কেশবপুরে পরকীয়ায় রাজি না হওয়ায় গৃহবধূকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা
যশোরের কেশবপুরে পল্লীতে পরকীয়া প্রেমে রাজি না হওয়ায় এক গৃহবধূকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টা এবং নিজে ওই আগুনে পুড়ে আত্মহত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গৌরিঘোনা ইউনিয়নের ভরত ভায়না গ্রামে। এঘটনায় পুলিশ আহতদেরকে উদ্ধার করেছে । এব্যাপারে এব্যাপারে আহতের স্বামী বাদী হয়ে কেশবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে।
অভিযোগ সূত্রে ও সরেজমিন জানা গেছে, উপজেলার কন্দর্পপপুর গ্রামের আউয়াল সরদারের মেয়ে মিতা খাতুনের সাথে পাশ্ববর্তী ভায়না গ্রামের তৌহিদুল ইসলামের সাথে বিবাহ হয়। দীর্ঘ প্রায় ১২ বছরের দাম্পত্য জীবনে তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। তৌহিদুল ইসলামের দূর সম্পর্কের আত্মীয় ডুমুরিয়া উপজেলার কপালিয়া গ্রামের মৃত খালেক গাজীর ছেলে বাবুল গাজী ব্যবসায়িক বিভিন্ন কাজে প্রায়ই তার বাড়িতে আসা যাওয়া করতেন। সুযোগ পেয়ে বাবুল গাজী বিভিন্ন কৌশলে তৌহিদুল ইসলামের স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দিতে থাকে। এতে রাজি না হওয়ায় বাবুল গাজী ক্ষিপ্ত হয়ে সোমবার সন্ধ্যায় তৌহিদুল ইসলামের বাড়িতে এসে তার স্ত্রী মিতা খাতুনের গায়ে পেট্টোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে নিজেও ওই আগুন পুড়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তাদের চিৎকারে এলাকাবাসীরা ছুটে এসে থানা পুলিশকে খবর দেয়। কেশবপুর থানার তদন্ত অফিসার শাহজাহান আহমেদ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনা¯’লে গিয়ে দগ্ধ দুইজনকে উদ্ধার করে কেশবপুর উপজেলা স্বা¯’ কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদেরকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
উপজেলা স্বা¯’্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডাঃ শেখ আবু শাহীন জানান, আগুনে পুড়ে দুজনের শরীরের প্রায় ৭০ শতাংশ ঝলসে গেছে। এলাকাবাসীরা জানান, প্রায় একবছর পূর্বে ভেরচি বাজার থেকে বাড়ি আসার পথে বাবুল গাজী মিতা খাতুনকে মুখে রুমান দিয়ে আজ্ঞান করে উঠিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। পরে এলাকাবাসীর সহায়তার তাকে উদ্ধার করা হয়।
কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ আব্দুল্লাহ জানান, আগুনে ঝলসে যাওয়া দুই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসা করানো হ”েছ। ঘটনা¯’লের পাশের একটি জায়গা থেকে একটি খেলনা পিস্তল ও দুটি বোমা সাদৃশ্য ব¯‘ উদ্ধার করা হয়েছে।
কেশবপুরে ঘের ব্যবসায়ীরা মানছে না সরকারের নির্দেশ
যশোরের কেশবপুরে মাছের ঘের ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের নির্দেশও তোয়াক্কা করছে না। মানছে না আদেশ-নির্দেশ ও আইন। প্রভাবশালী ঘের ব্যবসায়ীদের আগ্রাসনে সাধারন মানুষ জিম্মি। অসহায় মানুষের জমি জবর দখল করে তারা অবৈধ ঘের ব্যবসা চালিয়ে যা”েছ। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই ঘেরের জমানো পানিতে বৃষ্টির পানি যোগ হয়ে ভয়াবহ জলাবদ্ধা সৃষ্টি হবে।
উপজেলার পৌরসভার ভোগতি মাঝের পাড়া বাওড় একটা মুক্ত জলাশয় ছিলো। ভোগতি গ্রামের আব্দুল মজিদ গাজীর পুত্র মতিন গাজী গত ৫ বছর ধরে ওই বাওড়ে মাছ চাষ করছেন। হালে যোগ হয়েছে সুবীর নামে আরও একজন ঘের ব্যবসায়ী। তলে উপরে বেনামে রয়েছে আরও কয়েজন প্রভাবশালী। মাছের ঘেরে জমি দিতে রাজি না থাকা এলাকার কবির হোসেন, আব্দুল মজিদসহ কয়েক জনের পুকুর জোর করে দখলে নিয়ে এবারও মাছ চাষ শুরু করেছে তারা।
গত পাঁচ বছর মাছের ঘেরে ইউরিয়া, পটাশ, ফসফেটসহ নানা রকম রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করায় ওই ঘেরের পশ্চিম পাড়ের প্রায় দেড় হাজার ফুট জমির কোন কোন জায়গায় ১০ হাত, কোন জায়গায় ১৫ হাত করে মাটি খসে খসে পড়েছে। মাটি ধসে পড়ায় কবির হোসেনের মায়ের কবর বিলীন হয়ে গেছে ! তার বাবার কবরও ধসে পড়ার উপক্রম হয়েছে। আব্দুল মজিদ দফাদারের মায়ের কবরসহ অনেক কবর ধসে পড়ছে। এছাড়া বসত ঘর ও ফলজ গাছগাছালি উপড়ে পড়ে গেছে। বাওড়ের উত্তর পাশে কেশবপুর-বেগমপুর সড়কটি ঘেরের পাড় হিসেবে ব্যবহার করায় ধসে গেছে। সড়কটির সংস্কার কাজ বাঁধাগ্র¯’ হ”েছ।
ক্ষতিগ্রস্তরা ঘেরের পাড় বেঁধে দিয়ে কবর, বসত বাড়ি ও গাছগাছালি রক্ষার আবেদন করলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানূর রহমান ২৩ এপ্রিল তাঁর অফিসে নোটিস করে বাদি ও বিবাদিকে নিয়ে এক সালিশ সভা করেন। এ সময় তিনি ঘেরের চারপাশের বাঁধ বেঁধে দেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। ঘের মালিক আগামী ৪ মে তারিখের মধ্যে কবর সংরক্ষনসহ ঘেরের পাড় বেঁধে দেয়ার সময় প্রার্থনা করে। উপজেলা নির্বহী অফিসার সময় দিয়ে নলকূপ দিয়ে ঘেরে পানি জমানো ও মাছ ছাড়াসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ৪ মে তিনি নিজে ঘের পরিদর্শন করে অনুমতি দেয়ার পর মাছে ঘের করতে হবে।
অথচ ঘের মালিক আব্দুল মতিন নির্বাহী অফিসারের কোন নির্দেশ না শুনে প্রতি রাতে মেশিন দিয়ে ভূগর্ভের পানি উঠানো অব্যাহত রেখেছে। ঘেরের মধ্যে অনুমতি না নিয়ে মজিদ দফাদার, কবির হোসেনসহ কয়েক জনের পুকুর জবর দখল করে তাতে পানি তুলে দিয়ে মাছও ছেড়েছে। কবর সংরক্ষন ও পাড় বাঁধার কাজ এখনো পর্যন্ত শুরুই করিনি। প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে জবর দখল করে তারা মাছ চাষ করার পায়তারা করছে।
খোজ নিয়ে জানা গেছে উপজেলার প্রায় চার হাজার ঘেরের অধিকাংশই ঘের ব্যবসায়ী একই কায়দায় খাল, নদী, অসহায় জমির মালিকদের জমি ও পুকুর জোরপূর্বক দখল করে মাছের ঘের করছে। প্রতিটি সড়কই ঘেরে বাঁধ হিসেবে ব্যবহার করে মাছের ঘেরে তারা রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করায় সড়কগুলো ধসে গেছে। সংস্কার করতেও কোন ঠিকাদার রাজি হ”েছ না। কারন সড়কের পাশে কোন মাটি নেই। প্রায় সকল সড়কই চলাচলের অনুপোযোগি হয়ে পড়েছে। প্রসাশনের পক্ষ থেকে বার বার মাইকিং করে রাস্তার পাশে ছয় ফুট জায়গা ছেড়ে বাঁধ দিয়ে ঘের নির্মানের নির্দেশ দিলেও ঘের মালিকরা তা মানছে না। হাতে গোনা দু’একজন রাস্তার পাশে বাঁধের কাজ শুরু করেছে। অরপর দিকে ভূগর্ভের পানি তুলে জমানো যাবে না মর্মে প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে অধিকাংশ ঘের মালিক সেচ যন্ত্র দিয়ে পানি তুলে মাছের ঘেরে জমিয়ে রাখা”েছ। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানূর রহাম জানান, ঘেরের পাড় হিসেবে রাস্তা ব্যবহার হয়ে থাকলে অবশ্যই ভেড়ী তৈরি অন্তে মাছের ঘের করতে হবে। নইলে এবার কঠিন আইনত শাস্তি অপেক্ষা করছে ঘের মালিকের ভাগ্যে। তিনি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, যাদের আপনজনের কবর নষ্ট হয়েছে তা সংরক্ষন করার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রচেষ্টা থাকবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বেনাপোলে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক বর্জন করলো সাংবাদিকরা
বেনাপোল স্থলবন্দর আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের দ্বিতীয়তলায় নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও স্থলবিস্তারিত পড়ুন
ঝিকরগাছায় বাস চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী শিশুসহ দু’জন নিহত
যশোরে বাস চাপায় এক শিশু ও এক মোটসাইকেল আরোহীর মৃত্যুবিস্তারিত পড়ুন