বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা খাতে উন্নয়ন
আত্মতুষ্টি মানুষের সকল কর্মকাণ্ডের এক প্রেরণার উৎস। কোনো কাজ করে যদি মানসিক প্রশান্তি পাওয়া যায় তাহলেই মানুষ ঐ কাজের দিকে ধাবিত হবে। মানুষ সমাজিক ভাবে এ জগৎ সংসারে আগমন করে বিশেষভাবে কোনো না কোনো দ্বায় দ্বায়িত্ব নিয়েই। অর্থাৎ, বলতেই হয় এক ধরনের আদর্শ জীবন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। এ আদর্শের বিচিত্র কর্মকান্ডে সুন্দর জীবনকে যদি মুখরিত করে তোলা যায়, তবে জীবন যাপনের স্বার্থকতা প্রমাণিত হয় বৈকি। পরের জন্য নিজেকেই বিলিয়ে দিতে হবে আদর্শকে প্রতিষ্ঠার জন্য, তবেই হয়তো বা মানুষকে আনন্দ দান করা সম্ভব। এর মাঝে রয়েছে মানসিক প্রশান্তি। আর মহৎ কার্যাবলিই মানুষকে দিতে পারে সুখের সন্ধান। সুতরাং সুখের সন্ধানেই প্রবেশের ১ম দিক হচ্ছে শরীর ও মন। শরীর ও মনের সংমিশ্রণেই গড়া এই মানুষ। স্বাস্থ্য ভালো থাকলেই মানুষ সকল কাজে উৎসাহ পায়, তেমনি মনের প্রশান্তির জন্যেও দরকার আত্মতুষ্টি। আত্মতুষ্টি দেয় কর্মপ্রেরণা। তাই সন্তুষ্টির সাথে যেকোনো কাজ করলে তার ফলাফল সুদূরপ্রসারী হয়ে থাকে। জনতার জনপ্রিয় জননেত্রী ‘শেখ হাসিনা’ আজকের বাংলাদেশকে আত্ম বিশ্বাস কিংবা আত্মতুষ্টির সহিত পরিচালনা করে ফলাফল দাঁড় করাতে পেরেছে একটি উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে।
তিনি সুস্বাস্থ্যের ও সাফল্যের মানুষ, তাই তো দেশের মানুষের জন্যে সু-চিকিৎসার বৃহৎ ভাবনা। আবারও যদি ক্ষমতায় আসে, বাংলাদেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে একটি করেই মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করবে বলেই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে কোনো মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কখনো ছিল না, তা নির্মাণ করার পরিকল্পনা নিই। দেশের মানুষ সুলভে সুচিকিৎসা পাবে, তাদের সন্তান সেখানে পড়া শোনা করে খুব ভালো ডাক্তার হবে। জাতির পিতা প্রতিটি উপজেলায় দশ বেডের হাসপাতাল করেছিল, মানুষ সেখানেই স্বাস্থ্যসেবা যুগোপযোগী মানের পাশাপাশি ডাক্তার তৈরি বা মেডিকেল ‘ছাত্র/ছাত্রীরা’ চিকিৎসা পদ্ধতির বিভিন্ন ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেই যেন তাদের মননশীলতাকে বৃদ্ধির লক্ষ্যেই এমন ধরনের হাসপাতাল গুলো নির্মিত ছিল। কিন্তু আজকে আর নেই ”জাতির পিতা”, তাঁর স্বপ্ন ‘শেখ হাসিনা’র’ চিন্তা চেতনায় রেখেছে এবং তা বাস্তবেই রূপ নিচ্ছে। তাই তো জননেত্রী শেখ হাসিনা, জাতির পিতার সেই স্বপ্ন পুরনে ইতিমধ্যেই রাজশাহী এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় শুরু করেছে। তা ছাড়া, আরও একটি সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তুাব পাশও হয় পার্লামেন্টে । আরও বাঁকি “পাঁচটি” বিভাগীও শহরে ‘মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়’ হাতে নিয়েছে। “আওয়ামী লীগ সরকার” আবারও ক্ষমতায় এলে সেই গুলোর কাজ শুরু করবে। এখানে স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশিও ছাত্র ছাত্রীদের সুশিক্ষার প্লাটফর্ম সৃষ্টি হবে। নওগা, নীলফামারি, মাগুরায় “মেডিকেল কলেজ” করাও হচ্ছে। চাঁদপুরেও একটি “মেডিকেল কলেজ” করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জানা যায় যে, এই খানে কর্মরত নার্সদের দীর্ঘদিনের দাবি অনুযায়ী তাদেরও সরকারী ২য় শ্রেণীর মর্যাদা দেয়া হয়েছে। সুশিক্ষা ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে ‘বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়’ হবে, তাকেই ‘আধুনিক’ সেবা’র সঙ্গেই উন্নত শিক্ষার এক সেন্টার অব এক্সসিলেন্স তৈরি হবে। সুতরাং এ দেশে সু-চিকিৎসার সহিত শিক্ষা, মেধা বৃত্তি’র সহিত সু-চিকিৎসার প্রতিষ্ঠান নির্মাণের পাশা পাশিও যেন সেখানে ডাক্তারদের গবেষণায় সমগ্র বিশ্ব থেকে বহু সহায়তা পাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু’কে হত্যার পরে দেশে চিকিৎসা খাতে উন্নয়ন কিংবা গবেষণায় কোনো ধরনের অভূতপূর্ব বরাদ্দ ছিল না। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে ১ম থেকে বরাদ্দ দেয়ার প্রক্রিয়া চালু করে। সুতরাং উল্লেখ করার মতোই বহু উদহারণ রয়েছে। চিকিৎসার গুণ গত মানোন্নয়নের লক্ষণীয় দৃষ্টান্ত হলো, শিশুদের টিকা দান কর্ম সূচির সাফল্য। এক্ষেত্রেই বাংলাদেশ বিশ্বে অন্যতম আদর্শ দেশ হিসেবে পরিনত হয়েছে। এই দেশের টিকা দান কর্ম সূচিতে মুলত ৬ টি রোগের টিকা প্রদান করছে। যেমন হুপিং কাশি, ধনুষ্টংকার, ডিপথেরিয়া, হাম ও পোলিও মতো রোগের চিকিৎসাতে। এ চিকিৎসাতে জাতিসংঘ কর্তৃক পুরস্কৃত হয়েছে বাংলাদেশ। এমন দেশকে এখন পোলিও মুক্ত রাষ্ট্র ঘোষণা করাও হয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের অর্জন অনেক। এ অর্জন গুলোর বিভিন্ন দিক নিয়ে বিশেষজ্ঞদের আলোচনা থেকে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় শেষ করার মতো এমন এই স্বাস্থ্য এবং চিকিৎাসা’র খাত নয়। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সমস্যা অনেক ব্যাপক। তার সামাজিক কিংবা অর্থনৈতিক প্রভাব সুদূরপ্রসারী। বিদ্যমান স্বাস্থ্যখাত মোকাবিলা করেই জনস্বাস্থ্যে’র উন্নয়ন সাধনে স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় কাজ করেছে এবং তারা ইতিমধ্যে স্বাস্থ্যখাতে যথেষ্ট উন্নয়নে খ্যাতিও অর্জন করেছে। এমন অগ্রগতি ও অর্জনের মধ্যে ডায়রিয়া, ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর, ডিপথেরিয়া, ধনুষ্টংকার, হাম, কুষ্ঠ, যক্ষ্মা, হুপিং কাশি, পোলিও, মাইলাইটিস রোগ এর বিস্তার এখন অনেক নিয়ন্ত্রণে।
আওয়ামী লীগ সরকার ২০০১ সালে বাংলাদেশকে পোলিও মুক্ত করেছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও যা সত্য তা হলো, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে মৌলবাদীদের বাধা দেয়ার কারণেই এ দেশ আবার পিছিয়ে যায়। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অর্জনেও বাধা হয়েছিল। এখন ‘দুর্ভিক্ষ’ কিংবা ‘মঙ্গা’ এইদেশে নেই। সে কারণে মানুষ আজ অনেক সুস্থতার মধ্যেই অবস্থান করছে। মানুষের সচ্ছলতাও বেড়েছে। তাই মানুষের গড়পড়তা ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণও যেন বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে মানুষের ”কর্মক্ষমতা” বেড়েছে। পুষ্টি ও স্বাস্থ্যের উন্নতির ফলে গড় আয়ু বেড়ে ৭১.২ বছর হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের এমনই বহু সাফল্য “জাতি সংঘ ঘোষিত” সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারিত সময়ের দু’বছর আগে বাংলাদেশ তা অর্জন করে ফেলেছে। সুতরাং, এ আওয়ামী লীগের বলিষ্ঠ জনপ্রিয় নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী “এমডিজি এ্যাওয়ার্ড ২০১০”, আবার তিনি স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ‘তথ্য প্রযুক্তি’র’ সফল প্রয়োগের জন্যে পায় ‘সাউথ-সাউথ এ্যাওয়ার্ড ২০১১’ সহ বেশকিছু আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পুরস্কার।
মহান স্বাধীনতার লক্ষ্যে গড়ে তোলা জাতিসত্তা তথা জাতীয় ঐক্য ও মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন, এ দেশের মানুষের চেতনায় যে কোনো কিছু অর্জনের ক্ষেত্রেই একধরনের অদম্য সাহস সঞ্চারও করেছে। সুতরাং, জানা যায়, এশিয়া, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার অনেক দেশে এখনো এই অদম্য সাহসের আলোকে টিকা দান কর্মসূচিতেই বাংলাদেশের মতো সফলতা পায়নি। এই সরকারের উল্লেখযোগ্য বিষয় তা হলো বাংলাদেশে এখন আর পোলিও রোগ নেই। অতএব বলা দরকার তাহলো, গ্রামীণ জনজীবনে “চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য” সচেতনতা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এ সরকার ভ্রাম্যমান মেলাকে কার্যকর করে। এ ধরনের মেলার আয়োজনে থাকে বিষয়ভিক্তিক বহু চলচ্চিত্র, যাত্রা, কৌতুক, কথকতা কিংবা ক্রীড়া সহ বিভিন্ন বিষয়ের মাধ্যমেই স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেশ। এধরনের অনুষ্ঠান উপস্থাপনের মাধ্যমে স্কুল, কলেজ ও বিশ্বববিদ্যালয় এর ছাত্রছাত্রীরা গ্রামহিতকর স্বাস্থ্য রক্ষার কাজেও স্বেচ্ছাকর্মীর ভূমিকা রাখতে পারে, এমন অভিমতেই জননেত্রী শেখ হাসিনা’র বিশ্বস এবং আস্থা রয়েছে।প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের হাসপাতাল গুলো থেকে ভিডিও কনফারেন্স করেই অভিজ্ঞ ডাক্তার বা বিশেষজ্ঞদের মতামত নেয়ার ব্যবস্থা করেছে। স্বাস্থ্য বাতায়নের এ প্রকল্পে মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই যেন স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তির সুবিধা তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে গ্রামের রোগীরাও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতামত পাওয়ার সুযোগ পেয়েছে। সুতরাং এই বাংলাদেশের রোগীরা এখন উন্নত সু-চিকিৎসার জন্যে বিদেশে কম যাচ্ছে এবং ‘জটিল ও দুরারোগ্য’ রোগের চিকিৎসা দেশেই গ্রহণ করতে শুরু করেছে এবং তারা সু-চিকিৎসাতে সফলতাও পাচ্ছে। অনেক অটিস্টিক শিশুদেরকেই তিনি অবহেলার জায়গা থেকে আদর এবং বিশেষ মনোযোগের জায়গায় এনেই ভবিষ্যতের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার মানবিক ব্রত নিয়েছে। এভাবে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে সম্মানিত হচ্ছে।
ইতিহাসেই বলে আওয়ামীলীগের সম্মেলনের একটি কর্মসূচী ঠিক করে বলেন, এমন দল ক্ষমতায় গেলে একটি চমৎকার অর্থনীতি চালু হবে। যেখানে সকল মানুষ, বিশেষত গরিব অসুস্থ মানুষের খাদ্য নিশ্চিত, শিক্ষা, বাসস্থান এবং চিকিৎসা সহ বাঁচার পরিবেশ পাবে। তারা সে কথাটি রেখেছে। আজ তারা সফল, স্বাস্থ্যের নিশ্চয়তা দিয়েছে। সুতরাং বলতেই হয় যে, “আওয়ামী লীগ সরকার” কথা দিয়েই কথা রাখতে পেরেছে। স্বাস্থ্যখাতকে যুগোপযোগী করতে প্রণয়ন করেছে জাতীয় স্বাস্থ্য নীতিমালা-২০১১। জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সুগভীর আলোচনাতে উঠে আসে যে গ্রামীণ জনসাধারণের বাড়ী বাড়ী স্বাস্থ্য সেবা পৌছে দেয়ার জন্য স্বাধীন বাংলাদেশে প্রতি ছয় হাজার জনগণের জন্য ১ একজন করে ২,০৮,৮১ জন স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগ করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে তদারকীর করতে ১৩৯৮ জন স্বাস্থ্য পরিদর্শকের সহিত আরও ৪,২০২ জন সহকারী স্বাস্থ্যপরিদর্শক নিয়োগ করেছে। তারা বাড়ী বাড়ী ঘুরে জন্ম কিংবা মৃত্যু নিবন্ধন, ঝুঁকি পূর্ণ রোগী সনাক্ত করণ, সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ, মা ও নবজাতকের সেবা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষার পাশাপাশি এ দেশের ‘দরিদ্র’ জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্য সচেতন করেছে।৪ দশকের অধিক সময় ধরেই মরণব্যাধি গুটিবসন্ত, ম্যালেরিয়ার মহামারি ডাইরিয়া নিয়ন্ত্রণে গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ১৯৭৯ সালে দেশে মা ও শিশুর মরণ ব্যাধি সহ অসংখ্য রোগ বানাই থেকে রক্ষার জন্যেই যেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতায়
সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচী (ইপিআই) চালু করা হয়েছে। তাই এমন কর্মটি ‘স্বাস্থ্য’ সহকারীর উপরেই বাস্তবায়নের গুরুদায়িত্ব প্রদান করেছে। বর্তমানের এক জরিপে “ইপিআই” কর্মসূচীর সাফল্য আসে ৮২ শতাংশ। সম্প্রতি এশিয়ায় মধ্যে মোট ১২ টি দেশেই জরিপ চালিয়ে ইপিআই কর্মসূচীতে এ দেশই প্রথম স্থান লাভ করে। এমন ধরণের চিকিৎসার উন্নয়নেই এক সময় বাংলাদেশের পরিচয় দিতে দেশের সকল জনগণ গর্ববোধ করবে। বাংলাদেশের এ স্বাস্থ্য খাত অবিশ্বাস্য ধরনের বৈপ্লবিক পরিবর্তন, তা অবিশ্বাস্য হলেও ইতিবাচক। শুধুই ইতিবাচক নয়, ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ এখন উন্নয়ন দেশগুলোর জন্যে বৈশ্বিক মডেল। সুতরাং প্রাসঙ্গিকভাবেই বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের বৈপ্লবিক উন্নতি গুলো এখন সমগ্র পৃথিবীর স্বাস্থ্য বিজ্ঞানী, স্বাস্থ্যবিষয়ক নীতি নির্ধারক ও স্বাস্থ্য বিষয়ক দাতা সংস্থার কাছেই যেন রীতিমতো একটি মীরাকেল। ‘হাভার্ড’, ‘ক্যামব্রিজ’, ‘অক্সফোর্ড’, ‘লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন এন্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন’, ‘জন হফকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়’, ও ‘ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সিঙ্গাপুর’ সহ বর্তমান পৃথিবীর সকল নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের জাদুকরী উন্নয়নের মডেল গুলো পড়ানো হচ্ছে। উল্লেখযোগ্য, ‘লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন এন্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন’, ‘জন হফকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়’, ‘আইসিডিডিআরবি’, ‘হাভার্ড স্কুল অফ পাবলিক হেলথ’ এবং ‘ব্র্যাক’ এর সঙ্গেই বাংলাদেশেরও অনেক বড় বড় আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা পরিষদ তা পরিচালনা করেছে এবং করছে। শহরের নিম্ন আয়ের মানুষ বা মধ্য বিত্তদের জন্য নতুন হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া উন্নত বিশ্বের মতো নতুন বিশেষায়িত হাসপাতালের ধারাবাহিকতায় নতুন হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছেও এবং আগামীতে আরও হবে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এ – ২৫ শয্যার একটিমাত্র বার্ন ইউনিট ছিল এখন সেখানে আলাদা ভবনে উন্নতি করে একে সম্প্রসারিত এক ‘আধুনিক বার্ন ইউনিট’ করা হয়েছে। এখন আলাদা এক ধরন ইনস্টিটিউট করেই বরাদ্দ করা এমন বড় জায়গাতে বিশাল আকারের- “বার্ন হাসপাতাল” নির্মাণ হয়েছে।এছাড়াও প্রতিটি সরকারী ও বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কিংবা জেলা হাসপাতালেও এই ধরনের সহায়কতামূলক “বার্ন ইউনিট” খোলা হচ্ছে। জাতি-ধর্ম-বর্ণ কিংবা গোত্র নির্বিশেষে বাংলাদেশের সব মানুষের শারীরিক, মানসিক, দুর্ঘটনায় অসুস্থতা নিয়েই এই আওয়ামীলীগ স্বাস্থ্যখাতে কাজ করেছে।
আজকের তরুণ প্রজন্মকে সামনে রেখে ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ গ্রহণ করেছে। তাই চিকিৎসা ক্ষেত্রকেই শুধু সু-বিস্তৃত নয়, আবার সমগ্র বাংলাদেশকে শুধু ‘চিকিৎসক’ দ্বারা পরিচালিত নয়, বহু ধরনের হাসপাতাল নির্মাণ করেও নয়, উন্নয়নের লক্ষ্যে গুণগত মানসম্পন্ন বিভিন্ন প্রকারের দেশী বা বিদেশী ওষুধের দিকে নজরও দিয়েছে। এই জন্যেই তিনি ওষুধ নিয়ন্ত্রণের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে। ক্ষতিকর এবং অপ্রয়োজনীয় ওষুধকে নিয়ন্ত্রণ করা সহ বেশিদামী ওষুধের আমদানি বন্ধ এবং নিষিদ্ধও করেছে। তাছাড়াও এ ওষুধের যৌক্তিক ও নিরাপদে ব্যবহার নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নিয়েছে। ক্ষতিকর ওষুধ বাতিল করে সেইসঙ্গে তিনি ওষুধের উৎপাদন বা মান নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ওষুধ প্রশাসন পরিদফতর গঠন করেছে। বহুজাতিক অথবা দরকার নেই এমন ধরণের অপ্রয়োজনীয় ওষুধ গুলোর কোম্পানি যেন বাতিল হয় তার যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে। এই দেশের জনসাধারণ কম দামে ওষুধ খেতে পারে, যা আজও অব্যাহত রয়েছে। এই ভাবেই তিনি পূর্ণাঙ্গ না হলেও ওষুধ নিয়ন্ত্রণের নীতিমালা তৈরি করেছে, যাকে এই বাংলাদেশের প্রথম ওষুধনীতি বলা যেতে পারে।
বাংলাদেশের তৃণমূল পর্যায়ের হতদরিদ্র মানুষদেরই স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে গড়ে তোলেছে মোট- ১২ হাজার ৭৭৯ টি কমিউনিটি ক্লিনিক। তাছাড়া ৩১২টি উপজেলা হাসপাতাল’কেও উন্নীত করেই ৫০ শয্যায় নিয়ে এসেছে। মেডিকেল কলেজ, জেলা হাসপতাল এ ২,০০০ শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে। জননেত্রী ‘শেখ হাসিনা’ একটি পরিসংখ্যান উল্লেখ করেই যা বলেন, তাহলো:- এমন বাংলাদেশের পরিবার পরিকল্পনা বা জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বিশ্বের নিকট অনেক গুরুত্ব পূর্ণ উদাহরণ। যদি ১৯৮০ সালের দিকে এ বাংলাদেশের সন্তান জন্মদানের সক্ষমতায় দৃষ্টিপাত করা হয় তবে প্রতিটি নারী গড়ে সাতজন সন্তান জন্মদান করেছে। আর ২০১৫ সালের এক গবেষণার তথ্যানুযায়ী সেই সংখ্যা কমিয়ে এনে দুই জনে দাঁড় করেছে। সুতরাং, বাংলাদেশে জন্ম নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা অতুলনীয়। মাতৃ ও শিশুর মৃত্যুহার, জন্মহার হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। তাই তো, পারিবারিক সেবাকে মৌলিক হিসেবে দেখেছে এবং সময়ের চাহিদা মনে করেছে। এই সেবাটি জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার উদ্দেশ্যকে সামনে নিয়ে এসে তিনি নির্মাণ করেছে নতুন নতুন বারটির মতো মেডিকেল কলেজ, আর সেখানেই নিয়োগ দিয়েছে ৪৭ হাজারেরও বেশি জনশক্তি। “মন্ত্রণালয়” কিংবা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র এ প্রকল্পটি আরো অনেক বেশি করেই উন্নয়নে অগ্রসর হবে। আগামীতে যদি “নৌকা প্রতীক” বা ‘আওয়ামী লীগ’ ক্ষমতায় আসে।স্বাধীনতার পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন দেশটির হাল ধরলেন তখন সারাদেশে চিকিৎসা ব্যবস্থা ছিল বেহাল। তিনিই গরিব মানুষের জন্যে স্বাস্থ্য সেবা সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যেই এই স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে জাতীয়করণ করে। সুতরাং আজকে তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী ‘শেখ হাসিনা’ বিভিন্ন শ্রেণীর গরিবদের জনবান্ধব মনে করেই, জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের লক্ষ্য এবং আদর্শকে মানুষ মুখী করার উদ্যোগ নিয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে কাজের ফলেই বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত তৃতীয় বিশ্বের রোল মডেলে রূপান্তরিত হয়েছে। এই দেশের ‘স্বাস্থ্য’ খাতে অনেক ইতিবাচক ফল পাওয়া গিয়েছে। সম্প্রসারিত সুপেয় পানি ও স্যানিটেশনের সফলতায় বাংলাদেশ বিশ্বের উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। কালা জ্বরে মৃত্যুর হার এখন শূন্যতেই রয়েছে। তাছাড়া ‘যক্ষ্মা’ রোগের চিকিৎসায় সফলতার হার এখন ৯৪%। এইচআইভি’র বিস্তারও থামানো গেছে। ২০১১ সালে বার্ড ফ্লু প্রতিহত করাও হয়েছিল বলে জানা যায়। ইনফ্লুয়েঞ্জা, হেপাটাইটিস-বি, মামস্ সহ রুবেলার টিকা এখন “সরকারী টিকা” কর্মসূচীতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। পুষ্টিহীনতা দূরীকরণে ভিটামিন এ ক্যাপসুল বিতরণের প্রকল্পেও সফলতা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।
নিরাপদ খাদ্য আইন গঠিত হয়েছে, যাতে এইদেশের মানুষ শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকতে পারে। তাই খাদ্যে ভেজাল মেশানোর যে অপতৎপরতা তাকে নিয়ন্ত্রণে যুগোপযোগী করে ‘বিশুদ্ধ খাদ্য আইন ২০১৩’ জারি হয়েছে। তাছাড়াও ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৫ জারি কিংবা ফরমালিনের আমদানি কঠোর ভাবেই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। ফলে বাজারের সবজি, ফল, মাছ ও দুধে ফরমালিন মেশানোর প্রবণতা কমেছে। ভোক্তা অধিকার রক্ষা অধিদফতর স্থাপন করেছে। অতএব বঙ্গবন্ধুকন্যা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য সেক্টরে এই উল্লিখিত কাজ গুলো ভবিষ্যত তরুণদের নিকটেই উদাহরণ স্বরূপ এক ইতিহাস হয়ে রবে।
লেখক:
নজরুল ইসলাম তোফা, টিভি ও মঞ্চ অভিনেতা, চিত্রশিল্পী, সাংবাদিক, কলামিষ্ট এবং প্রভাষক।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন
এবার অভিনয়ে পরিচালক শিমুল সরকার
নজরুল ইসলাম তোফা:: পরিচালক শিমুল সরকার। সময়ের তরুণ জনপ্রিয় একজনবিস্তারিত পড়ুন
আজব এক ব্যক্তি কাঁচা মাছ, মাংস ও লতাপাতা খেয়ে স্বাভাবিক চলে
নজরুল ইসলাম তোফা:: জীবনে চলার পথে বহু রকম মানুষের সাথেবিস্তারিত পড়ুন