কেশবপুরে প্রতিবন্ধীর টাকা আত্মসাৎ করে একটি পরিবার আত্মগোপনে
যশোরের কেশবপুরে পল্লীতে একটি পরিবারের বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে এক প্রতিবন্ধীসহ একাধিক ব্যক্তির নিকট থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আত্মগোপনে থাকার অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামে। এব্যাপারে ভুক্তভোগীরা কেশবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
থানায় অভিযোগ ও ভুক্তভোগীদের সুত্রে জানা গেছে- উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামের বাপ্পী চৌধুরী ও তার পিতা দিলিপ চৌধুরী প¦াশ্ববর্তী ত্রিমোহিনী বাজারে কাচা মালের ব্যবসা করে আসছেন। ব্যবসা করার সুবাদে তারা কলারোয়া উপজেলার দিয়াড়া গ্রামের কাশেম আলীর ছেলে প্রতিবন্ধী আব্দুর রাজ্জাকের ফ্লেক্সিলাড ও বিকাশের দোকান থেকে লেনদেন করতেন। লেনদেনের সুত্র ধরে তারা কৌশলে আব্দুর রাজ্জাকের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে একাধিক নাম্বারে প্রায় লক্ষধিক টাকা পাঠিয়ে দেন। দোকান মালিক টাকা চাইলে বাপ্পী চৌধূরী ও তার পিতা দিলিপ চৌধূরী তাদের দোকানের হালখাতা শেষে ওই টাকা ফেরত দিবে বলে ঘুরাতে থাকে। দীর্ঘদিন পার হলেও টাকা ফেরত না পাওয়ায় ওই ব্যবসায়ী তাদেরকে চাপ দিতে থাকেন। এঘটনার কিছুদিন পরে ২১ মার্চ গভীর রাতে বাপ্পী চৌধূরী ও দিলিপ চৌধূরীসহ তার পরিবারের সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। প্রতিবন্ধী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমি একজন প্রতিবন্ধী মানুষ। আমার একটি হাত অচল। ঠিক মত কাজ করতে পারিনা। যে কারনে এলাকার মানুষেরা টাকা দিয়ে সহযোগিতা করে আমাকে ছোট একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তৈরি করে দেন। পরবর্তীতে আমি বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন নিয়ে প্রায় একযুগ ধওে এই ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। বাপ্পী চৌধূরী ও তার পিতা দিলিপ চৌধুরী প্রায়ই আমার দোকান থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করতেন। তারা বিভিন্ন সময়ে বিকাশের মাধ্যমে টাকা অন্যত্র পাঠিয়ে ওই টাকা বাকি রাখতেন। একপর্যায়ে প্রায় ৯০ হাজার টাকা বাকি বেধে যায়। এসময় টাকা চাইলে তাদের দোকানের হালখাতা শেষে সকল টাকা ফেরত দিবে বলে জানান। পরবর্তীতে তারা আমার টাকা না দিয়ে পরিবারসহ আত্মগোপনে রয়েছে।
বর্তমানে আমার পথে বসার উপক্রম হয়েছে। এনজিও থেকে টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে। ওই টাকা না পাইলে আত্মহত্যা ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই আমার। সাতবাড়িয়া গ্রামের অন্য একজন ভুক্তভোগী রাজিব চৌধুরী বলেন, এক গ্রামে বাড়ি থাকার সুবাদে বাপ্পী চৌধুরী ও তার পিতা দিলিপ চৌধুরী আমার কাছ থেকে তাদের ব্যবসায়ের সমস্যার কথা বলে ৫০ হাজার টাকা হাওলাত হিসেবে গ্রহন করেন। ওই টাকা ফেরৎ না দিয়ে তারা পরিবার সহ বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে। মোবাইলে তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে অকাথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও বিভিন্ন প্রকার হুমকি দিচ্ছে। ব্যবসাকে তারা পুজি হিসেবে ব্যবহার করে সাতবাড়িয়া গ্রামের একাধিক ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষদের কাছে কৌশলে কান্নার অভিনয় করে টাকা হাওলাত নিয়ে চম্পট দিয়েছে। তাদের কাছে টাকা হাওলাত দিয়ে ওই গ্রামের অনেকেই এখন পথের ফকির হয়ে পড়েছে। কার্তিক আঢ্য নামে এক ব্যক্তি একাধিক পাওনাদারকে অর্ধেট টাকা ফেরৎ দেয়া হবে মর্মে আশ্বাস দিচ্ছেন। তার কথায় রাজি না হওয়ায় ১১ এপ্রিল রাতে বাড়ি ফেরার পথে রাজীব চৌধুরীকে মারপিট করে আহত করা হয়।
এছাড়া একাধিক পাওনাদারকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
এ ব্যাপারে কার্তিক আঢ্য মারপিট ও হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ওই পরিবার বর্তমানে ঋন গ্রস্থ হয়ে পড়েছে। অনেকেই তাদের কাছে টাকা পাবে। ভুক্তভোগীরা আমাদের কাছে অভিযোগ করেন। আমি বিষয়টি মিমাংশা করার চেষ্টা করেছি মাত্র। এবিষয়ে ভুক্তভোগী আব্দুর রাজ্জাক ও রাজীব চৌধুরী পৃথকভাবে শুক্রবার কেশবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। বাপ্পী চৌধুরী ও তার পিতা দিলিপ চৌধুরীর ০১৭১৪৫৯২৮৮৩ নাম্বারে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও নাম্বার বন্ধ থাকায় সেটা সম্ভব হয়নি। ওই নাম্বারে একাধিক ম্যাসেজ দিলেও কোন উত্তর না আসার তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। মামলার ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে সাতবাড়িয়া গ্রামের কার্তিক আঢ্য ও বাসুদেব আঢ্য রোববার রাতে রাজীব চোধূরীর বাড়িতে গিয়ে মামলা তুলে নিতে হুমকি প্রদান করে। এছাড়াও উল্লেখিতরা প্রতারনাকারীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এলাকার কুচক্রী মহলের সহযোগিতায় রাজীব চৌধূরী ও তার পরিবারের সদস্যদের হয়রানী করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে রাজীব চৌধূরী সোমবার কেশবপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। যার নং-১২১০,তাং-৩০-০৪-১৮।
এ বিষয়ে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ আব্দুল্লাহ জানান, অভিযোগ পেয়েছি, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বেনাপোলে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক বর্জন করলো সাংবাদিকরা
বেনাপোল স্থলবন্দর আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের দ্বিতীয়তলায় নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও স্থলবিস্তারিত পড়ুন
ঝিকরগাছায় বাস চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী শিশুসহ দু’জন নিহত
যশোরে বাস চাপায় এক শিশু ও এক মোটসাইকেল আরোহীর মৃত্যুবিস্তারিত পড়ুন