কালিগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের অপসরণের দাবিতে মানববন্ধন
কালিগঞ্জ সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ জি এম রফিকুল ইসলামের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবং অধ্যক্ষের অপসারনের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কালিগঞ্জ সরকারী কলেজের শিক্ষার্থীদের আয়োজনে রবিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় কলেজের সামনে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।
প্রতিবাদ সমাবেশে কালিগঞ্জ সরকারী কলেজের ডিগ্রী ১ম বর্ষের ছাত্র রাশেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ডিগ্রী ১ম বর্ষের ছাত্র তুহিন জাহাঙ্গীর, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্র শুভো ঘোষ, ডিগ্রী ১ম বর্ষের ছাত্র আরিজুল ইসলাম, এইচএসসি ২য় বর্ষের ছাত্র শফিকুল ইসলাম, ১ম বর্ষের ছাত্র ফরিদুল ইসলাম প্রমুখ।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, কলেজের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলামকে বাঁচাতে মাঠে নেমেছে একশ্রেনীর স্বার্থান্বেশী মহল। তাঁরা অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে অদক্ষ, অযোগ্য ও ষড়যন্ত্রকারী জিএম রফিকুল ইসলামের নিকট থেকে। কিন্তু কালিগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষকমন্ডলী ও উপজেলা এলাকার সুশীল সমাজে আজ প্রতিবাদের ঝড় তুলেছে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। তাঁরা অধ্যক্ষ কর্তৃক আত্মসাৎকৃত লক্ষ লক্ষ টাকা ফেরতসহ অর্থলোভী গাজী রফিকুল ইসলামের প্রচলিত আইনে শাস্তির দাবী জানান। কালিগঞ্জ কলেজে বিএনপি জামাত জোট সরকারের আমলে নীতিমালা উপেক্ষা করে সার্টিফিকেট যথাযথ না থাকার স্বত্বেও অবৈধ পন্থায় মতিউর রহমানর নিজামির টেলিফোনে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পান তৎকালীন জামাতের এমপি, কেন্দ্রীয় জামাতের সুরা সদস্য যুদ্ধাপরাধী মামলার অন্যতম আসামী গাজী নজরুল ইসলামের ভাই জিএম রফিকুল ইসলাম।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী যার আবেদন করার যোগ্যতাই ছিলো না। সেই থেকে প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠেন ঐতাহ্যবাহী কালিগঞ্জ কলেজের অধ্যাপক মন্ডলী ও কর্মচারীসহ উপজেলা এলাকার সচেতন ব্যক্তিবর্গ। শুরু করেন তাঁর যোগদান নিয়ে নানান তর্ক বিতর্ক, অভিযোগ ও মতবিনিময়। প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠেন অধ্যাপক আব্দুল খালেক, অধ্যাপক আব্দুল হান্নান, অধ্যাপক গাজী আজিজুর রহমান, অধ্যাপক শ্যামাপদ দাশ, অধ্যাপক মুনসুর আলী, অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র ঘোষ, অধ্যাপক ময়নুদ্দিন সহ প্রায় ২০ জন শিক্ষক ও কর্মচারী। অনেকে অবসরে গিয়েছেন। কিন্তু অদক্ষ আর অযোগ্য অধ্যক্ষকে কেহ রুখতে পারেননি। কলেজের মাত্র ১-২ জন অধ্যাপক আর কর্মচারীদের নিয়ে তিনি ধরাকে সরা জ্ঞ্যান করে চলেছেন সবকিছুকে উপেক্ষা করে। থেমে থাকেন নি অবৈধ আয় অর্জন থেকেও।
এছাড়া অধ্যক্ষ কলেজের বিএম শাখায় সাহাবুদ্দিন নামের একজনকে লক্ষাধিক টাকা নিয়ে নিয়োগ দিয়ে টাকা নিজে আত্মসাৎ করে পরে কলেজ ফান্ড থেকে টাকা পরিশোধ করেন। সরকারী কর্মশালায় যোগ দানের নামে দীর্ঘদিন কলেজে অনুপস্থিত থেকে কর্মশালায় তো যোগদান করেন নি বরং ফিরে এসে ভাউচার করে টাকা নিয়েছেন। সম্পৃতি খুলনা বি এল কলেজে ১ দিনের ওরিয়েন্টেশনে যোগ দিয়ে সরকারী টিএডিএ গ্রহন গ্রহন করেছে আবার কলেজ থেকে অবৈধভাবে ভাউচার করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুমোদ নিতে যেয়ে ধরা পড়েছেন। কলেজ সরকারী হওয়ার পূর্বে জাতীয় পরীক্ষার ফরম পূরনে ইচ্ছেমত টাকা নিয়ে রশিদ বিলে টাকা কম দেখিয়ে উদ্বৃত টাকা নিজে আত্মসাৎ করেছেন। জাতীয় পরীক্ষার প্রবেশ পত্র তিনি বিক্রি করে টাকা নিয়েছেন।
দুর্নীতি ধরা পড়ার ভয়ে কলেজে কোন পাবলিক পরীক্ষার রেজাল্ট সংরক্ষণ করা হয় নি। কলেজের পুরানো মসজিদ, গাছ, টিনশেড ভবন বিক্রি করে মসজিদ করার রেজুলেশন থাকলেও বিভিন্ন ব্যক্তির দানের টাকা দিয়ে আংশিক কাজ করে কলেজের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। কলেজ ফান্ডের টাকা দিয়ে বাস ভবন তৈরি করে নিজে ফ্রি বিলাশী জীবন যাবপ করেছেন। কিন্তু শিক্ষার্র্থীদের কতা চিন্তা না করে একাডেমিক ভবনকে পরিত্যক্ত প্রায় এটি উন্নয়নের কোন পদক্ষেপ নেন নি। কলেজ সরকারী করনের নামে শিক্ষক-কর্মচারীদের নিকট থেকে নগত, সাদা খাতায় বেতন অংশে স্বাক্ষর করিয়ে এবং অনার্স ফান্ড থেকে সর্ব মোট প্রায় ২৭ লক্ষ টাকা নিজে আত্মসাৎ করেছেন। শিক্ষক কর্মচারীদের বঞ্চিত করে তাদের প্রাপ্য ছাত্র-ছাত্রীদের উপবৃত্তির লক্ষ লক্ষ টাকা নিজে আত্মসাৎ করেছেন। কলেজের অভ্যন্তরে পুকুরের কোন লিজ নেই। নিজের গোপন সিন্ধান্তে মৌখিক লিজ দিয়েছেন, কলেজ হোস্টেলের পুকুরের একই অবস্থা ডিড এর মেয়াদ শেষ হলেও ডিড ছাড়া কিভাবে ভোগ করছে একমাত্র তিনি জানেন। কলেজের আইসিটি ভবনটি দীর্ঘদিন হস্তান্তর করা হলেও ঐ ভবনের জন্য সরকাররি বরাদ্দ কি কি আছে কি পাওয়ার কথা তার তালিকাও কাওকে তিনি না দেখিয়ে ভবনটি তালা বন্ধ রেখেছেন। কলেজে লক্ষ লক্ষ টাকার মালামাল ক্রয়ের ভাউচার থাকলেও নেই কোন স্টক রেজিষ্টার খাতা। কারন দুর্নীতি ধরা পড়ার ভয়ে। সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কলেজ সরকারী হওয়ার পর তারই সভাপতিত্বে একাডেমিক কাউন্সিলে কলেজের সার্বিক অগ্রগতির স্বার্থে একাধিক সিদ্ধান্ত গৃহিত হলেও তিনি সভার অনুমোদন না দিয়ে কলেজের সার্বিক কার্যক্রম স্থবির করে রেখেছেন।
শুধু তাই না গরীব ছাত্র-ছাত্রীর নিকট সরকারী নির্ধারিত ফরম পূরনের টাকা ডাবল ঘোষনা দিয়ে কমিটির দোহায় দিয়ে সামান্য কনসেশন করতেন না। ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা আদায় করতেন, সে গুলো তিনি তার নিজস্ব কথিত ছাত্রলীগ নেতাদের দিয়ে নিজে সিন্টিগেড করে তাদের মাধ্যমে নগত টাকা তুলে রাজনৈতিক বিবেচনায় বেতন কম দেখিয়ে শুধু মাত্র সরকারী ফি ব্যাংক ড্রাফ জমা দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া তিনি ঢাকায় ফ্লাট, সাতক্ষীরায় বুসরা কোম্পানির নিকট থেকে প্লট ক্রয় করেছেন। এছাড়া শ্যামনগরে দীর্ঘ প্রাচির বিশিষ্ট কোটি কোটি টাকার সম্পদ কিনেছেন। তার বিরুদ্ধে কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করতে গেলে তিনি তার নিজস্ব ভাড়াটিয়া গুন্ডা বাহিনি দ্বারা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ভয় ভীতি প্রদর্শন করেন। কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যথারীতি ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, স্থানীয় সংসদ সদস্য, দূর্নীতি দমন কমিশন, জেলা প্রশাসক, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন
সাতক্ষীরা জেলা ব্যাপী গ্রেফতার ১৩, ইয়াবা-ফেন্সিডিল-গাঁজা উদ্ধার
সাতক্ষীরা জেলা ব্যাপী পুলিশের মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযানে মাদক মামলারবিস্তারিত পড়ুন