পাল্টে যাচ্ছে প্রাথমিকে নিয়োগের বিধিমালা
স্নাতক পাস ছাড়া শিক্ষক হতে পারবেন না নারীরাও
পাল্টে যাচ্ছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা। প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়স, পদোন্নতিসহ পাঁচটি ক্ষেত্রে আনা হচ্ছে পরিবর্তন। সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আসছে নারীদের শিক্ষাগত যোগ্যতায়। নতুন নিয়মের অধীনে প্রাথমিকে শিক্ষক পদে আবেদনে নারীদেরও কমপক্ষে স্নাতক পাস হতে হবে। উল্লেখ্য বর্তমান নিয়মে এইচএসসি পাসেই শিক্ষক পদে আবেদন করতে পারেন নারীরা।ইতোমধ্যে সংশোধিত বিধিমালার খসড়া প্রণয়ন করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। যা আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর সচিব কমিটির সভায় অনুমোদনের জন্য তোলা হবে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সংশোধিত বিধিমালায় পাঁচটি পরিবর্তন আসছে। এর মধ্যে- সহকারি শিক্ষক পদে পুরুষ ও নারী উভয়ের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে ২০১৩ সালের নিয়োগ বিধিমালায় পুরুষ ও নারীর জন্য পৃথক শিক্ষাগত যোগ্যতা রয়েছে। সহকারি শিক্ষক পদে পুরুষের জন্য স্নাতক আর নারীদের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক পাস।
সরাসরি প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এত দিন স্নাতক পাস হলেই আবেদন করা যেত। নতুন বিধিমালার খসড়ায় এই শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতকোত্তর প্রস্তাব করা হয়েছে। এত দিন প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ছিল ২৫-৩৫ বছর। কিন্তু এখন এই পদটি দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত হওয়ায় সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) নীতিমালার সঙ্গে সংগতি রেখে বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে ২১-৩০ বছর।তথ্যমতে, আগে সহকারি শিক্ষকদের মধ্য থেকে ৬৫ শতাংশ পদোন্নতির মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক হওয়ার বিধান ছিলো। সেটি পরিবর্তন করে সরাসরি পদোন্নতির ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ, বাকি ২০ শতাংশ পদোন্নতি পিএসসি’র মাধ্যমে দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বর্তমানে যেকোনো বিষয়ে পাস করা প্রার্থীর সমান সুযোগ রয়েছে। কিন্তু এতে মানবিক বিভাগ থেকে আসা শিক্ষকরা গণিত ও বিজ্ঞানের মতো বিষয়গুলো সহজে আত্মস্থ করতে পারেন না। এ কারণে নতুন বিধিমালায় সহকারি শিক্ষক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে মোট পদের শতকরা ২০ ভাগ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের মধ্য থেকে নেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া ক্লাস্টার বা উপজেলাভিত্তিক আর্ট ও সংগীত শিক্ষক রাখার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
নতুন বিধিমালা কার্যকর হলে শিক্ষক নিয়োগ আগের মতোই উপজেলা বা থানাভিত্তিক হবে। তবে কেন্দ্রীয়ভাবে গঠিত সহকারি শিক্ষক নির্বাচন কমিটির সুপারিশ ছাড়া কোনো ব্যক্তিকে সহকারি শিক্ষক পদে সরাসরি নিয়োগ দেয়া যাবে না। বাংলাদেশের স্থায়ী বাসিন্দা না হলে কাউকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়া যাবে না। এমন ব্যক্তিকে বিবাহ করেছেন অথবা বিবাহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যিনি বাংলাদেশের নাগরিক নন, এমন ব্যক্তিকেও শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া যাবে না।
সংশোধিত বিধিমালার খসড়ায় আরো বলা হয়েছে, ১৩তম থেকে ১৬তম বেতন গ্রেডের কোনো পদে থাকা শিক্ষককে দশম থেকে দ্বাদশ বেতন গ্রেডের কোনো পদে পদোন্নতির সুপারিশ করা যাবে। আর দশম থেকে দ্বাদশ গ্রেডে থাকা শিক্ষক নবম বা তদূর্ধ্ব গ্রেডের কোনো পদে পদোন্নতির সুপারিশ পেতে পারেন। তবে, উভয় ক্ষেত্রেই পিএসসির সুপারিশ প্রয়োজন হবে। ২০১৩ সালের নিয়োগ বিধিমালায় এসব শর্ত নেই। বর্তমানে কোনো ব্যক্তির শিক্ষক পদে যোগদান করার তিন বছরের মধ্যে প্রশিক্ষণ বা উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও নতুন বিধিতে তা থাকছে না।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. গিয়াস আহমেদ দাবি করেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মানসম্মত শিক্ষক নিয়োগ দিতেই বিধিমালা সংশোধন আনা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর এটি সচিব কমিটিতে তোলা হবে। সেখানে অনুমোদন দেয়া হলে মন্ত্রিপরিষদের সভায় পাঠানো হবে। সেখান থেকে অনুমোদন দেয়ার পর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় নিয়োগ বিধিমালা সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করে সেটি বাস্তবায়ন করা হবে। প্রসঙ্গত, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক নিয়োগের জন্য সদ্য প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিটি পুরনো বিধিমালার আওতাভুক্ত।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
এনামুল-সম্রাটসহ ৪ জনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ
ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ততা ও অবৈধ অর্থ লেনদেনের অভিযোগে সংসদবিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন