গ্রামের মৃত মজিদ মোড়লের পুত্র মোক্তার হোসেন। স্কুলের আশেপাশের লোকজন দাবী করেছে রাস্তাটি সংস্কার ও পীচকরনের আগেই বটগাছের ঝুরিগুলি কেটে রাস্তার জায়গা বের করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর মেয়রের কাছে দাবী করেছে।
এলাকাবাসীর ক্ষোভ ও মৌখিক অভিযোগ থেকে জানা যায়, সাবদিয়া গ্রামের রাস্তাটি পৌরসভা হওয়ার পর থেকে একবার ইটের সোলিং করা হয়। কেশবপুর পৌরসভা প্রথম শ্রেনীর পৌরসভা হলেও আমরা সাবদিয়াবাসী পৌরসভার সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। রাস্তাটি ভাঙ্গাচুরা-গর্তে ভরা থাকার কারনে কোন অসুস্থ্য ব্যক্তি ও কোন প্রসুতি মাতাকে হাসপাতাল-ক্লিনিকে ভ্যানে-এ্যামবুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া যায় না। কাঁধে ভর করে বা ঝোড়ায় করে নিয়ে যেতে হয়। পৌরসভার আর্সেনিকমুক্ত বিশুদ্ধ পানি সরবারের লাইন থাকলেও আমরা সাবদিয়াবাসী পাচ্ছি না। কিন্তু পৌর ধার্য্যকৃত বিভিন্ন করসমূহ আমরা প্রদান করে আসছি বলে সাবদিয়া গ্রামে শহিদুল ইসলামের স্ত্রী রাহিমা বেগমসহ কয়েকজন জানায়।
রাস্তাটি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর জামাল উদ্দিন ও বিশিষ্ট ঠিকাদার আলিম হোসেন বলেন, রাস্তাটি সংস্কার ও কার্পেটিংকরনের প্রকল্প তৈরী করা হয়েছে। প্রকল্পের কাজ আগামী যে কোন সময়ে শুরু হতে পারে।
কেশবপুর পৌর পিতা রফিকুল ইসলাম মোড়ল বলেন ,ওই রাস্তার প্রকল্প ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরের তালিকাভূক্ত ও দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে । খুব দ্রুত কাজ করা হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বেনাপোলে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক বর্জন করলো সাংবাদিকরা
বেনাপোল স্থলবন্দর আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের দ্বিতীয়তলায় নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও স্থলবিস্তারিত পড়ুন
ঝিকরগাছায় বাস চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী শিশুসহ দু’জন নিহত
যশোরে বাস চাপায় এক শিশু ও এক মোটসাইকেল আরোহীর মৃত্যুবিস্তারিত পড়ুন