কালিগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানান অনিয়ম ও দুর্নীতি
কালিগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ চাওর হয়ে উঠেছে। কলেজের ১৯ জন শিক্ষকসহ উপজেলার সুশীল সমাজ আজ ফুঁসে উঠেছে। অর্থলোভী, ষড়যন্ত্রকারি, প্রতিষ্ঠান ধ্বংসকারী, সু-চতুর অধ্যক্ষ জি এম রফিকুল ইসলাম দীর্ঘদিন যাবৎ নিয়মকানন উপেক্ষা করে চরে আসছে। কলেজ সরকারীকরণের নামে কলেজের শিক্ষকদের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে আত্মসাত করেছে। প্রতিবাদে ভুক্তভোগী শিক্ষকরাসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা সভা, সমাবেশ, সাংবাদিক সম্মেলন ও মানববন্ধন করেছেন। অথচ জামায়াত নেতা জি এম রফিকুল ইসলাম অতি চাতুরতার সহিত নিজেকে ধোয়া তুলষীপাতা সেজে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতির দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত শিক্ষক মন্ডলী সম্প্রতি কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অভিযোগ দায়ের করলে গত ৩ জুলাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে উভয় পক্ষকে উপস্থিত হতে বলেন। সে মোতাবেক অধ্যক্ষ ও আন্দোলনকারী শিক্ষকরা হাজীর হন। উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী অভিযোগের আলোকে শোনা জানা করতে থাকেন কিন্তু সু চতুর অধ্যক্ষ যথাযথ জবাব না দিয়ে নানান রকম তালবাহানা করতে থাকে। এক পর্যায়ে উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন কালিগঞ্জ কলেজে দীর্ঘদিন ধরে বিজ্ঞান, গণিত, ইংরাজি সহ অন্যান্য শিক্ষক সহ ১৭ টি শিক্ষকের পদ শূণ্য রয়েছে। অধ্যক্ষ কেন শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ দেন নি। কলেজটি সরকারী করণেও অধ্যক্ষের অনিহা ছিল। কলেজের বিল ভাউচারে অনিয়ম ও শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। তা না হলে জনগনেই এর ব্যবস্থা নিবে। তিনি আরো বলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা, জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষাখাতে বরাদ্ধ ও গুরুত্ব দিয়েছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেন এ ধরনের অনিয়ম চলবে। একজন ব্যাক্তির টেক্সের পয়সায় আপনাদের বেতন হয়। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন কে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি একজন সৎ যোগ্য, দক্ষ কর্মকর্তা আপনার সুনাম রয়েছে, আপনি কলেজের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, দূর্নীতি ও অধ্যক্ষ নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে সঠিক ভাবে তদন্ত করবেন। যে বা যারা বিরোধীতা করবে প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তিনি গত বুধবার ৩ জুলাই)বেলা সাড়ে ১২ টায় কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে কালিগঞ্জ সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ জি এম রফিকুল ইসলাম খুলনা বিএল কলেজে প্রশিক্ষন কর্মশালায় অংশগ্রহন করায় ভিল ভাউচার উত্তোলন বিষয়ে বিশেষ জরুরী সভায় এ কথা বলেন। জানাগেছে কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কালিগঞ্জ সরকারী কলেজের সভাপতি সরদার মোস্তফা শাহিন কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষক কর্মচারীদের নিয়ে কলেজের বিভিন্ন সমাস্য সমাধানের লক্ষ্যে আলোচনায় বসেন। এসময় কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক রুহুল আমিন বলেন, অধ্যক্ষ নিজেই গ্রুপিং সৃষ্টি করে তার নিজস্ব ২-৩ জন শিক্ষক নিয়ে অন্য শিক্ষকদের সাথে বিরুপ আচারণ করেন। অধ্যক্ষ কলেজের পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়, প্রশিক্ষনে গিয়ে ডাবল ভিল ভাউচার করা, শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মামলা সহ বিভিন্ন বিষয়ে অনিয়োম তুলে ধরেন। তখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, এ কলেজের দায়িত্ব দেওয়ায় আমি বিপদে আছি কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের মধ্যে দূর্ঘদিন ধরে সমন্বয়হীনতা এবং গ্রপিং চলছেল, আপনারা মিলে মিশে চলতে না পারলে কলেজের পরিনিতি ভালো হবে না। এদিকে কলেজের শিক্ষকদের অপমান জনক আচারনের কারনে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মান হানির মামলা করেছে কলেজের শিক্ষকরা। অন্যদিকে অধ্যক্ষ পাল্টা মামলা করেছে কলেজের ৭ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে দূর্ঘদিন চলছে কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকের বিরুদ্ধে মনোমালিন্য। বুধবারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে কলেজের অধ্যক্ষের বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে জড়িয়ে কয়েকটি পত্রিকায় যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী। তিনি বলেন কলেজটি কতিপয় ব্যক্তির চক্রান্তের কারণে শিক্ষার পরিবেশ ধংশ হতে চলেছে। এদিকে ভিন্ন খ্যাতে নিয়ে বিভ্রান্তিকর সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। কলেজের সার্বিক উন্নয়ন ও শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার সার্থেই আমি অধ্যক্ষকে পদত্যাগ করতে বলেছি।
আপনি না মানুষ গড়ার কারিগর। আপনার নেতৃত্বে একটি কলেজ চলে। আর আপনি এ সব অন্যায়ে জড়িয়ে পড়লে, শিক্ষার্থীদের কি শিখাবেন।এ ঘটনাকে পুঁজি করে কলেজের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎকারীর মায়া কান্নায় কতিপয় সাংবাদিককে ভূল বুঝিয়ে কয়েকটি পত্রিকায় অসত্য, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, ষড়যন্ত্রমুলক সংবাদ প্রকাশ করিয়েছে। যার প্রতিবাদ জানিয়েছেন কালিগঞ্জ কলেজের অধ্যাপক মিত্র তাপস কুমার, অধ্যাপক কামরুন নাহার, প্রভাষক রবিউল ইসলাম, প্রভাষক মৌমিতা মল্লিক, প্রভাসক সিরাজুল কবীর, অধ্যাপক মোসলেম উদ্দীন, অধ্যাপক হালিমা খানম, আনন্দ মোহন চ্যাটার্জীসহ ১৯ জন।
উল্লেখ্য যে, জামাত বি এন পি জোটের সময়ে অধ্যক্ষ পদে অযোগ্য থাকলেও অবৈধভাবে নিয়োগ পায় জি এম রফিকুল ইসলাম। তিনি কেন্দ্রীয় জামাতের সুরা সদস্য, গাজী নজরুল ইসলাম (সাবেক এমপি) এর সহোদর ভাই। একারণেই তিনি নিয়োগ পেয়েছিল কালিগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন
সাতক্ষীরা জেলা ব্যাপী গ্রেফতার ১৩, ইয়াবা-ফেন্সিডিল-গাঁজা উদ্ধার
সাতক্ষীরা জেলা ব্যাপী পুলিশের মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযানে মাদক মামলারবিস্তারিত পড়ুন