আগর গাছ নিয়ে কোটি টাকার স্বপ্ন
আগর মাঝারি ধরনের সবুজ বৃক্ষ। সুগন্ধি উদ্ভিদ ও ভেষজ গাছ। গাছের নির্যাস থেকে আগর তেল উৎপন্ন হয়। যা সুগন্ধি বা আতর হিসেবে ব্যবহার করা হয়। প্রাচীনকাল থেকে আগরের সুগন্ধির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। সেই আগর গাছ নিয়ে ফুলবাড়িয়ায় প্রায় অর্ধশতাধিক উপকারভোগী কৃষক কোটি কোটি টাকার স্বপ্ন দেখছেন।
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার সন্তোষপুর বিটে ২৮৬৩.১৪ একর এলাকাজুড়ে প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম বনায়ন রয়েছে। বনায়নে ছিল গজারি, ইউকেলিপটাস, আকাশমনি, চাম্বলসহ নানা প্রজাতির মহামূল্যবান গাছ। এক সময় বন বিভাগের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার সহায়তায় বনদস্যুরা নির্বিচারে গাছগুলো
কেটে নিয়ে প্রাকৃতিক বনায়ন ধ্বংস করে দেয়। পরবর্তীকালে সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে ফিরে আসে বনের সবুজ প্রকৃতি। জানা গেছে, ২০০৭-০৮ অর্থবছরে বন বিভাগ শেরপুর, জামালপুর ও টাঙ্গাইলের কিছু এলাকায় এবং সন্তোষপুর বনবিটে পরীক্ষামূলক ২৫ একর (১০ হেক্টর) আগর গাছের চারা লাগানো হয়। এ গাছের চারাগুলো দ্রুত বড় হয়ে ওঠে। পরবর্তীকালে তা বৃদ্ধি করে আরও ৭৫ একর (৩০ হেক্টর) জমিতে আগর গাছের চারা রোপণ করে বাগান সম্প্রসারণ করা হয়। স্থানীয় শতাধিক উপকারভোগী কৃষককে বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে সম্মিলিতভাবে এক একর (১৬ কাঠা) করে আগর গাছের বাগান ভাগ করে দেওয়া হয়। প্রতি একরে সাড়ে ৫ শতাধিক আগর গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে বলে বিট অফিস সূত্রে জানা গেছে। সন্তোষপুর বন বিট কর্মকর্তা, কর্মচারীদের তদারকি ও উপকারভোগীদের সঠিক পরিচর্যায় আগর গাছের চারাগুলো বেড়ে উঠে পূর্ণাঙ্গ গাছে রূপান্তরিত হচ্ছে। সুগন্ধিযুক্ত পূর্ণাঙ্গ একটি আগর গাছের মূল্য প্রায় অর্ধলাখ টাকা হবে বলে জানান উপকারভোগীরা। একটি পূর্ণাঙ্গ আগর গাছের জীবনকাল ১২ থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে। ১০ থেকে ১২ বছরের মধ্যে গাছগুলোতে পরিপূর্ণতা চলে আসে। পরিপূর্ণ আগর গাছের ভেতরে জিনারি বা তারকাটা ঠুকে দেওয়া হবে। এরপর ২ বছর পর আগর গাছগুলো কাটা হবে। এ সময় আগর বিশেষজ্ঞ দল এসে ক্রমান্বয়ে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আগরের রস বের করবেন। এছাড়াও আগর বিশেষজ্ঞ দল গাছ প্রসেসিং করে পূর্ণাঙ্গ আগর গাছ মেশিনের সাহায্যে কেটে টুকরো টুকরো করে নিয়ে যাবে। টুকরো আগর গাছের কাঠের নির্যাস থেকে তৈরি হবে মহা মূল্যবান সুগন্ধি।
কৃষক হাফিজ উদ্দিন জানান, বনবিভাগের লোকজন উৎসাহিত করেছিল আগর গাছের বাগান করার, প্রায় ১০ বছর হয়েছে বাগান করেছেন। দুই বছরের মধ্যে হয়তো আগর গাছগুলো কাটা যাবে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে প্রায় কোটি টাকার আগর গাছ বিক্রি করতে পারবেন তার প্লট (বনবিভাগের বরাদ্দকৃত জমি) থেকে।
সন্তোষপুর বনবিট কর্মকর্তা মো. আশরাফুল খান জানান, পূর্ণাঙ্গ আগর গাছ এতো মূল্যবান যা এক সময় অনেকেই এ গাছ লাগানোর জন্য অনুপ্রাণিত হবেন। সন্তোষপুর বিটে আগর গাছের শতাধিক উপকারভোগী রয়েছেন। যেসব উপকারভোগী আগরগাছগুলো দেখেশুনে পরিচর্যা করেছেন তাদের শ্রম সফল হওয়ার পথে, অনেকেই কোটিপতি হয়ে উঠবেন। সেই দিন আর বেশি দূরে নয়।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
এনামুল-সম্রাটসহ ৪ জনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ
ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ততা ও অবৈধ অর্থ লেনদেনের অভিযোগে সংসদবিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন