শার্শায় গৃহবধু ধর্ষন মামলায় পিআইবি’র তদন্ত শুরু
যশোরের শার্শার লক্ষ্ণণপুরে গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূ বলেছেন ভয়ে পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে এস আই খায়রুলের নাম বলতে পারিনি। শুক্রবার দুপুরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন। তিনি এসআই খায়রুলসহ সব আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার পুলিশ হেডকোয়ার্টারের এক আদেশে গৃহবধূ গণধর্ষণের মামলাটির তদন্তভার পুলিশ বু্যরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে প্রদান করা হয়েছে। যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমকেএইচ জাহাঙ্গীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। মামলার তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া পিবিআইয়ের ইনস্পেক্টর মোনায়েম হোসেন বলেছেন,’দায়িত্ব পেয়েই ঘটনাস্থলে এসেছি, তদন্ত শুরু করেছি।’
গতকাল নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের ওই গৃহবধূ বলেন, ‘আমি খায়রুলকে ভালোভাবেই চিনি। আমাদের কাছ থেকে দফায় দফায় ৮ ও ৪ হাজার করে টাকা নিয়েছে। আবার বিনা কারণে আমার স্বামীরে ধরে নিয়ে গেছে।’
তিনি বলেন পুলিশ যখন খায়রুলকে আমার সামনে নিয়ে আসছিল এবং জিজ্ঞেস করছিল- ইনি ছিলেন কি না। তখন আমি ভাবলাম, সে তো পুলিশের লোক। যখন সে বারে বারে আমার স্বামীরে তুলে নিয়ে যাচ্ছে তার সঙ্গে আমি পারব না। তা ছাড়া খায়রুল আমার দিকে এমনভাবে তাকাইছে, তার চোখের ভাষায় আমি বুঝতি পারছি।’
ধর্ষণের সময় এসআই খায়রুল উপস্থিত ছিলেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রিপোর্টে তো প্রমাণ আসবে। আর আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও তারা বলবে। কারণ তারা আরও ভালো জানে।’
এসআই খায়রুলসহ আরও যে তিন আসামি রয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে ওই গৃহবধূ বলেন তাদের শাস্তি দেখে আরও ৫/১০ জন মানুষ যেন এমন অপকর্ম করতে সাহস না করে।
এর আগে ৪ সেপ্টেম্বর যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাউদ্দিন শিকদার এক ‘প্রেস নোটে’ দাবি করেছিলেন, এসআই খায়রুল আলমকে ওই গৃহবধূর সামনে উপস্থিত করা হলে তিনি শনাক্ত করেননি। সেজন্য তার নাম বাদ দিয়ে মামলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শার্শা থানার ওসি এম মশিউর রহমান বলেন, ‘ওই গৃহবধূ সেদিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সামনেই এসআই খায়রুল সম্পর্কে তার বক্তব্য দিয়েছিলেন। তাকে কোনো প্রকার ভয়ভীতি বা চাপ দেয়া হয়নি।’ তবে আজ কেন ভয়ের কথা বলছেন এ প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, ‘হয়তো কেউ তাকে দিয়ে এখন এসব বলাচ্ছে।’
এদিকে, শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপির নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব নিপুণ রায় চৌধুরী ও ফোরামের জেলা নেতারা ওই নারীর বাড়িতে যান। তারা ওই গৃহবধূর খোঁজখবর নেন এবং আইনগত সহায়তা দেয়ার আশ্বাস দেন। পরে নিপুণ রায় বলেন, এসআই খায়রুলসহ চারজনের নাম এসেছে। ভয়ভীতি দেখিয়ে এসআইকে মামলায় এজাহারভুক্ত করা হয়নি।
বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে তিনি বলেন, ‘যেকোনো মূল্যে এসআই খায়রুলকে এক নম্বর আসামি করে তাকে গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় এনে দ্রুতো বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।’
যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আরিফ আহমেদ জানিয়েছিলেন, ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। তবে, সেখানে কার কার সিমেন (বীর্য) রয়েছে তা জানতে ডিএনএ টেস্ট প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত, ২ সেপ্টেম্বর শার্শা উপজেলার লক্ষ্ণণপুর এলাকায় ওই গৃহবধূর বাড়িতে ২ সেপ্টেম্বর গভীররাতে যায় এসআই খায়রুল, সোর্স কামরুলসহ চারজন। তারা ওই ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা না দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে এসআই খায়রুল ও কামরুল তাকে ধর্ষণ করেন বলে ওই গৃহবধূ অভিযোগ করেন। ঘটনা তদন্তে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বেনাপোলে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক বর্জন করলো সাংবাদিকরা
বেনাপোল স্থলবন্দর আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের দ্বিতীয়তলায় নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও স্থলবিস্তারিত পড়ুন
ঝিকরগাছায় বাস চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী শিশুসহ দু’জন নিহত
যশোরে বাস চাপায় এক শিশু ও এক মোটসাইকেল আরোহীর মৃত্যুবিস্তারিত পড়ুন