আরো খবর...
খুলনাঞ্চল সম্পাদক গ্রেফতার: নড়াইলে সাংবাদিকদের নিন্দা, মুক্তির দাবি
খুলনা থেকে প্রকাশিত দৈনিক খুলনাঞ্চল সম্পাদক ও প্রকাশক এবং খুলনা প্রেসকাবের সাবেক সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান মিলটনকে মানিলন্ডারিং মামলায় গ্রেফতার করেছে সিআইডি পুলিশের একটি দল।
গতকাল বেলা ২টার দিকে নগরীর অভিজাত সিটি হোটেল থেকে তাকে জোর করে তুলে নেয়া হয়। পরে নড়াইল জেলার কালিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়।
এদিকে এ ঘটনায় নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের নেতৃবৃন্দসহ কর্মরত সাংবাদিকরা তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, চলন্তিকা যুব সোসাইটি নামক একটি বেসরকারি সংস্থার অর্থ আত্মসাতকে কেন্দ্র করে একটি মহল খুলনাঞ্চল সম্পাদক মিজানুর রহমান মিলটনকে দীর্ঘদিন ধরে একের এক মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, খুলনাঞ্চল সম্পাদক মিজানুর রহমান মিলটন দুপুরে একটি ব্যাংকে ব্যক্তিগত কাজে যান। সেখানে থাকা অবস্থায় তাকে সিআইডির এক কর্মকর্তা ফোন করে দেখার করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। মিলটন দুপুর ২টার দিকে হোটেল সিটি ইনে গেলে সাদা পোশাকের সিআইডি পুলিশ তাকে জোর পূর্বক তুলে নিয়ে যায়।
ওদিকে বিকেল পর্যন্ত মিলটনের মোবাইল সংযোগ বন্ধ থাকায় তাঁর স্বজন ও সহকর্মীদের উদ্বীগ্ন হয়ে পড়েন। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান না মেলায় আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়েন। পরে সহকর্মীরা বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে যোগাযোগ করেন। এক পর্যায়ে তারা জানতে পারেন হোটেল সিটি ইন থেকে তাকে তুলে নেয়া হয়েছে। সন্ধ্যার দিকে নড়াইল কালিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান মিলটনসহ তিনজনকে সিআইডি পুলিশ তাদের কাছে হস্তান্তর করেছে বলে নিশ্চিত করেন।
নড়াইলের কালিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, সন্ধ্যা ৭টার দিকে সিআইডি মিজানুর রহমান মিলটন নামের একজনকে থানায় নিয়ে আসেন। তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের মামলা হবে। তবে কে বাদী হবে তা এখনো জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ১৫ এপ্রিল নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় ‘চলন্তিকা যুব সোসাইটি’ নামক একটি বেসরকারি সংস্থা বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় আট হাজার গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করার ঘটনায় ১৫এপ্রিল সংস্থার চেয়ারম্যান খবিরুজ্জামানসহ আটজনের বিরুদ্ধে কালিয়া থানায় মামলা হয়। ওই মামলায় খুলনাঞ্চল সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান মিলটনকে জড়ানো হয়। কিন্তু ঘটনার সাথে জড়িত না থাকায় পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে মিলটনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
নিন্দা ও মুক্তি দাবি :
এদিকে খুলনা প্রেসকাবের সাবেক সহ-সভাপতি ও দৈনিক খুলনাঞ্চল পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান মিলটনকে গ্রেফতারের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও অবিলম্বে তাকে মুক্তি দেয়ার দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়, সাধারণ সম্পাদক মোঃ হিমেল মোল্যা, প্রৌর কমিশনার মাহাবুর রহমান, আকতার মোল্যা, বুলুদাস, জাহাংগীর সেখসহ ক্লাবের সকল সদস্যবৃন্দসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
৩১কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেপ্তার-৪
নড়াইলে গ্রাহকের জমা করা সাড়ে ৩১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চার এনজিও কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল রাতে সিআইডির উপপুলিশ পরিদর্শক অলক চন্দ্র হালদার এনজিওর ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছেন।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন ‘চলন্তিকা যুব সোসাইটি’ নামের এনজিওর মিজানুর রহমান (৪৩), সজল দাস (২৮), প্রণব দাস (৩২) ও মিলন দাস (৫০)। গতকাল খুলনা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
নড়াইলের কালিয়া থানা সূত্রে জানা গেছে, ‘চলন্তিকা যুব সোসাইটি’ নামের এই এনজিওর মূল শাখা খুলনার সোনাডাঙ্গায়। ২০০৪ সালে খুলনার পার্শ্ববর্তী জেলা গুলোতে ৯টি কার্যালয় খোলে তারা। এনজিওটি কয়েকগুণ মুনাফার লোভ দেখিয়ে ডিপিএস ও এফডিআরের নামে কয়েক হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে আমানত গ্রহণ করে। কিন্তু নানা অজুহাতে লভ্যাংশ প্রদানে গড়িমসি করতে থাকে সংস্থাটি। গ্রাহকেরা আমানত ফেরত চাইলে সেটিও ফেরত না দিয়ে ২০১৮ সালের মার্চ মাসে কালিয়া কার্যালয় বন্ধ করে কর্মকর্তারা উধাও হয়ে যান। এরপর একে একে অন্য শাখাগুলোও বন্ধ করে গ্রাহকদের ৩১ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার ৭৪০ টাকা আমানত নিয়ে পালিয়ে যান কর্মকর্তারা।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে প্রতারণার উদ্দেশ্যে এই এনজিও খুলে টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এনজিওটির চেয়ারম্যান মো. খবিরুজ্জামান ও নির্বাহী পরিচালক মো. সারোয়ার হুসাইনের নামে বিভিন্ন জেলায় ৪০টি মামলার তদন্ত চলছে। মামলায় এই দুজনসহ প্রধান কার্যালয়ের ১১ জন ও শাখা কার্যালয়ের চারজন কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে।
সিআইডির উপপুলিশ পরিদর্শক অলক চন্দ্র হালদার জানান, ২০১৮ সালের মার্চ মাসে প্রধান কার্যালয়সহ সব শাখা বন্ধ করে কর্মকর্তারা উধাও হন। এনজিওটির সব কার্যক্রম তখন থেকে বন্ধ রয়েছে। তবে দেশের অন্যান্য জেলায় এর আরও শাখা ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে টাকা আত্মসাতের প্রকৃত পরিমাণ জানা যাবে। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে মঙ্গলবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে। উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি■:
ছাত্রলীগের ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পুলিশকে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তির অভিযোগে নড়াইলের সোনাদাহ-পাঁচুড়িয়া গ্রামে অভিযুক্ত যুবকের বাড়িতে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে উপজেলা ছাত্রলীগ। নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী এ অবস্থান কর্মসূচী পালিত হয়।
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম এম রাশেদুল হাসান রাশেদ বলেন, সোমবার (১০ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে লন্ডনপ্রবাসী ডলার বিশ্বাসের ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী ও পুলিশ সম্পর্কে কূরুচিপূর্ণ মন্তব্য দেখতে পাই। এ ঘটনায় আমরা অভিযুক্ত ডলারের গ্রামের বাড়ি নড়াইলের লোহাগড়ার মল্লিকপুর ইউনিয়নের সোনাদাহ-পাঁচুড়িয়ায় অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছি। বুধবার (১২ জুন) ডলারের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। ডলার সোনাদাহ-পাঁচুড়িয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর বিশ্বাসের ছেলে। প্রায় ছয় বছর আগে লন্ডনে পাড়ি জমান তিনি। সেখানে (লন্ডন) অবস্থান করে তার ফেসবুক আইডি (গফ উড়ষধৎ ইরংধিং) থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ পুলিশ সদস্যদের নামে বিভিন্ন প্রকার কটূক্তি করেছেন। এছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারকে হটানোর জন্য আর্থিক সহযোগিতাও করতে চেয়েছেন তিনি (ডলার)। তবে মঙ্গলবার রাতে তার আইডি থেকে এসব লেখা মুছে ফেলা হয়েছে। এ ব্যাপারে ছাত্রলীগ নেতা রাশেদ জানান, প্রধানমন্ত্রী ও পুলিশ সম্পর্কে ডলারের কূরুচি ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্যের তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন তিনি।
এদিকে ফেসবুকে এ ধরণের মন্তব্যের প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকেলে অনুষ্ঠিত কর্মসূচীতে নেতৃত্ব দেন ছাত্রলীগ নেতা রাশেদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আশরাফুজ্জামান মুকুল, নড়াইল সদর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নাঈম ভূঁইয়া, নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের হোসেন মানিক, ছাত্রলীগ নেতা শরিফুল ইসলাম, হামিম মুন্সী, কাজী অহিদুজ্জামান, সুজন মীর, ইমদাদুল শেখ, সোহাগ শেখ, শেখ ছগির উদ্দিন সনেট, রোমান রায়হান, পলাশ মাহমুদ, ফকির আখিনুর রহমান প্রমুখ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের সাথে কথা বলেন। লোহাগড়া থানার ওসি মোকাররম হোসেন বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, দেশে থাকাকালীন ডলার বিশ্বাস ছাত্রশিবিরের রাজনীতি করতেন। তবে ডলার তার ফেসবুক আইডিতে ‘পিস ফর বাংলাদেশ’ এর চেয়ারম্যান হিসেবে নিজের পরিচিতি দিয়েছেন। ডলারের ছোট ভাই আশিক বিশ্বাস ঢাকায় লেখাপড়া করেন। বোনদের বিয়ের পর ডলারের পরিবার-পরিজন ঢাকায় বসবাস করছেন। বর্তমানে গ্রামের বাড়িতে (সোনাদাহ-পাঁচুড়িয়া) কেউ থাকেন না।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
এনামুল-সম্রাটসহ ৪ জনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ
ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ততা ও অবৈধ অর্থ লেনদেনের অভিযোগে সংসদবিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন