কলম থেকে কলাম..
‘নৈতিকতা’ পারে অসামাজিক কর্মকান্ড থেকে সবাইকে দূরে রাখতে
পরিবার প্রত্যেকটি মানুষে প্রথম এবং প্রধান শিক্ষাকেন্দ্র। পারিবারিক শিক্ষা একটি মানুষের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ। পারিবারিক শিক্ষার প্রতিফলন ঘটে আমরা যখন উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য শহরে যায় কিংবা বিদেশে যায় অথবা আমরা যখন এলিট শ্রেণি বা সভ্য শ্রেণির সাথে মেলামেশা করি তখন।
নৈতিকতা মানুষের নিজস্ব দিক হলেও এই নৈতিকতা সৃষ্টি করে আসলে পরিবার। পরিবার ব্যক্তির নৈতিকতার আদর্শ এবং সামাজিক শিক্ষা প্রদান করে থাকে। নৈতিকতাবিহীন মানুষ বন্যপ্রানীর চেয়ে খারাপ এবং উন্মাদ। নৈতিকতাবোধ সম্পন্ন মানুষ কখনো তার আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয় না।
বর্তমানে দিন দিন সমাজ থেকে নৈতিকতা উঠে যাচ্ছে বলে মনে করা হয়। নৈতিকতার অভাবে আজকাল আমাদের আশেপাশে বিভিন্ন জায়গায় ধর্ষণের মত নৈতিকতাগর্হিত অসামাজিক কর্মকান্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। ছোট্ট শিশু থেকে আশি বছরের বৃদ্ধা কেউই ধর্ষকের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। আমাদের সমাজের নারীরা যানবাহনে ঠিকমতো যেতে পারে না কারণ সেখানেও তাদের শ্লীলতাহানি করা হয়, অনেকেক্ষেত্রে বাসে ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটে।
“স্কুলে পরিমল, মাদ্রাসায় সিরাজ, আমার বোনের নিরাপত্তা কোথায় করছে বিরাজ?”- নামে একটি আলোচিত স্লোগান বের হয়েছে।সাম্প্রতিক ফেনী জেলার ফুলগাজী আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয় একই মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান। যৌন নির্যাতনের প্রতিবাদ করলে তাকে আগুনে পুড়িয়ে মারে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা এবং তার সহযোগীরা। এরকম আমাদের আশেপাশে নৈতিকতাবিহীন মানুষ নামের নরপশু দ্বারা হাজার হাজার নুসরাত প্রতিনিয়ত যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। যারা প্রতিবাদ করে তাদের পরিণাম হয় খুবই নিষ্ঠুর।
আমাদের দেশে পাচার হচ্ছে নারী এবং শিশুসহ অনেক মানুষ। প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে নিয়ে গিয়ে এসব শিশু এবং মহিলাদের বিক্রি করে দেওয়া হয় বিভিন্ন পতিতালয়ে। অন্ধকার পতিতালয় হয় তাদের একমাত্র জায়গা যা তারা কখনো কামনায় করেনি। একজন বিবেকবোধ সম্পন্ন মানুষ কখনো এসব কাজ করতে পারে না। নৈতিকতার সামান্য স্পর্শও তাদের মাঝে নেই।
অনেক দেশ কঠোর আইন করে নৈতিকতাবিহীন মানুষকে সমাজ থেকে সমূলে উৎপাটন করে। মধ্যেপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে যদি কেউ চুরি করে তবে তার হাত কেটে নেওয়া হয়,যদি কেউ ধর্ষণ করে তবে তার জনসম্মুখে শিরশ্ছেদ করা হয়,ক্রুশবিদ্ধ করায়, পাথর বা ঢিল ছুঁড়ে হত্যা করা হয়। জনসম্মুখে এই কাজগুলো করার কারণ ভয় পেয়ে যেনো কেউ নীতিবিবর্জিত কাজ না করে।
সুদ,ঘুষ,ব্যভিচার,চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই,রাহাজানি,খুন,ধর্ষণ এই সব কর্মকান্ডে জড়িয়ে মানুষ তার নীতি-নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে ফেলে। অনেকেই আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে না। অন্ধকার জগতই হয় তার একমাত্র ঠিকানা। আর এই ঠিকানা থেকে একদিন সে চিরতরে হারিয়ে যায়।
স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সর্বত্রই বাড়ছে নেশার প্রকোপ। শিক্ষার্থীরা হাতে কলম,বই,খাতার বদলে তুলে নিচ্ছে নেশাদ্রব্য।
তারা মদ, গাঁজা, আফিম, হিরোয়িন,ফেনসিডিল, ক্যাথোড্রিল,খাট,ইয়াবা,বিড়ি,সিগারেট,তামাক,ভাং,
চুরুটসহ বিভিন্ন নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করে অকালেই তাদের জীবন হারাচ্ছে মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে। একমাত্র নৈতিকতায় পারে এসব কাজ থেকে আমাদের দূরে রাখতে।তাই আসুন আমরা নৈতিকতাসম্পন্ন মানুষে রুপান্তরিত হয়ে সমাজ এবং সুন্দর দেশটাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
লেখক:
মো.ওসমান গনি শুভ
শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
কলম থেকে কলাম ক্যাটাগরি মূলত পাঠকের মতপ্রকাশের স্থান। এখানে প্রকাশিত লেখার দায় সম্পূর্ণ লেখকের।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
এনামুল-সম্রাটসহ ৪ জনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ
ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ততা ও অবৈধ অর্থ লেনদেনের অভিযোগে সংসদবিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন