কেশবপুরে পেট্রোলের আগুনে দগ্ধ সেই গৃহবধূ ও যুবক আর নেই
যশোরের কেশবপুরে গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুনে দগ্ধ হওয়া সেই গৃহবধূ ও যুবক মারা গেছে। পরকীয়া প্রেমে রাজি না হওয়ায় ওই গৃহবধূর শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টাসহ একই আগুনে পুড়ে আত্মহত্যার চেষ্টার পর চিকিৱসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। গৃহবধূর মৃত্যুর পর তাঁর শিশু দুই সন্তান মাকে হারিয়ে হতবাক হয়ে পড়েছে। মায়ের আদর-স্নেহ বঞ্চিত শিশু সন্তানরা ঘুরে ফিরে মায়ের কবরের পাশে এসে আহাজারি করে চলেছে। তাদের আহাজারিতে এলাকার অন্য শিশুদেরও চোখে পানি গড়িয়ে আসছে।
সরেজমিন উপজেলার গৌরীঘোনা ইউনিয়নের ভরতভায়না গ্রামে গিয়ে এলাকাবাসি ও তৌহিদুলের পরিবার সূত্রে জানা যায়, নিহত গৃহবধূ মিতা খাতুন খুবই সাংসারিক ছিলেন। স্বামী তৌহিদুল ইসলাম ও দু’সন্তান এবং শ্বাশুড়িকে নিয়ে সুখেই সংসার করছিলেন ওই গৃহবধূ। এরই মধ্যে তাদের সংসারে যাতায়াত শুরু হয় তৌহিদুল ইসলামের দূর সম্পর্কের আত্মীয় মণিরামপুর উপজেলার কপালিয়া গ্রামের মৃত খালেক গাজীর ছেলে বাবুল গাজীর। যাতায়াতের সুবাদে বাবুল গাজী প্রায়ই ওই গৃহবধূকে পরকীয়ার প্রস্তাব দিতে থাকে। কিন্তু ওই গৃহবধূ পরকীয়ায় রাজি না হওয়ায় বাবুল গাজী ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যা রাতে তৌহিদুল ইসলামের বাড়িতে এসে মিতা খাতুনের গায়ে পেট্টোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে নিজেও ওই আগুন পুড়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়।
ওই ঘটনার পর এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে গৃহবধূকে খুলনা ও যুবককে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় ওই যুবককে রাতেই খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এ ব্যাপারে গৃহবধূর ভাসুর কেশবপুর থানায় মামলা করেন। কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) শাহজাহান আহমেদ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
গত রবিবার তৌহিদুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, নিহত ওই গৃহবধূর শিশু ছেলে একরামূল হোসেন (১০) ও মেয়ে ফতেমা (৪) মাকে হারিয়ে অতবাক হয়ে পড়েছে। বাড়িতে তাদের দাদি মাছুরা খাতুনের সঙ্গে ঘুরে ফিরছে আর বলছে তার মা ঘুমিয়ে রয়েছে। সুযোগ পেলেই কবরের পাশে গিয়ে ওই শিশু দু’সন্তান আহাজারি করে ফিরছে। দাদি মাছুরা খাতুন বলেন, তার বৌমা খুবই সাংসারিক ছিলেন। দু’সন্তান নিয়ে যখন সংসার গুছিয়ে নিচ্ছিলেন ঠিক তখনি ওই দূর্ঘটনা ঘটে গেছে। তিনি আরও জানান, মা হারিয়ে একরামূল ও ফতেমা সবসময় আহাজারি করছে। তাদের আহাজারিতে এলাকার সব মানুষের চোখে পানি গড়িয়ে আসছে। যুবক বাবুল গাজীর বাড়ি পার্শ্ববর্তী মণিরামপুর উপজেলার কপালিয়া গ্রামে।
ঘটনা উল্লেখ করে গৃহবধূর ভাসুর রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে কেশবপুর থানায় মামলা করেন। পুলিশ জানায়, পরবর্তীতে ওই গৃহবধূ চিকিৱসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিট এবং যুবক বাবুল গাজী খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানা উপ পরিদর্শক দীপক কুমার জানান, গৃহবধূ ও যুবক মারা যাওয়ার পর ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের লোকজন তাদের নিয়ে দাফন করেছে।
কেশবপুরে তিনটি দাখিল মাদ্রাসা থেকে কেউ পাশ করেনি
যশোরের কেশবপুরে তিনটি দাখিল মাদ্রাসা থেকে কেউ পাশ করেনি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রবিউল ইসলাম জানান, দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উপজেলার ইমাননগর এম বি জি দাখিল মাদ্রাসা, প্রতাপপুর দাখিল মাদ্রাসা ও সাতবাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে কোন পরীক্ষার্থী কৃতকার্য হতে পারেনি।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ওই মাদ্রাসা তিনটি থেকে কোন পরীক্ষার্থী পাশ না করায় অভিভাবক মহলে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
কেশবপুরে পাঁজিয়া-পাথরা ও বিল বুড়–লিয়া জলাবদ্ধতার আশঙ্কা
যশোরের কেশবপুর উপজেলার পাঁজিয়া-পাথরা ও বিল বুড়–লিয়ার জন্য মঙ্গলকোট ইউনিয়নের পাথরা গেটের হাট বাজার ও গৌরীঘোনা ইউনিয়নের বুড়–লিয়া পানি নিষ্কাশন স্লুইস গেটটি ১৯ গ্রামের মানুষের এখন মরণ ফাদে পরিনত হয়েছে।
সুফলাকাটি, গৌরঘোনা, পাঁজিয়া ও মঙ্গলকোট ইউনিয়ন সমূহের বিলের পানি নিষ্কাশনের জন্য পৃথক ভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ড দুটি স্লুইস গেট স্থাপন করেন। গেট দুটি হল মঙ্গলকোট ইউনিয়ের পাথরা গেটের হাট বাজার ও গৌরিঘোনা ইউনিয়নরে বুড়–লিয়া স্লুইস গেট। গেট দুটি দিয়ে ৪টি ইউনিয়নের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ।
সরেজমিন দেখাযায়, খাল খননের অভাবে গেটটির সম্মুখে পলি পড়ে দরজার কপাটগুলি আটকে পড়েছে। ফলে পানি নিষ্কাশন পথ বন্ধ হয়ে রয়েছে। সুফলাকাটি ইউনিয়নের হাড়িয়াঘোপ, কায়েমখোলা, কৃষ্ণনগর, সারুটিয়া, সুফলাকাটি, কলাকাছি, কাকবাঁধাল ও চিহ্নিত জলাবদ্ধ এলাকা এ বছর খাল খনন কিম্বা বুড়–লিয়া গেটটি সংস্কার না করলে ওই এলাকার জলাবদ্ধ আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। বর্ষা মৌসুমে ক্ষতিগ্রস্থ ও জলাবদ্ধতায় শিকার গ্রামগুলি মধ্যে গৌরিঘোনা ইউনিয়নের বুড়–লিয়া, দশকাহনিয়া, ভেরচি, গ্রামের পানি ওই খাল দিয়ে নিষ্কাশন হয়ে ভদ্রা নদীতে পড়ে। কিন্তু খাল খনন না করার কারণে জলাবদ্ধ হয়ে ওই গ্রামগুলি প্লাবিত হয়ে যায়।
উপজেলার মঙ্গলকোট ইউনিয়ের পাথরা গেটের হাট বাজার সংলগ্ন সুনিল বৈরাগি জানান, আমরা নিজ উদ্বোগে গেটের সামনের পলি খনন করে পানি নিষ্কাশনকরে থাকি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট বিভাগ এদিকে নজর দেয় না। ফলে আমরা প্রতি বছর জলাবদ্ধতায় ডুবে যায়। অন্যদিকে ভদ্রানদী সংযোগ নদী মঙ্গলকোট ইউনিয়নে বড় পাথরায় একটি স্লুইস রয়েছে। এই গেট দিয়ে পাঁজিয়া ইউনিয়নের ব্রহ্মনডাঙ্গা, সাতশকাটি,পাঁজিয়া, হদ ও মঙ্গলকোট ইউনিয়নের মাগুরখালি, বড়েঙ্গা,, পাঁচারই, ঘাঘা, ছোট পাথরা, বড় পাথরা ও চুয়াডাঙ্গা গ্রামগুলি জলাবদ্ধ তলিয়ে যায়। প্রায় ১৭৬০.০৮ হেক্টর জমি জলাবদ্ধতায় ডুবে থাকে। পাঁজিয়া, পাথরা, বুড়–লির বিলের মধ্যে অসংখ্য খাল ছিল। তা আজ মরা খালে পরিনত হয়েছে। কিন্তু গেটের সম্মুখে পলি জমে একটি গেট একেবারে অকেজো হয়ে পড়েছে অপরটি গেটের উচু ও কচুরিপানার কারণে পানি নিষ্কাশনের অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভুক্তভুগিরা এ বছর জলাবদ্ধতার আশঙ্কা করছে। এলাকার মানুষ নদী খনন করে অকেজো গেটির সম্মুখ থেকে পলি অপসরণ দাবী করেছে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বেনাপোলে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক বর্জন করলো সাংবাদিকরা
বেনাপোল স্থলবন্দর আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের দ্বিতীয়তলায় নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও স্থলবিস্তারিত পড়ুন
ঝিকরগাছায় বাস চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী শিশুসহ দু’জন নিহত
যশোরে বাস চাপায় এক শিশু ও এক মোটসাইকেল আরোহীর মৃত্যুবিস্তারিত পড়ুন