শিশু গৃহকর্মীর মৃত্যুরহস্য ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা
নড়াইলের নড়াগাতি থানার খাসিয়াল ইউনিয়নের শুড়িগাতি গ্রামের টুকু মোল্যার আট বছরের মেয়ে শরিফার মৃত্যুরহস্য ধামাচাপা দিতে অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তা ২০ লাখ টাকার প্রস্তাব দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নড়াইল সদর হাসপাতালে শরিফার ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে।
এর আগে গত সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শরিফার মৃত্যু হয়। সোমবার রাত ২টার দিকে শরিফার লাশ নড়াগাতির শুড়িগাতি গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়। শিশু শরিফা ঢাকায় সরকারি এক কর্মকর্তার বাসায় প্রায় ছয় মাস ধরে গৃহকর্মীর কাজ করত।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নড়াগাতির বাঐসোনা বড় মাদ্রাসা মাঠে শরিফার জানাজা শেষে তাকে বাঐসোনা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
শরিফার মামা খসরুল ফকির জানান, নড়াইলের নড়াগাতি থানার গাছবাড়িয়া গ্রামের আলী মিয়া গাজীর ছেলে সাজ্জাদ হোসেনের ঢাকার বাসায় গৃহস্থালির কাজ করত তার ভাগ্নি শরিফা। প্রায় ছয় মাস আগে ওই বাসায় কাজ নেয় শরিফা। গত ৩০ মার্চ সাজ্জাদ হোসেনের স্ত্রী শরিফার মায়ের মোবাইল ফোনে জানায় সে (শরিফা) অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এ খবর শুনে শরিফার মা নারগিস বেগম গত রবিবার বিকালে ঢাকায় গিয়ে দেখতে পান, তার মেয়েকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে আইসিইউতে রাখা হয়েছে।
খসরুল ফকির আরও জানান, শরিফার মৃত্যুর পর সরকারি ওই কর্তকর্তা তাকে এবং শরিফার মাকে মোবাইল ফোনে বলেন, ‘তোমরা শরিফার মৃত্যু নিয়ে কোনো কিছু করো না। তোমরা যদি চাকরি চাও তাহলে তা দেয়া হবে। অথবা ২০ লাখ টাকা দেয়া হবে।’
খসরুল বলেন, আমার ভাগ্নি শরিফার মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে চাই। আমার ভাগ্নিকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে। এর আগে একাধিকার শরিফা তার মাকে মোবাইল ফোনে বলেছিল-মা আমি এখানে থাকতে পারছি না। আমার সমস্যা হচ্ছে। বাড়ি এসে তোমাকে সমস্যার কথা বলব। আমাদের দাবি মৃত্যুর প্রকৃত কারণ যেন ধামাচাপা না পড়ে।
এদিকে, শরিফার মৃত্যুর কারণ হিসেবে অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তা এক সময় একেক ধরনের কথা বলেছেন বলে জানান খসরুর ফকির। অভিযুক্ত সাজ্জাদ হোসেন কখনও জানিয়েছেন, শরিফার পাতলা পায়খানা ও জ্বর হয়েছে, কখনো বলেছেন-ক্যানসার হয়েছে। তবে শরিফার গোপনাঙ্গ দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছিল বলে জানান তার মামা খসরুর ফকির।
শরিফার মা নারগিস বেগম বিলাপ করে বলেন, আমি এ ঘটনার প্রকৃত বিচার চাই। সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলে যেন আমাদের প্রতি অবিচার না হয়। প্রায় দুই বছর আগে ওর (শরিফা) বাবা স্ট্রোক করে মারা যান। সংসারের একমাত্র উর্পাজনক্ষম স্বামীকে (ভ্যানচালক) হারিয়ে আমার তিনটি শিশু সন্তান শরিফা, সাগর ও আকাশকে নিয়ে কোনো ভাবে জীবনযাপন করছি। দরিদ্রতার কারণে আমার ছেলে সাগর (সপ্তম শ্রেণি) ও আকাশ (পঞ্চম শ্রেণি) খুলনায় ওদের মামাবাড়ি থেকে পড়ালেখা করছে।
নড়াইল সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সজল কুমার বকসি জানান, শরিফা ঢাকায় যেখানে চিকিৎসাধীন ছিল, সেখান থেকে চিকিৎসাসংক্রান্ত কাগজপত্র আসার পর বোর্ড গঠন করে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দেয়া হবে। এক্ষেত্রে দুই একদিন সময় লাগতে পারে।
নড়াগাতি থানার ওসি বেলায়েত হোসেন জানান, শরিফার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। আর শিশু শরিফার পায়ুপথে কালো জমাটবাঁধা রক্তের দাগ দেখা গেছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেনের সঙ্গে সাংবাদিকরা মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
এনামুল-সম্রাটসহ ৪ জনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ
ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ততা ও অবৈধ অর্থ লেনদেনের অভিযোগে সংসদবিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন