কক্সবাজারে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দি সাড়ে ৫ লাখ মানুষ
টানা চারদিন ধরে ভারি বর্ষণে কক্সবাজারের চকরিয়াসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এ কারণে এসব এলাকার প্রায় সাড়ে ৫ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। জেলার বাঁকখালী ও মাতামুহুরী নদীতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে কিছু কিছু বাড়িঘর পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পানিতে ডুবে গেছে আন্ত: সড়কগুলো। ভেঙে গেছে বেড়িবাঁধসহ অধিকাংশ গ্রামীন সড়ক ও কালভার্ট। এভাবে ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকলে জেলায় বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক অবনতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
তারা বলছেন, ভারি বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের কারণে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে চকরিয়ার পৌরসভারসহ একাধিক এলাকা। চকরিয়া ছাড়াও জেলার পেকুয়া, ঈদগাঁও, রামু, উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসব উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কিছু কিছু বাড়িঘরে পানি ঢুকে তলিয়ে গেছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় চিংড়ি প্রকল্পের কোটি মাছ ভেসে গিয়ে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাফর আলম বলেন, ‘মাতামুহুরী নদী নাব্যতা হারিযে ফেলেছে। দীর্ঘদিন ধরে কোনও ধরনের ড্রেজিং না থাকায় উজান থেকে নেমে আসা বৃষ্টির পানি লোকালয়ে ডুকে পড়েছে। নদীর বাঁধ ভেঙে বিলীন হয়ে গেছে শত শত ঘরবাড়ি। ভেঙে গেছে গ্রামীন জনপদ। এ কারণে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে চকরিয়া উপজেলার ৩ লাখ মানুষ।’
চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী জানান, তিনি বন্যা কবলিত অধিকাংশ এলাকা ঘুরে দেখেছেন। পৌরসভার ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের নদীতে নির্ধারিত সময়ে ব্লক না বসিয়ে চরম গাফিলতির কারণে বন্যা শুরু হয়েছে। ফলে নদী ভাঙনে দিগরপানখালী গ্রামের ৬টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বিষয়টি তিনি জেলা প্রশাসককে জানিয়েছেন।
কক্সবাজার সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান ইমরুল রাশেদ জানান, ‘টানা বর্ষণে তার ইউনিয়ন জালালাবাদসহ ৪টি ইউনিয়নে বন্যা দেখা দিয়েছে। এসব এলাকার অধিকাংশ বাড়িঘর পানিতে ডুবে গেছে। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ২ লাখ মানুষ। এ কারণে ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সবিবুর রহমান বলেন, ‘চারদিনের টানা ভারি বর্ষণ এবং মাতামুহুরী নদীতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার বেশির ভাগ অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বর্তমানে নদীর পানি প্রবাহের গতিবেগ প্রবল হওয়ায় দুই উপজেলার একাধিক স্থানে বেড়িবাঁধ চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তবে বন্যার পানি না নামা পর্যন্ত বেড়িবাঁধের কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা দুর্গত এলাকায় সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রয়েছে।’
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্নেল মো. ফোরকান আহমদ বলেন, ‘ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে কক্সবাজার সদর উপজেলাসহ জেলার প্রায় সাড়ে ৫লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এ কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এছাড়া বর্ষণ অব্যাহত থাকায় পাহাড় ধসের আশঙ্কা করা হচ্ছে।’
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
এনামুল-সম্রাটসহ ৪ জনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ
ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ততা ও অবৈধ অর্থ লেনদেনের অভিযোগে সংসদবিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন