স্বামীর সামনেই স্ত্রীকে ধর্ষণ করেছে সিরীয় সেনারা: জাতিসংঘ
নারীরা যেন দাবার ঘুটি। তেমনটাই মনে করছে জাতিসংঘ।সিরিয়ার যুদ্ধে সাধারণ মানুষ যে ভয়ঙ্কর যৌন হিংসার শিকার, তা নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল নতুন একটি প্রতিবেদন সম্প্রতি প্রকাশ করেছে। তাতেই মহিলাদের নিয়ে এই মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের সদস্যরা।
অন্তত ৪৫০ জনকে প্রশ্ন করে তৈরি হয়েছে এই প্রতিবেদন। যা থেকে উঠে এসেছে যৌন সহিংসতার ভয়াবহ চিত্র। অভিযোগের তীর প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বাহিনীর দিকেই।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধর্ষণ এবং যৌন হেনস্থা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সিরিয়ায় পরিবার-জীবনকে পুরোপুরি বিপন্ন করে দিতে এবং সন্ত্রাসদীর্ণ মানুষের মনোবল ভেঙে দিতে যৌন হিংসা একটা মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছে। জঙ্গি ও বিদ্রোহী খোঁজার নামে আসাদের বাহিনী যখন-তখন হানা দিয়েছে বসতবাড়িতে। তারপর অবাধে চালিয়েছে যৌন অত্যাচার। কোথাও কোথাও আবার বাড়ির বাইরে টেনে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছে বাহিনীর লোকজন। কখনও সামরিক ট্যাঙ্কের সামনে নগ্ন হয়ে হাঁটতে বলা হয়েছে মহিলাদের।
জাতিসংঘের সদস্যদের কাছে এক মহিলা বলেছেন, তাকে তার ভাইয়ের সামনে ধর্ষণ করা হয়েছে। আর একজন জানিয়েছেন, স্বামী আর তিন সন্তানের সামনে ধর্ষিত হতে হয়েছে তাকে। যারা বাধা দিতে গিয়েছেন, মরতে হয়েছে তাদের। নয়তো চোখের সামনে মেরে ফেলা হয়েছে সেই মহিলার স্বজনকেই।
বিদ্রোহীদের দখলে থাকা সেনাছাউনিগুলিতেও এক ছবি। ভিড় বাসে মহিলাদের মধ্যে থেকে কাউকে হঠাৎ তুলে এনে রাখা হচ্ছে আলাদা কোনও বাড়িতে। তিনি গিয়ে দেখছেন, সেখানে আরও নির্যাতিতাকে আটক রয়েছেন। জখম শরীরে পরার জন্য কিছু দেয়া হয়নি তাদের। রক্ষা পাননি বৃদ্ধারাও। অশালীন ভাবে তাদের দেহতল্লাশি করা হয়েছে।
এক বৃদ্ধা জানিয়েছেন, সেনা অফিসার তাকে যৌন নির্যাতনের সঙ্গে মারধরও করেছে। আর এক বৃদ্ধার দাবি, যৌনাঙ্গে জিনিস ঢুকিয়ে অত্যাচার চালানো হয়েছে তার ওপরে।
সরকার-বিরোধী কথা বললেই আসাদ বাহিনী জেলে ভরেছে মহিলা সাংবাদিক, আইনজীবী এবং আন্দোলনকারীদের। বন্দি ওই মহিলাদের অবস্থা সব চেয়ে ভয়াবহ বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে। রেহাই নেই ওই মহিলাদের আত্মীয়দেরও। জেলে রয়েছে ৯ বছরের মেয়েও। সবার সামনে জেলে ধর্ষণ করা হয়েছে অন্তঃসত্ত্বাকে। জেলে ঢুকিয়েই মহিলাদের নগ্ন অবস্থায় পুরুষ অফিসারের সামনে মিছিলে হাঁটতে বাধ্য করা হয়েছে।
পুরুষ অফিসার মহিলাদের যৌনাঙ্গে আঙুল ঢুকিয়ে এমন অত্যাচার করেছেন যে গুটিয়ে বসে থাকতে হয়েছে বহু ক্ষণ। যৌনাঙ্গে ও স্তনে বিদ্যুতের শক দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। গণধর্ষণ তো চলেইছে। অকথ্য অত্যাচারে রক্ত, মূত্র আর উকুনে ঢেকে যাওয়া নারী-শরীর দেখে কখনও পিছিয়ে গিয়েছে সেনা।
আটক হয়ে নিগ্রহের শিকার হয়েছেন পুরুষরাও। অন্য বন্দিদের সামনে তাদেরও ধর্ষণ করা হয়েছে। পাইপ, রড দিয়ে চলেছে নির্যাতন। আসাদের বাহিনী এ সব দৃশ্য দেখে ‘আনন্দ’ পেত বলে জাতিসংঘের সদস্যদের জানিয়েছেন বন্দিরা।
২০১৫ সালের পরে আকাশপথে হামলা বেড়ে যাওয়ায় এই হিংসায় কিছুটা ছেদ পড়েছে। তার আগে সিরিয়ার দারা, হমস, দামেস্ক এবং লাটাকিয়ায় এই ছবিটাই ছিল রোজনামচা।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
পাকিস্তানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ১৯ জনের মৃত্যু
পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে শক্তিশালী ৫ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের আঘাতে ১৯বিস্তারিত পড়ুন
২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় হিক্কা
ধেয়ে আসছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিক্কা। এর ফলে ঝড়ের পাশাপাশি ভারীবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন