পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় অবহেলায় অস্তিত্ব সংকটে সূর্য্যমনি বধ্যভূমি
বিজয়ের ৪৮ বছর পরও অরক্ষিত,অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে আছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার সূর্য্যমনি বধ্যভূমি।বধ্যভূমিটি সংরক্ষনের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ কোন উদ্যোগ গ্রহন না করায় দখলযজ্ঞে অস্তিত্ব সংকটে পিরোজপুর জেলার অন্যতম এ বধ্যভূমি।এ পর্যন্ত সীমা নির্ধারণ না করায় একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এবং স্হানীয় ভূমিখেকোদের থাবায় বিলীন হতে বসেছে মঠবাড়িয়ার এ ঐতিহাসিক স্হান।
মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এ বধ্যভূমিতে ৩৭ জন নিরস্ত্র মুক্তিকামী বাঙালিকে হত্যা করা হয়।স্হানীয় মুক্তিযোদ্ধা,শহীদ পরিবারের সদস্যসহ স্বাধীনতার পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর দাবির প্রেক্ষিতে সেখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,১৯৭১ সালের ৬ অক্টোবর মঠবাড়িয়ার উপকন্ঠে পাক হানাদাররা ৩৭ জন স্বাধীনতাকামী নিরস্র বাঙালিকে তথাকথিত ফায়ারিং স্কোয়াডের নামে গুলি করে সূর্য্যমনি বধ্যভূমি সংলগ্ন স্লুইজ গেটের খালে মরদেহ ভাসিয়ে দেয়।তাদের মধ্যে ৭ জন জীবনে বেঁচে যায় আর বাকি ৩০ জন শহীদ হন।খালে ফেলে দেওয়ার স্হানটি বধ্যভূমি ঘোষনা করে একটি ফলকে ৩০ জনের নাম খোদাই করা আছে।অতি সম্প্রতি মঠবাড়িয়া- ডৌয়াতলা সংযোগ সড়ক (ওয়াপদা)সংলগ্ন বধ্যভূমির বিপরীত পার্শ্বে মঠবাড়িয়া পৌরসভায় পানি সরবরাহের জন্য একটি পানির ট্যাঙ্কী ও প্লান্ট স্হাপনের নির্ধারিত জায়গায় সব ধরনের স্হাপনা নির্মান সম্ভব হলেও বধ্যভূমির অস্তিত্ব বিলীন করার জন্য পৌরসভা কতৃপক্ষের নির্দেশে নির্ধারিত সীমানা অতিক্রম করে বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভের মাত্র ১০ ফুটের মধ্যে একটি স্হাপনার নির্মান কাজ শুরু হয়।
বিষয়টি মুক্কিযোদ্ধা এবং স্হানীয় জনগনের নজরে এলে নির্মান কাজের প্রতিবাদ জানিয়ে কাজ বন্ধ রাখার অনুরোধ করা হয়।কিন্তু পৌর কতৃপক্ষ কোনরূপ কর্নপাত না করে নির্মান কাজ অব্যাহত রাখায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী মহোদয় বরাবর অভিযোগ দেওয়া হয়।মন্ত্রী মহোদয় অভিযোগ আমলে নিয়ে ২৮.৪.২০১৯ ইং তারিখে পিরোজপুর জেলা প্রশাসকের নিকট অগ্রগামী করেণ।জেলা প্রশাসক ০৬.৫.২০১৯ ইং তারিখে মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সরেজমিনে তদন্তপূর্বক মতামতসহ প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য অভিযোগটি অগ্রগামী করেণ।
এ ব্যাপারে স্হানীয় ইউ পি সদস্য আবু হানিফ জানান,বধ্যভূমির ভিতরে নির্মান কাজ শুরু করার পূর্বে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া উচিত ছিল।স্মৃতিফলকের কাছেই বোরিং করে ১০০ ফুট লম্বা ৪ টি পিলার বসিয়ে তার উপড় স্হাপনা নির্মান কাজ চলতেছিল।কিন্তু বর্তমানে কাজ বন্ধ রয়েছে।
টিকিকাটা ইউ পি চেয়ারম্যান রিপন জোমাদ্দার জানান,”বধ্যভূমি সংলগ্ন নির্মানাধীন স্হাপনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায়।এখানে কারো অভিযোগ দেওয়ার এখতিয়ার নেই।আর যেখানে স্হাপনা নির্মান করা হচ্ছে সেটি কোন বধ্যভূমি নয়।বধ্যভূমি ওখান থেকে আরো একটু দূরে।”
স্হানীয়রা জানান,”এখনো এ বধ্যভূমিতে দর্শনীয় কিছু করা হয় নি।দখলদারদের কবল থেকে আগে এ বধ্যভূমিকে উদ্ধার করতে হবে এবং তারপর উপযোগী পরিবেশ তৈরি করতে হবে। ”
মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাত হোসেন রাজা মিয়া জানান,”উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মহোদয় সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন।আমরা আশা করি,বধ্যভূমিতে কোন অপশক্তি অবৈধভাবে কোন স্হাপনা নির্মান করতে পারবে না এবং বধ্যভূমিতে মুক্তিযোদ্ধার চেতনা অক্ষুন্ন থাকবে।”
মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুলহক (মজনু) জানান, “বধ্যভূমিতে অবৈধভাবে স্হাপনা নির্মান স্বাধীনতার চেতনা বিরোধী কাজ।বধ্যভূমিতে সরকার কতৃক নির্ধারিত জমির চেয়েও ২থেকে ২.৫০ কাঠা জমি কম আছে।এক বিন্দু রক্ত থাকতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কোন অপশক্তি বধ্যভূমির ১ ইঞ্চি জমিও গায়ের জোড়ে দখল করতে পারবে না।”
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
এনামুল-সম্রাটসহ ৪ জনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ
ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ততা ও অবৈধ অর্থ লেনদেনের অভিযোগে সংসদবিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন