আইন করেও হেলমেট পরানো যায় না যে শহরের মানুষদের!
দুর্ঘটনা এড়াতে মোটরসাইকেল চালকদের জন্য হেলমেট পরিধান করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু ভারতের কিছু জায়গায় এ নিয়ম কার্যকর করা রীতিমত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুনেতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে হেলমেট বাধ্যতামূলক করা সম্ভব হচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর।
পুলিশ কনস্টেবল সুনিল তাথে বলেন, এখন ৭০ ভাগ চালক হেলমেট পরলেও একসময় আমরাই আদেশ পেয়েছিলাম হেলমেট পরিধানে বাধ্য করতে চালানো অভিযান বন্ধ করার জন্য। খুব কমই দেখেছি যে অর্ধেক চালকও হেলমেট পরেন।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ নির্দেশ দিয়েছেন রাস্তাঘাটে চালকদের না থামিয়ে বরং জরিমানার নোটিশ আইন ভঙ্গকারী চালকদের বাড়িতে পাঠাতে।
পুনের আইনপ্রনেতারা হেলমেট অভিযানকালে মানুষকে পুলিশ হয়রানি করছে এমন অভিযোগ তোলার পর মুখ্যমন্ত্রী এমন আদেশ দেন।
অবশ্য পুরো ভারত জুড়েই এ সমস্যা আছে। বিভিন্ন শহরে পুলিশকে রীতিমত সংগ্রাম করতে হচ্ছে মটরসাইকেল চালকদের হেলমেট পরতে বাধ্য করতে।
তাথে বলেন, সিসিটিভিতে নাম্বার প্লেট দেখা গেলেই কেবল আপনি কাউকে জরিমানার নোটিশ পাঠাতে পারেন। প্রায়শই দেখি চালকরা তাদের নাম্বার প্লেট অস্বচ্ছ করে রেখেছে।
ভারতের যেসব শহরে বেশি বাইক চলাচল করে তার মধ্যে পুনে একটি- যার সংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ। যে ১০টি শহরে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা হয় পুনে তার একটি। গত পাঁচ বছরে কমপক্ষে এক হাজার বাইক চালক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে এবং এর মধ্যে মাত্র তিনজনের মাথায় হেলমেট ছিলো।
অথচ পুলিশ যখন অভিযান শুরু করলো তখন সবাই এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হলো। এমনকি কিছু মানুষ রাস্তায় এসে এর প্রতিবাদ করেছে। এমনকি শ্লোগান দিয়েছে তারা হেলমেট হঠাও পুনের মানুষকে বাঁচাও। হেলমেট বিরোধী একটি গ্রুপ হেলমেটের শেষকৃত্য অনুষ্ঠান পর্যন্ত আয়োজন করেছিলো।
তাদের একটি যুক্তি হলো শিখরা মাথায় টুপি পরিধানের কারণে যদি হেলমেট পরা থেকে রেহাই পায় তাহলে অন্যরা পাবে না কেন?
একজন স্থানীয় রাজনীতিবিদ এই হেলমেট বিরোধীদের সাথে সুর মিলিয়ে বলেছেন হেলমেটে নাকি মেরুদণ্ডের সমস্যা করে।
অ্যান্টি হেলমেট কমপালসন অ্যাকশন কমিটির নেতা ভিবেক ভেলাঙ্কার বলছেন দু দশক ধরে তারা যুদ্ধ করছেন।
তার যুক্তি হলো হেলমেট পড়লে যে নিরাপত্তা বোধ তৈরি হয় তার কারণেই বাইকাররা লাগামহীন ড্রাইভিং করেন।
একটি রাজনৈতিক দল সেখানে মোটরবাইক শোভাযাত্রা করেছেন যেখানে সব চালক হেলমেটের বদলে স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী টুপি পরিধান করেছেন।
গত এপ্রিলে সংসদ নির্বাচনের আগে একজন প্রার্থী এসেছেন যার একমাত্র ইস্যু ছিলো হেলমেট নিষিদ্ধ করা। পুনে ট্রাফিক পুলিশের ডেপুটি কমিশনার পঙ্কজ দেশমুখ বলছেন, বেশিরভাগ লোক হেলমেটের বিরুদ্ধে কথা বলে এটাই কর্মকর্তাদের হতাশ করে, যারা সত্যিকার ভাবে আইনের প্রয়োগ করতে চায়। এসবের কোনো যুক্তি নেই কিন্তু পুনেতে এরা রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে থাকে।
তবে গত ১ জানুয়ারি থেকে পুলিশের অভিযানে প্রায় এক লাখ চালককে জরিমানা করা হয়েছিলো। পুলিশ একই সাথে যারা ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করে না কখনো তাদের পুরস্কৃত করার উদ্যোগ নিয়েছে।
শহরের একজন অধিবাসী নিশাদ কুলকার্নি বলছেন, শহরের অধিবাসীদের মধ্যে নিরাপত্তার চেয়েও সুবিধার বিষয়টি বেশি অগ্রাধিকার পায়। আমার পরিবারেই অন্তত ত্রিশ জন আছে এবং আমার মনে হয় না আমরা কেউ হেলমেট পরিধান করি।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
পাকিস্তানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ১৯ জনের মৃত্যু
পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে শক্তিশালী ৫ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের আঘাতে ১৯বিস্তারিত পড়ুন
২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় হিক্কা
ধেয়ে আসছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিক্কা। এর ফলে ঝড়ের পাশাপাশি ভারীবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন