খোলপেটুয়া নদীর অব্যহত ভাঙ্গনে ছোট হয়ে আসছে আশাশুনির বিছট গ্রাম
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নের বিছট গ্রাম খোলপেটুয়া নদীর অব্যহত ভাঙ্গনে ক্রমশঃ ছোট হয়ে আসছে। তীব্র নদী ভাঙ্গনে গত পাঁচ বছরে ওই গ্রামের শতাধিক ঘরবাড়ি, দু’টি মসজিদ ও একটি হাফেজি মাদ্রাসা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে বিছট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ গ্রামের অন্যান্য স্থাপনা। ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক কার্যকরি কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় বেড়িবাঁধ ভাঙ্গন অব্যহত রয়েছে।
সম্প্রতি বিছট গ্রামের মোড়ল বাড়ি, সরদার বাড়ি ও গাজী বাড়ি এলাকায় বেড়িবাঁধে ভাঙ্গন আরো তীব্র আকার ধারন করেছে। যে কোন মূহুর্ত্বে ক্ষতিগ্রস্থ এই বাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে যেতে পারে। ফলে ভাঙ্গনকবলিত এলাকায় বাসবাসকারি গ্রামবাসীরা আতংকিত হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে অনেকে তাদের বসতবাড়ি ছেড়ে অন্যত্রে আশ্রয় নিয়েছে।
স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুল হাকিম মোড়ল জানান, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বিভাগ-২ এর আওতাধীন ৭/২ পোল্ডারের বিছট গ্রামে নদী ভাঙ্গন দীর্ঘদিনের। খোলপেটুয়া নদীর অব্যহত ভাঙ্গনে ইতিমধ্যে বিছট গ্রামের প্রায় এক তৃতীয়াংশ এলাকা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। নদীর তীব্র ভাঙ্গনে গত পাঁচ বছরে ওই গ্রামের শতাধিক ঘরবাড়ি, মোড়লবাড়ি জামে মসজিদ, গাজীবাড়ি জামে মসজিদ ও বিছট মোড়লবাড়ি হাফেজি মাদ্রাসা নদী গর্ভে চলে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে বিছট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ গ্রামের অন্যান্য স্থাপনা। ভাঙ্গন রোধে কার্যকরি কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় নদী ভাঙ্গন ক্রমশঃ তীব্র আকার ধারন করছে। পাউবো কর্তৃপক্ষ কোন রকমে দায়সারা গোছের কাজ করায় থামছে না বেড়ি বাঁধ ভাঙ্গন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, খোলপেটুয়া নদীর তীব্র স্রোতে বিছট গ্রামের মোড়ল বাড়ি ঈদগাহ এলাকা থেকে বিছট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় পৌনে এক কিলোমিটর এলাকা ব্যাপি বেড়িবাঁধে ভাঙ্গন রয়েছে। প্রতিবছর প্রাকৃতিক দুর্যোগে এই বাঁধের কোন না কোন স্থানে ভাঙ্গন ধরে। তখন গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ সংষ্কার করে থাকে। পরবর্তীতে পাউবো কর্তৃক সংষ্কার কাজ করা হলেও ঠিকাদারের দূর্নীতির কারনে তা সঠিক ভাবে বাস্তবায়িত হয় না। কর্তৃপক্ষের পরোক্ষ সহযোগিতায় দায়সারা গোছের কাজ করে বিল তুলে নিয়ে চলে যান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ফলে বছর ঘুরতেই ফের ভাঙ্গনের কবলে পড়তে আমাদের।
তিনি আরও বলেন, সাধারণত মে মাসে দুর্যোগ মৌসুম শুরু হয়। কিন্তু এবার তাড়াতাড়ি গরম পড়ে যাওয়ায় ধারনা করা হচ্ছে দ্রুতই দুর্যোগ মৌসুম শুরু হয়ে যাবে। যা চলবে অাগাস্টের শেষ পর্যন্ত। এই মূর্হুত্বে বিছট গ্রামের মোড়লবাড়ি ও সরদার বাড়ির সামনে দেয়া সামান্য রিং দেওয়া বাঁধটি খুবই ঝুকিপূর্ন। ইতিমধ্যে এই রিং বাঁধের কয়েক স্থানে মারাত্মক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। নদীর জোয়ারের তীব্রতা বৃদ্ধি পেলে যে কোন মূর্হুতে এই দূর্বল রিং বাঁধ ভেঙ্গে যেতে পারে। ফলে এইসব ভাঙ্গন পয়েন্টে বসবাসকারি গ্রামবাসিরা আতংকিত হয়ে পড়েছেন। ইতিমধ্যে অনেকে ভয়ে তাদের ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র অন্যত্রে সরিয়েও নিয়েছেন। তাই জরুরী ভিত্তিতে বিছট গ্রামের এই ক্ষতিগ্রস্থ বেড়ি বাঁধটি সংস্কার করা দরকার। তিনি এব্যাপারে সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-২ এর কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী অপূর্ব কুমার ভৌমিক বলেন, পাউবো বিভাগ-২ এর আওতায় ৪২২ কিলোমিটার বেড়িবাধ রয়েছে। যার মধ্যে ১৫০ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। তার অধীনে ৭/২ নং পোল্ডারের বিছট এলাকায় বেড়ি বাঁধ ভাঙ্গনের কথা শুনেছি। সংশ্লিষ্ট এলাকার দায়িত্বে থাকা সেকশান অফিসারকে (এসও) ঘটনাস্থলে যেতে বলা হয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন
আশাশুনিতে পূর্বের বিয়ের তথ্য গোপন করে আবারো অন্যত্র বিয়ে দেয়ার অভিযোগ!
সাতক্ষীরার আশাশুনিতে পূর্ববর্তী বিয়ের তথ্য গোপন করে অধিক লাভ ওবিস্তারিত পড়ুন