আরো খবর.......
ঐতিহ্যবাহী পাটকেলঘাটা ফুটবল মাঠের বেহাল দশা
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী পাটকেলঘাটা ফুটবল মাঠটি বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। অনাদর, অবহেলা আর চোখের জলে দীর্ঘদিন ভাসছে মাঠটি। সাতক্ষীরা জেলার মধ্যে এত বড় জনগুরুত্বপূর্ণ মাঠ বিরল। মাঠটি অনেক ঐতিহাসিক স্বাক্ষর বহন করে চলেছে। দেশ স্বাধীনের পর থেকে একাধিক প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী পরিষদের অনেক সদস্যসহ সকল রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের পদার্পণ ঘটেছে এই মাঠে। পাটকেলঘাটা থানার প্রধান ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় এখানে। এছাড়া বড় ধরণের সভা, সমাবেশ ও নিয়মিত সকল প্রকার খেলাধুলা অনুষ্ঠিত হয় এই মাঠে। অথচ নিত্য প্রয়োজনীয় বিশাল এ মাঠটির যেন এখন অভিভাবক শুন্য। অল্প বৃষ্টি হলেই মাঠটিতে জমে হাটু পানি। আর বর্ষা মৌসুমে থাকে কোমর পানি। যা মাছ চাষ ও বোরো ধান চাষের জন্য উপযোগী হয়ে ওঠে। যার ফলে ক্রীড়ামোদীদের পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ। মাঠের চারপাশের ড্রেনটি স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ময়লা আবর্জনা ফেলে বন্ধ করে ফেলেছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য কোন ব্যবস্থা নেই। মাঠটির দেখভাল করার কেউ না থাকার সুযোগে মাঠের পশ্চিম পার্শ্বের বালু ব্যবসায়ী জনৈক হাবিবুর রহমান তার কয়েকটি ব্যবসায়ী ট্রলি ও গোবরের মশাল মাচান রেখে যথেচ্ছা ব্যবহার করে মাঠটি নষ্ট করছে। পূর্ব-উত্তর পার্শ্বে পিযুষ সাধু নামের এক ব্যক্তি তার ভাড়াটিয়া দোকানীদের ও ভাগ্যকুল মিষ্টান্ন ভান্ডারের উচ্ছিষ্ট বর্জ্যে পানি নিষ্কাশনের ড্রেন বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে মাঠটিতে খেলাধুলার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে দীর্ঘদিন।
পাটকেলঘাটা ফুটবল মাঠের নিয়মিত খেলোয়াড় জাফরি সরদার জানান, মাঠটি দীর্ঘদিন পানি জমে কর্দমাক্ত থাকায় অনুশীলন করতে খুবই অসুবিধা হচ্ছে। পানি নিষ্কাশনের দ্রুত ব্যবস্থা ও মাঠ উন্নয়নের পদক্ষেপ কতটুকু নিয়ে স্থানীয় সরুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বলেন, মাঠের সমস্যা সমাধানে কয়েক দফা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। তিনি এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
তালায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি
চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় ৩ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে, সময়মত প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় অধিক তাপমাত্রার কারণে বেশির ভাগ ক্ষেতে পাটের চারা গজাতে পারেনি। ফলে খাতাকলমে এখন পর্যন্ত পাটের আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সংশয় দেখা দিয়েছে। তবে কৃষি বিভাগের দাবি, আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এখনো সময় রয়েছে। কৃষকরা বলছেন, জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে আর পাটের নতুন আবাদ করা হয়না। যদিও কৃষি বিভাগ পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দৃশ্যমান নানা সমস্যা সমাধানে কৃষকদের পরামর্শ অব্যাহত রেখেছেন। তবে চাহিদা অনুযায়ী দাম না পেয়ে কৃষক বছরের পর বছর ঠকেই যাচ্ছেন। এজন্য প্রতিবছর চাষের জমি কমে যাবার পাশাপাশি কমছে পাট চাষ।
চলতি মৌসুমের প্রথম দিকে পানি সেচ দিয়ে চাষ শুরু হলেও বৈশাখের শেষ সপ্তাহের কম বেশি বৃষ্টি হয়েছে। ফলে চাষীদের পাট চাষে সুবিধা হয়েছে। বোরো ধান কাটার পর অনেকে জমি চাষ করে পাট বীজ বুনেছেন। বাজারের পাট ও বীজ ব্যবসায়ীদের সাথে কথা আলাপকালে তারা জানান, বিদেশে পাট ও পাটজাত দ্রব্যের চাহিদা আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। গতবার পাটের দাম বেশি পাওয়ায় কৃৃষকদের মধ্যে পাট চাষে আগ্রহ বেড়েছে। তারা আরো জানান, সার, বীজ ও কীটনাশকের সঙ্কট না হলে তালাতে পটের উৎপাদন ভাল হবে। তবে অধিকাংশ কৃষক বিএডিসি’র বীজ বপন না করে ভারতের বঙ্কিম ও মহারাষ্ট্র বীজ বপন করেছেন। তারা ভারতের বীজের ওপর বেশি আস্থাশীল বলে জানান। তবে ধান কাটার পরপরই পাট ক্ষেতে আগাছা পরিস্কার করার শ্রমিক পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়েছে। অনেক ক্ষেত্রে নারী শ্রমিক দিয়ে পাট ক্ষেত পরিচর্যা করছেন পুরুষদের পাশাপাশি।
তালা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে তালা উপজেলায় তিন হাজার ১০ হেক্টর জমিতে ৩৩ হাজার ৮৬২ বেল পাট উৎপাদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। মাত্র তবে এ পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে। আর এসব জমির অধিকাংশতেই আবাদ করা হয়েছে তোষা জাতের পাট।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রমতে ২০১৬-১৭ খরিপ মৌসুমে তালা উপজেলায় তিন হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে ৩৬হাজার ৮৫০ বেল পাট উৎপাদন হয়েছিল। ২০১৫-১৬ খরিপ মৌসুমে এ উপজেলায় পাটের উৎপাদন লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ৩৩ হাজার ৯২৫ বেল। ২০১৪-১৫ মৌসুমে পাটের মোট উৎপাদন ছিল ৩ হাজার ৭০ এবং দেবহাটায় ৮৫, কালীগঞ্জে ৭৪, আশাশুনিতে ৯৫ এবং শ্যামনগরে ৫ হেক্টর পরিমাণ জমিতে পাট উৎপাদন করা হচ্ছে। ২০১৩-১৪ মৌসুমে ছিল ৩২ হাজার ২৩০ বেল।
তালা উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শামছুল আলম বলেন, এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় পাটের আবাদ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কিছুটা কম হয়েছে। তবে, কৃষকদের করণীয় সম্পর্কে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী আব্দুল মান্নান বলেন, সাতক্ষীরায় খুব ভাল মানের পাট উৎপাদন হয়। এ বছর ভরা মৌসুমে বৃষ্টি কম হওয়ায় কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে, দ্রুতই পাটের আবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন
তালায় ইউএনও’র প্রেরণায় গার্লস হাইস্কুলে ডেইলি স্টার কর্নার চালু
তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও’র অনুপ্রেরণায় শহীদ আলী আহম্মেদ বালিকাবিস্তারিত পড়ুন