আশাশুনির কিছু খবর
এভাবেও সরকারি স্কুল চলতে পারে!
আশাশুনি উপজেলার কুল্যা ইউনিয়নের মাদারবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে লাখ লাখ টাকার বরাদ্দ দেওয়া এবং কাজে পুকুর চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্কুল অফিস কক্ষে লউড স্পিকারে সংগীত প্রচারও হয়ে থাকে। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়ম ভঙ্গের উৎসব পালনের ঘটনায় সচেতন মহলে “এভাবেও সরকারি স্কুল চলতে পারে!” এমন প্রশ্নের সৃষ্টি ও হতাশা উদ্বেগ হয়েছে।
২১২ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে ৫ জন শিক্ষক স্কুলটি পরিচালনা করে আসছেন। প্রধান শিক্ষক শওকত হোসেন শিক্ষক মহলে শিক্ষক নেতা হিসাবে পরিচিত। আর নেতা হওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন বৈধ/অবৈধ সুযোগ গ্রহনে তার জুড়ি মেলা ভার। এজন্য তাকে স্কুলে অবস্থানের চেয়ে সময়ে অসময়ে বেশীর ভাগ উপজেলা সদরে ঘুর ঘুর করতে দেখা যায়। এরই পরাকাষ্টা উদাহরণ হলো, তিনি নেতা হওয়ার সুযোগ এবং অবৈধ শক্তি কাজে লাগিয়ে নিয়ম না থাকা সত্বেও পরপর দু’বার ইমার্জেন্সী খাত হতে ৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ আদায় করতে সক্ষম হন। ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ২০১৬ সালে তিনি স্কুলের নামে ১ লক্ষ টাকা ক্ষুদ্র মেরমাত বাবদ বরাদ্দ করিয়ে আনেন। এবং ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ২০১৭ সালে আরও ২ লক্ষ টাকা অর্থ বরাদ্দ করান। সাথে সাথে ২০১৭ সালে রুটিন মেরামত বাবদ আরও ৯ হাজার টাকা বরাদ্দ পান। ইমার্জেন্সী খাত থেকে ৫০০০/১০০০ কিংবা সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়ার সুযোগ থাকলেও বিশেষ ব্যবস্থায় নিয়মকে বুড়ি আঙ্গুল দেখিয়ে পরপর দু’বার ১ লক্ষ ও ২ লক্ষ টাকার বরাদ্দ হাতিয়ে নিতে সক্ষম হন। টাকা বরাদ্দ হলেও সঠিক ভাবে ব্যয় না করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
২০১৬ সালে করার কাজ পুনরায় ২০১৭ সালে দেখানো হয়েছে। তাছাড়া বরাদ্দের তুলনায় খুব সামান্য কাজ করাা হয়েছে। প্রধান শিক্ষক শওকত হোসেন জানান, ২০১৬ সালে ১ লক্ষ টাকা দিয়ে স্কুল বিল্ডিং এ রং করা, বারাদ্দার গ্রীল নির্মান ও ৮টি ফ্যান ক্রয় করা হয়েছিল। এই সামান্য কাজেই এক লক্ষ টাকা ব্যয় দেখান হয়েছে। যেটি অবিশ্বাস্য মনে হয়েছে। আবার তিনি বলেন, ২০১৭ সালে ২ লক্ষ টাতা দিয়ে পুরো বিল্ডিং রং করা (৩টি কক্ষ), জলসাদ দেওয়া, অফিস রুম মেরামত, গ্রীল নির্মান, টিউবওয়েল স্থাপন ও বিল্ডিং এর টুকিটাকি পুটিং করা হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে একই কাজ দুবার দেখান হয়েছে। বাকী কাজগুলো দিয়ে ২ লক্ষ টাকার ব্যয় দেখানোতে হিসাব মিলেনা। অপর দিকে প্রকল্প কমিটির সদস্য তাসলিমা খাতুন বলেন, ২ লক্ষ টাকা দিয়ে রং করা, বারাদ্দার গ্রীল ও জলসাদ করা হয়েছে। এখানেও হিসাবে ব্যাপক গরমিল মনে হচ্ছে। এব্যাপারে কাজে দায়িত্বরত আশাশুনি উপজেলায় কর্মরত উপ-সহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম জানান, ২ লক্ষ টাকা দিয়ে প্লাস্টার কাজ, রং করা, টিউবওয়েল স্থাপন, প্যাটেন্ট স্টোনের কাজ করা হয়েছে। কাজে কোন অনিয়ম করা হয়নি। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে প্রধান শিক্ষকের দেওয়া হিসাবের সাথে তার ভাষ্যে তারতম্য রয়েছে। সরেজমিন গেলে কথা সাথে কাজের মিলও পাওয়া যায়নি। অপরদিকে রুটিন মেরামত বাবদ বরাদ্দ ৯০০০ টাকা দিয়ে বৈদ্যুতিক মটর, পানির ট্যাংকির প্লাট ফরম নির্মান, পাইপ, ট্যাপ ক্রয় ও দরজার হাজবল্ড লাগানো হয়েছে বলে প্রধান শিক্ষক জানান। ৯ হাজার টাকার কাজের সাথে ১ লক্ষ বা ২ লক্ষ টাকার কাজের মিল খুুজলে পাওয়া যাবে কতটাই পুকুর চুরির ঘটনা ঘটেছে। সোমবার দুপুর ১ টার সময় একদল সাংবাদিক স্কুলে গমন করে চক্ষু ছানাবড়া হয়ে যায়। দেখেন প্রধান শিক্ষক অফিস কক্ষে অন্য একজনকে সাথে নিয়ে বসে লাউড স্পিকারে সাউন্ড বক্সে গান শুনছেন। অফিস কক্ষের পাশের দুটি ক্লাস রুমে তখন ক্লাশ চলছিল। সাউন্ড বক্সের ঝাঝালো শব্ধকে ডিঙিয়ে ক্লাশে পড়ানো মুশকিল হলেও এই রেওয়াজ এখানে বরাবরই চলে থাকে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষক/অভিভাবকরা জানান। সাংবাদিকরা অফিসে ঢুকে পড়লে প্রধান শিক্ষক সামান্য জোর কমিয়ে বক্সে গান শ্রবন অব্যাহত রাখেন। এভাবে ৩টি গান শুনতে শুনতে সাংবাদিকদের সাথে তার কথোপকথন চলে। এভাবে ক্লাশ টাইমে উচ্চ শব্দে গান শুনছেন কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গান শুনলে মন ভাল থাকে। এখানেই শেষ নয়, তিনি উপবৃত্তির টাকা বিতরনের সময় কৌশল অবলম্বন করে টাকা প্রদানের কিছু পরে অভিভাবকদের নিকট থেকে স্কুলের সোলার ক্রয় করার জন্য চাঁদা কালেকশান করেন। তার সাথে নিজেরা কিছু দিয়ে ৩২ হাজার টাকা দিয়ে ৫০ ওয়াটের সোলার সেট ক্রয় করেন। আবার পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক প্রয়োজন না থাকায় সোলারটি নিজে নিয়ে নেন। অবশ্য প্রধান শিক্ষক বলেন, সোলারটি আমি নিজের অর্থে ক্রয় করে স্কুলে লাগিয়ে ছিলাম, প্রয়োজন কমে যাওয়ায় সেটি আমি পুনরায় নিয়ে বাড়িতে লাগিয়েছি। স্কুল কমিটির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম মোবইলে কথা বললে জানান, শিক্ষক, অভিভাবক/কমিটি সোলারটি ক্রয় করেছিল এবং পরে ২০ হাজার টাকা দিয়ে প্রধান শিক্ষক সেটি কিনে নিয়েছেন। এ টাকা দিয়ে শিশু শ্রেণির ক্লাশে রুম নির্মান করেছি। এখানেও তাদের বক্তব্যে ব্যাপক ফারাক পরিলক্ষিত হয়েছে। এভাবে অনিয়ম, দুর্নীতি আর খামখেয়ালীপনার মধ্যদিয়ে স্কুলটি পরিচালিত হচ্ছে। এব্যাপারে যখথাথ তদন্তর্পূক কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য এলাকাবাসী জোর দাবী জানিয়েছে। এব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার শামুসুন্নাহার জানান, পরপর দু’বছর ক্ষুদ্র মেরামতের বরাদ্দ পাওয়ার সুযোগ আছে বলে আমার জানানেই। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জানার পর আমি বলতে পারবো। তবে তিনি ২ লক্ষ টাকা বরাদ্দের জন্য কোন সুপারিশ করেননি বলে জানান। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার অহেদুল আলম মোবাইলে কথা বলেলে জানান, ইমার্জেন্সী খাতে বরাদ্দ পেতে প্রতিষ্ঠান আবেদন করলে ৫ হাজার, কিংবা ১০ হাজার সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা বরাদ্দ পেতে পারে। ১ লক্ষ বা ২ লক্ষ টাকা কিভাবেনবরাদ্দ পেল আমার জানানেই।
আশাশুনির দু’টি কলেজে শান্তি ও সম্প্রীতিময় সমাজ গঠনে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ
আশাশুনি উপজেলার দু’টি কলেজে শান্তি-সম্প্রীতিময় সহিষ্ণু সমাজ গঠনে উগ্রপন্থার বিপক্ষে পরিবর্তনকামী মানুষ হিসাবে সম্পৃক্তকরনে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার কলেজ দু’টির মিলনায়তনে পৃথক দু’টি প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।
আশাশুনি মহিলা কলেজ হল রুমে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন কলেজের অধ্যক্ষ সাইদুর রহমান। প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন, অগ্রগিত সংস্থার মাস্ট্রার টেইনার আশাশুনি প্রেসক্লাব সভাপতি জি এম মুজিবুর রহমান ও মাষ্টার ট্রেইনার কামরুন নাহার রেখা। শিক্ষকদের পক্ষে প্রদর্শক ইয়াহিয়া ইকবাল বক্তব্য রাখেন। আশাশুনি সরকারি কলেজে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন, অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) আলহাজ্ব রুহুল আমিন। প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেন মাষ্টার ট্রেইনার ও উন্নয়ন কর্মী নাজমুল হক রাজু, মাষ্টার টেইনার হাসিনা খাতুন পুতুল। গ্লোবাল কমিউনিটি ইনগেজমেন্ট রেজিলিয়েন্স ফান্ড এর অর্থায়নে, সিএসএম এর সুপারভিশনে, রূপান্তর খুলনার সহযোগিতায় অগ্রগতি সংস্থা সাতক্ষীরার আয়োজনে অনুষ্ঠান দুটিতে কঔেৎ দুটির ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক অংশ গ্রহন করে। সামাজিক সহিষ্ণুতা এবং শান্তি-সম্প্রীতি নিশ্চিতকরনে যেকোন ধরনের সহিংস উগ্রপন্থার বিপক্ষে পরিবর্তনকামী মানুষ হিসেবে তরুন-যুবদের কার্যকরভাবে সম্পৃক্ত করতে দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়।
কাদাকাটি স্কুলের অব: প্রাক্তন প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী আর নেই
আশাশুনি উপজেলার কাদাকাটি আরার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবঃ প্রধান শিক্ষক দিলিপ কুমার মন্ডলের স্ত্রী পরলোক গমন করেছেন। রবিবার ভোর ৫টায় ব্রহ্মনবাড়িয়ায় তিনি মৃত্যুবরন করেন।
ডদলিপ কুমার মন্ডলের স্ত্রী অসীমা রানী মন্ডল (৫৫) ব্রাহ্মনবাড়িয়ায় চাকুরিরত তার ছোট পুত্র পঙ্কজ মন্ডলের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। রোববার রাতে স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ৫টার দিকে তার মৃত্যু হয়। সোমবার সন্ধ্যায় তার মরদেহ কাদাকাটিতে আনা হয়। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বড়পুত্র সুব্রত মন্ডল বাংলাদেশে ফিরেছেন। তিনি মাকে দর্শনের পর রাতেই তার (অসীমা মন্ডল) অন্মেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হবে। মৃত্যুকালে তিনি স্বামী, ২ পুত্র ও ১ কন্যা রেখে গেছেন। তালা আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য এড. মোস্তফা লুৎফুল্লাহ, ইউপি চেয়ারম্যান দিপংকর কুমার সরকার, ইউপি চেয়ারম্যান এস এম রফিকুল ইসলামসহ বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের মানুষ পরলোকগত শিক্ষক স্ত্রীকে একনজর দেখতে সেখানে গেছেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন
আশাশুনিতে পূর্বের বিয়ের তথ্য গোপন করে আবারো অন্যত্র বিয়ে দেয়ার অভিযোগ!
সাতক্ষীরার আশাশুনিতে পূর্ববর্তী বিয়ের তথ্য গোপন করে অধিক লাভ ওবিস্তারিত পড়ুন