আশাশুনিতে চিংড়ী ঘেরে ব্যাপক ভাইরাজ ক্ষতিগ্রস্থ চাষীরা
আশাশুনি উপজেলার ও তার আশে পাশের চিংড়ি ঘের গুলোতে ব্যাপক হারে ভাইরাজ আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে চিংড়ি। সে কারনে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে চাষিরা। জানাগেছে, আশাশুনি উপজেলার ও তার আশে পাশের উৎপদনশীল চিংড়ি শিল্প যা সাদা সোনা নামে খ্যাত বিপর্যয় সে কারনে চাষীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে । বছরের শুরু থেকে কিছুটা ভাল থাকলে ও বর্তামান চিংড়িতে ব্যাপক হারে মোড়ক লেগে অনেক ক্ষতি সাধন হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে বিষয়টি নিয়ে সংশয় বলে মনে করেন। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে পানির গভীরতা বৃদ্ধি ঘেরগুলোতে চিংড়ী চাষের অনুকুল পরিবেশ সৃষ্ঠি না করাসহ চাষীদের অসতর্ককতাকে দায়ী করে অপরপার কারন বলে জানিয়েছেন মৎস কর্মকর্তারা । আশাশুনি ও তার আশে পাশে মোট ১৩,০০০ হেক্টর জমিতে চাষ হয় রপ্তানী যোগ্য চিংড়ি। চাষীদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, একজন ঘের মালিক আমি ১০ বছর ধরে ঘের করে আসছি অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর শুরু থেকে ভাইরাজ লেগেই আছে,হারির টাকাতো পড়ে থাক মাছের পোনার টাকা ও এখনো উঠেনি এমন ভাবে চলতে থাকলে আমাদের সর্ব শান্ত হতে বেশি দিন লাগবেনা। পার্শ্ববর্তী গ্রামের একজন চাষী, তিনি বলেন , আমি বহুদিন যাবদ ঘের করে আসছি কোন দিন এমন অবস্থার মধ্যে পড়েনি। আমার ১২০ বিঘার ঘের এবছর মনে হয় মাছের পোনার দামও উঠবেনা তার কারন হিসেবে তিনি বলেন , এবছর মাছের, পিপিটি, মাটির আর্দ্রতা ও গভীরতা কমের বেশির কারন হতে পারে এ অবস্থাতার। বিশেষজ্ঞরা আরো অভিমত ব্যাক্ত করেন যে, চাষীরা অধিক লাভের আশায় চিংড়ি ঘেরে অধিক পরিমান রাসায়নিক ব্যাবহার করে থাকে, সে কারনে মাটির অসিস্থ নষ্ঠ হয় এবং চাষের অনুপযোগি হওয়ার কারন হতে পারে। অপর একজন চাষী বলেন বর্তমান আমরা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ কারন কক্সোবাজারের মাছ বন্ধ হওয়ায় আমরা দিসেহারা হয়ে পড়ি ঘেরে মাছ ছাড়ার জন্য আর ঠিক সেই সময় সুয়োগ বুঝে ভারত থেকে নিন্মে মানের কিছু নফলি নিয়ে এসে চিংড়ি উৎপাদন করে বাজারে ছাড়ে কিছু অসাধু ব্যাবসায়ী । নিরুপায় হয়ে সেই চিংড়ি ঘেরে ছেড়ে একটি মাছও আমরা বিক্রয় করতে পারেনি। তাই বর্তমান অবস্থার কথা বিশেষন করে দেখা গেছে এমন ভাবে চলতে থাকলে চাষীরা সর্বশান্ত হয়ে যাবে।
কালিগঞ্জে এনেসথেসিয়া ও অপারেশন পরবর্তী চিকিৎসকের অবহেলার কারণে প্রসুতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ
এনেসথেসিয়া ও অপারেশন পরবর্তী চিকিৎসকের অবহেলার কারণে এক প্রসুতি মায়ের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে খুলনার আবু নাসের হাসপাতালে ওই মা মারা যান।
মৃতের নাম আসমা খাতুন (২৫)। তিনি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বসুখালি গ্রামের লিটন পেয়াদার স্ত্রী।
বসুখালি গ্রামের লিটন পেয়াদা জানান, তিনি প্রান জুস কোম্পানীর কলারোয়া উপজেলায় ডিস্ট্রিবিউটরের কাজ করেন। তার সাড়ে ৫ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। তার স্ত্রী সন্তান প্রসব করার নির্ধারিত সময় অনুসারে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে দেবহাটা উপজেলার কোড়া গ্রামের বাবা আব্দুল ওহাবের বাড়িতে পাঠানো হয়। সাড়ে ছয় হাজার টাকা চুক্তিতে দু’ হাজার টাকা অগ্রিম জমা দিয়ে গত ১৭ আগষ্ট বৃহষ্পতিবার দুপুর দু’ টোর দিকে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা নাহার ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয় আসমাকে। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ডাঃ আকছেদুর রহমান তার সিজার করে। এ সময় একটি পুত্র সন্তান প্রসব করে সে। দুর্ভাগ্য হলেও সত্যি হাতুড়ে এনেসথেসিয়া (অজ্ঞান ডাক্তার) ডাক্তারের কারণে অপারেশনের দীর্ঘ সময় পর প্রসুতির জ্ঞান না ফেরা ও খিচুনি দেখা দিলে তারা ওই ক্লিনিকের কোন ডাক্তারকে ডেকেও পাননি। একপর্যায়ে ডাঃ আকছেদুর রহমান বিভিন্ন জায়গা থেকে অপারেশন সেরে এসে আসমার অবস্থা দেখ খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। একপর্যায়ে তারা রাত ১২টার দিকে নাহার ক্লিনিক থেকে প্রসুতি আসমাকে নিয়ে খুলনার উদ্দেশ্যে বের হন। রাত আড়াইটার দিকে তাকে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখানে ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিটে কোন শয্যা না পাওয়ায় সার্জারী কনসালট্যান্ট ডাঃ আছমা খাতুন তাকে বেসরকারি সেবা প্রতিষ্ঠান আবু নাসের হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। শনিবার সন্ধ্যায় তাকে আবু নাসের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিট) চিকিৎসাধীন থাকার পর বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে স্ত্রী আসমা মারা যায়।
লিটন পেয়াদার ভাই ইসমাইল হোসেন ওরফে বাবু অভিযোগ করে বলেন, নলতার নাহার ক্লিনিকে বিধিসম্মতভাবে সেবার ব্যবস্থা নেই। এখানে নেই কোন ক্লিনিকের সাইন বোর্ড। যদিও ক্লিনিকের দেয়ালে লেখা আছে ডাক্তার আকছেদুর রহমানের তত্বাবধায়নে পরিচালিত। এনেসথেসিয়ার জন্য অভিজ্ঞ লোক না থাকা ও অপারেশন পরবর্তী দীর্ঘ ছয় ঘণ্টা ডাক্তার না থাকায় আসমার অবস্থার চরম অবনতি ঘটে। নাহার ক্লিনিকে এনেসথেসিয়া ও সিজার পরবর্তী চিকিৎসা সেবার অবহেলার কারণে তার ভাইয়ের স্ত্রী আসমার মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেসজ্ঞ সার্জারী কনসালট্যাণ্ট ডাঃ আসমা খাতুন জানান, যে সময় প্রসুতি আসমাকে এখানে ভর্তি করা হয় তার আগেই তার শারাীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। নাহার ক্লিনিকে রক্তচাপ কমে যাওয়ার কারণে পোষ্ট একলামসিয়ার আক্রান্ত আসমাকে অহেতুক ফেলে রেখে উন্নত চিকিৎসা না দেওয়ায় তার অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের শয্যা খালি না থাকায় তাকে আবু নাসের হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
খুলনা আবু নাসের হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ রুহুল কুদ্দুস ও ডাঃ বিধান চন্দ্র সান্ন্যাল জানান, আসমা পোষ্ট একলামসিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর তাৎক্ষনিক উন্নত চিকিৎসা পেলে হয়তোবা তাকে বাঁচানো যেতো।
নলতা নাহার ক্লিনিকের পরিচালক জাহিদুর রহমান জানান, নলতা হাসপাতালের এনেসথেসিয়া ডাক্তার আবুল ফজল বাপ্পি ও ডাঃ আকছেদুর রহমান আসমাকে সিজার করান। তাদের অপারেশন বা পরবর্তী চিকিৎসায় কোন ত্র“টি ছিল না। পোষ্ট একলামসিয়ায় আক্রান্ত হলে অনেকে ক্ষেত্রেই কিছু করার থাকে না।
নলতা হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ আবুল ফজল বাপ্পির সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে ডাঃ আকছেদুর রহমান এনেসথেসিয়া ও অপারেশনে কোন ত্র“টির কথা অস্বীকার করে বলেন, পোষ্ট একলামসিয়ার কারণে আসমার মৃত্যু হয়েছে।
দেবহাটার কোড়া গ্রামের আব্দুল ওহাব জানান, বৃহষ্পতিবার বাড়ির পার্শ্ববর্তী একটি মসজিদের মাঠে নামাজে জানাযা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে আসমার লাশ দাফন করা হয়েছে। আসমার নবজাতক পুত্র সন্তানকে তার ভাবী রুমার হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন
আশাশুনিতে পূর্বের বিয়ের তথ্য গোপন করে আবারো অন্যত্র বিয়ে দেয়ার অভিযোগ!
সাতক্ষীরার আশাশুনিতে পূর্ববর্তী বিয়ের তথ্য গোপন করে অধিক লাভ ওবিস্তারিত পড়ুন