আচমকাই ঘুমিয়ে পড়ছে পুরো গ্রাম!
কাজাখস্তানের এসিল জেলার একটি ছোট গ্রাম ‘কালাচি’। এই গ্রামের লোকজন চলতে চলতে, কথা বলার সময় বা কাজ করতে করতে আচমকাই ঘুমিয়ে পড়ছেন! অথচ কেউই ক্লান্ত নয়। কারও ঘুম ভাঙছে ছয়-সাত ঘণ্টা পরে, কখনও কেটে যাচ্ছে তিন-চার দিনও! এক দিন নয়, বছরের পর বছর ধরে ঘটছে এই ঘটনা।
গ্রামবাসীদের এই ঘুমিয়ে পড়াই গোটা বিশ্বকে চিনিয়েছে এই গ্রামকে। শুধু মানুষ নয়, পশু-পাখিরাও এই ঘুমের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। ঘুম ভাঙলেও বিপত্তির শেষ নেই। থেকে যায় অনেক পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া।
ঘুমিয়ে পড়ার এই ঘটনা প্রথম নজরে আসে ২০১৩ সালে। গ্রামের সবার চিন্তার কারণ হয়ে ওঠে এই ঘুম। বহু ক্ষণ পর ঘুম ভাঙলে থেকে যায় সপ্তাহ জুড়ে মাথা ব্যথা, বমি ভাব। কারও কারও রক্তচাপ বেড়ে যায় মাত্রাহীনভাবে। হ্যালুসিনেশনের পাশাপাশি অনেকের স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
এই ঘুমের কারণ কী? এ নিয়ে চিকিৎসকরা সঠিক কোন ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। তাদের সন্দেহ ছিল গ্রামবাসীরা হয়তো কোনও মানসিক রোগে আক্রান্ত। বৈজ্ঞানিক, রেডিওলোজিস্ট, টক্সিকোলোজিস্ট- সবাই একে একে ওই গ্রামে এসে ঘুমের কারণ খুঁজতে থাকেন। পানি-মাটি পরীক্ষা করা হয়।
গ্রামবাসীদের ব্রেনের স্ক্যান করে দেখা যায়, তাদের মস্তিষ্কে রয়েছে অতিরিক্ত তরল পদার্থ। চিকিৎসার পরিভাষায় যাকে ‘ইডিমা’ বলে। যদিও ওই ইডিমা-র সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। গ্রামবাসীদের সন্দেহ, তাদের এই ঘুমের পিছনে রয়েছে অদূরের ক্রাসনোগোরস্কি ইউরেনিয়াম খনির বাতাস।
কালাচির পাশের গ্রাম ক্রাসনোগর্ক্স। ওখানেই খনিশ্রমিকদের বাসস্থান ছিল। সেই গ্রামও ধীরে ধীরে ঘুমের গ্রাসে চলে যায়। যদিও সোভিয়েত যুগের ওই খনি ১৯৯০তেই বন্ধ হয়ে যায়। বিকিরণ পরীক্ষা করে দেখা যায় খনির ভিতর ও চার পাশের জায়গার রেডিয়েশনের পরিমাণ বেশি নয়। বিপদসীমা পার হয়নি।
২০১৫ সালে এর কারণ জানা যায়। বিজ্ঞানীরা দেখেন রেডিয়েশন নয়, এই ঘুমের কারণ বাতাসে উপস্থিত কার্বন মনোক্সাইড এবং হাইড্রো কার্বনের অতিরিক্ত পরিমাণ। কার্বন মনোক্সাইড অক্সিজেনের তুলনায় ২০০ গুণ দ্রুত রক্তে মেশে। ফলে শরীরে কার্বন মনোক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌঁছতে দেয় না।
অক্সিজেনের অভাবেই মস্তিষ্ক সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না এবং মানুষ ঘুমিয়ে পড়েন বহু ঘণ্টার জন্য। ইউরেনিয়াম খনি থেকেই নির্গত হত কার্বন মনোক্সাইড। কিন্তু বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরেও এই গ্যাস কীভাবে উৎপন্ন হচ্ছে তার কোন সঠিক উত্তর মেলেনি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
পাকিস্তানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ১৯ জনের মৃত্যু
পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে শক্তিশালী ৫ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের আঘাতে ১৯বিস্তারিত পড়ুন
২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় হিক্কা
ধেয়ে আসছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিক্কা। এর ফলে ঝড়ের পাশাপাশি ভারীবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন