প্রথমদিনেই তালা হাসপাতালে লাগানো হলো ৪টি এসি
হাসপাতালে রোগীদের দুরবস্থা দেখে নিজেকে অপরাধী মনে করেছেন সাতক্ষীরার তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইকবাল হোসেন। ঘোষণা দিলেন হাসপাতালে এসির ব্যবস্থা না করে নিজের রুমের এসি ব্যবহার করবেন না। যেই কথা সেই কাজ।
সোমবার সকাল থেকে তালা হাসপাতালে এসি লাগালোর কাজ শুরু করে চারটি এসি লাগানো হয়েছে এবং বাকি এসি গুলো ক্রমানয়ে লাগানোর কাজ চলবে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইকবাল হোসেন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে। এই রুমের মধ্যে থাকতে ভালো লাগছে না। হাসপাতালে অপারেশনের রোগী গরমের সঙ্গে লড়ছে। রাতের তালা আমাকে বদলে দাও। কাল থেকে আমার এসি রুমে বন্ধ থাকবে। রোগীদের এসির ব্যবস্থা না করে এই এসি রুম ব্যবহার করব না। দয়া করে রুমে ঢুকে কেউ এসি চালাতে বলবেন না। হাসপাতালে এসির ব্যবস্থা হবে। কোনো ময়লা থাকবে না। জুতা বাইরে থাকবে। আর বাথরুম থেকে গন্ধ নয়, ঘ্রাণ আসবে।’
যে কথা সেই কাজ। অবশেষে তালা হাসপাতালে রোগীদের ব্যবহারের জন্য এসির ব্যবস্থা করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইকবাল হোসেন। রোববার বিকেলে এসিগুলো তালা হাসপাতালে এসে পৌঁছায়। সোমবার সকাল থেকেই হাসপাতালে এসি লাগানোর কাজ শুরু করে এবং ৪টি এসি মহিলা ওয়ার্ডে লাগানো হয়েছে ও বাকি গুলো ক্রমানয়ে লাগানো হবে বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মীর আবু মাউদ বলেন, প্রাথমিকভাবে দুটি ওয়ার্ডে ১২টি এসির জন্য চাহিদাপত্র দেয়া হয়েছে। আরেকটি ওয়ার্ডে পরবর্তীতে লাগানো হবে। এসি গুলো হাসপাতালে এসে পৌঁছেছে। সোমবার সকাল থেকেই এসি লাগালোর কাজ শুরু হয়েছে এবং মহিলা ওয়ার্ডে ৪ এসি লাগানো হয়েছে বাকি এসিগুলো কাল সকাল থেকে লাগানো হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এগুলো পাঠিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইকবাল হোসেনর উদ্যোগে এটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। হাসপাতালে রুগীদের ওয়ার্ডে ঢুকতে হলে জুতা খুলে প্রবেশ করা শুরু হয়েছে।
গত ২৯ জুলাই তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলা থেকে তালা উপজেলায় যোগ দেন ইকবাল হোসেন। যোগদানের পরই তিনি তালা সদরসহ গ্রামাঞ্চলের মানুষদের মধ্যে শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ শুরু করেন। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা, অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও অবৈধ পার্কিংরোধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছেন।
তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইকবাল হোসেন বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে অপারেশনের ব্যবস্থা চালু করেছেন। যা অনেক উপজেলাতে হয় না। এরপর আমার মনে হয়েছে হাসপাতালের রোগীদের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য এসির ব্যবস্থা করা যায় কিনা। উদ্যোগ গ্রহণ করি আর সেটি বাস্তবায়ন হচ্ছে। অনেকেই ভেবেছিল এটা কথার কথা বলেছি, কিন্তু আমি কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী।
সোমবার সকাল থেকে এসিগুলো লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে। তালা হাসপাতালকে আমি একটি মডেল হাসপাতাল করতে চাই। যাতে সাধারণ মানুষ প্রাইভেট ক্লিনিকে না গিয়ে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইকবাল হোসেন আরও বলেন, হাসপাতালের দুটি ওয়ার্ডে টিভির ব্যবস্থা করা ও বাইরে একটি ওয়েটিং রুমের ব্যবস্থা করা হবে। রোগী বা রোগীর স্বজনরা পরিবেশ দেখে নিজেই জুতা বাইরে রেখে প্রবেশ করবেন। বাথরুমগুলো থাকবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। হাসপাতালের মধ্যে ফুলের টব দেয়া হবে। এককথায় এটা হবে আধুনিক হাসপাতাল। সবার সহযোগিতায় এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে চাই। পরবর্তীতে সরকার যদি কখনো এটাকে মডেল হিসেবে নেয়, তবে সারাদেশেই ছড়িয়ে পড়বে এই মডেল। উপকৃত হবে সাধারণ মানুষ। প্রাইভেট ক্লিনিক ছেড়ে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হবে রোগীরা।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন
তালায় ইউএনও’র প্রেরণায় গার্লস হাইস্কুলে ডেইলি স্টার কর্নার চালু
তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও’র অনুপ্রেরণায় শহীদ আলী আহম্মেদ বালিকাবিস্তারিত পড়ুন