মুঘল বংশের উত্তরসূরীদের মানবেতর জীবনযাপন
হায়দ্রাবাদের মালকপেটের এবড়োখেবড়ো তস্য গলির পাশে আছে আসমান গড়। নাম শুনলে মনে হবে বুঝি প্রাসাদ। সামনে গেলে দেখা যাবে চার কামরার ভাড়া বাড়ি। সেখানে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে থাকে এমন এক পরিবার‚ কয়েকশো বছর আগে যাদের পূর্ব পুরুষদের পায়ের নিচে ছিল এশিয়ার একটা বড় অংশ।
এই বাড়িতেই থাকে মুঘল উত্তরসূরীদের একটি শাখা। দেড় দশক আগেও কেউ জানত না। অনেক খুঁজে বের করে এক তরুণ তথ্যচিত্র পরিচালক। যদিও তারপর থেকে অবস্থা বিশেষ পাল্টায়নি বাসিন্দাদের।
ঘিঞ্জি এই পরিবেশের বাসিন্দা জিয়াউদ্দিন টাকি। যার মা উমাহনি বেগমের বাবা ছিলেন মির্জা পায়ার। এই মির্জা পায়ার আবার শেষ মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফরের নাতির ছেলে বা পুতি। আবার উমাহনির মা ছিলেন হায়দ্রাবাদের নিজাম বংশের মেয়ে।
একদিকে মুঘল‚ অন্যদিকে নিজাম‚ এই দুই পরিবারের রক্ত বইছে ধমনীতে। কিন্তু সে কথা নিজেরাই ভুলতে বসেন মাঝে মাঝে। জীবনযুদ্ধে ক্ষত-বিক্ষত হতে হতে মনেই থাকে না তাদের পূর্ব পুরুষরা এক সময় উত্তরাধিকার ছিলেন ময়ূর সিংহাসনের। মলিন দেওয়াল থেকে বিবর্ণ হাসি হাসে মুঘল সম্রাটদের তৈলচিত্র।
জিয়াউদ্দিনের বাবার উপার্জন বলতে ছিল ২৫টি রিকশার ভাড়া। তার মালিকানায় হায়দ্রাবাদ শহরে চলত রিকশাগুলো। জিয়াউদ্দিন নিজের রাজ্য সরকারি চাকরি করতেন। অবসরের দীর্ঘদিন পরে তার অবলম্বন এখন পেনশনের কিছু টাকা।
১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে প্রয়াত হন ভারতের শেষ মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফর। তারপরে বিলীন হয়ে যায় বিখ্যাত মুঘল বংশ। জিয়াউদ্দিন যোগাযোগ করেছেন দেশের অন্য প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মুঘল উত্তরসূরীদের সঙ্গে। অনেকের হাল তাদের থেকেও খুবই খারাপ।
১৯৯৩ সালে উজবেকিস্তানে আমন্ত্রিত হয়েছিল এই পরিবার। সম্রাট বাবরের ৫১০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে। সেই দেশের আন্দিজোনে রীতিমতো লাল গালিচা পেতে স্বাগত জানানো হয়েছিল তাদের। পরিবারের সন্তানদের জন্য দেওয়া হয়েছিল জলপানি পেয়ে পড়াশোনার সুযোগ।
কিন্তু উজবেকিস্তানের কর্কশ জলবায়ুর সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেনি পরিবারের নতুন প্রজন্ম। দুই এক বছর কাটিয়েই ফিরে এসেছে ভারতে। তাদের পূর্ব পুরুষরা যেভাবে প্রতিকূলতার সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছিল‚ পারেনি আজকের প্রজন্ম। শিকড়ের টান শিকেয় তুলে ফিরে এসেছে ভারতবর্ষেই।
সূত্র: বাংলা লাইভ ডটকম
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
পাকিস্তানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ১৯ জনের মৃত্যু
পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে শক্তিশালী ৫ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের আঘাতে ১৯বিস্তারিত পড়ুন
২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় হিক্কা
ধেয়ে আসছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিক্কা। এর ফলে ঝড়ের পাশাপাশি ভারীবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন