কেশবপুরে ফুটবল খেলতে চাওয়ায় ৬ শিক্ষার্থীকে উলঙ্গ করার অভেযোগ
যশোরের কেশবপুরের সানতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ফুটবল খেলতে চাওয়ায় ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্রেণী কক্ষের ভেতর ৬ শিক্ষার্থীকে নিয়ে প্যান্ট খুলে উলাঙ্গ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
লজ্জায় গত সোমবার ঐ ৬ শিক্ষার্থী স্কুলে আসতে না চাইলে ঘটনাটি ফাঁস হয়ে পড়ে। ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির কাছে সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
জানা গেছে, ১৯৫৩ সালে উপজেলার সুফলাকাটি ইউনিয়নের সানতলা গ্রামে সানতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। সেই থেকে শিক্ষার্থীদের পদভারে প্রতিষ্ঠানটি মুখরিত ছিল। ওই স্কুলের সহকারি শিক্ষক রবীন্দ্র নাথ ২০০৩ সালে স্কুলটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর থেকে তার একের পর এক অপকর্ম, স্বজনপ্রীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে অভিভাবকরা এ স্কুল থেকে তাদের ছেলে মেয়েদের অন্যত্র নিয়ে ভর্তি করাতে শুরু করেন। এরপরও ২০১০ সালে রবীন্দ্র নাথ তার স্ত্রী কাকলী রাণী সরকারকে অন্য স্কুল থেকে বদলি করে তার স্কুলে নিয়ে আসেন। ফলে স্বামী-স্ত্রী একই স্কুলে থাকায় ওই প্রতিষ্ঠানে বর্তমান হযবরল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে ওই স্কুলে শিক্ষার্থী কমতে কমতে বর্তমান ৩০ থেকে ৩৫ জনে ঠেকেছে।
অভিভাবক সদস্য জালাল উদ্দীন বিশ্বাস জানান, গত রোববার দুপুরে বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা ফুটবল খেলার জন্যে বল আনতে যায় প্রধান শিক্ষকের কাছে। এ সময় তিনি তাদের হাতে বল না দিয়ে শিশু শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের খেলতে দেন। এরপরও তারা বল খেলতে চাইলে এক পর্যায়ে ওই প্রধান শিক্ষক ৫ম শ্রেণীর ছাত্র রিয়াজ, সবুজ, ৩য় শ্রেণীর ছাত্র আব্দুল¬াহ, মুজাহিদসহ ৬/৭ জন শিক্ষার্থীকে একটি শ্রেণী কক্ষে ডেকে নিয়ে প্যান্ট খুলে উলাঙ্গ হতে বলেন। লজ্জায় ওই সমস্ত শিক্ষার্থীদের মুখ লাল হয়ে গেলেও প্রধান শিক্ষকের হুকুমে তারা বাধ্য হয় প্যান্ট খুলতে। শিশু শ্রেণীর শিক্ষার্থী সিয়াম জানালার ফাক দিয়ে এ দৃশ্য দেখে বাড়ির সবাইকে জানিয়ে দেয়। ওই রাতেই অভিভাবকরা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
অভিভাবক হাসান আলী জানান, ওই প্রধান শিক্ষক কোন শিক্ষার্থীকে স্কুলের টয়লেট ব্যবহার করতে দেয় না। কারো বাথরুম লাগলে সরাসরি বাড়ি আসতে হয়। তিনি স্বসম্মানে বদলি না হলে ৭ দিন পর স্কুলে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হবে বলেও তিনি হুমকি দেন।
সোমবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ৩য় শ্রেণীতে ৪ জন, ৪র্থ শ্রেণীতে ৫ জন ও ৫ম শ্রেণীতে ৬ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রবিন্দ্র নাথ সরকার বলেন, এক সপ্তাহ আগে ৩য় শ্রেণীর ছাত্র আব্দুল¬াহর খতনা দিয়েছিল তার পরিবার। আমি সেটা দেখতে চেয়েছিলাম। গ্রামবাসি ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছেন।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি লক্ষন হালদার বলেন, ওই শিক্ষক যে কান্ড ঘটিয়েছে তাতে অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ। তাকে ৭ দিনের মধ্যে এ স্কুল ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা প্রভাত কুমার রায় বলেন, ৩টি বিষয়ের ওপর তদন্তের জন্যে সোমবার স্কুলটি পরিদর্শন করা হয়েছে। সত্যতা পাওয়া গেছে। বিষয়টি ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বেনাপোলে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক বর্জন করলো সাংবাদিকরা
বেনাপোল স্থলবন্দর আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের দ্বিতীয়তলায় নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও স্থলবিস্তারিত পড়ুন
ঝিকরগাছায় বাস চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী শিশুসহ দু’জন নিহত
যশোরে বাস চাপায় এক শিশু ও এক মোটসাইকেল আরোহীর মৃত্যুবিস্তারিত পড়ুন