ক্ষমতাসীনরা ভাষা আন্দোলনের রক্তের সাথে বেঈমানি করেছে : মির্জা ফখরুল
ক্ষমতাসীনরা গণতন্ত্রকে অবরুদ্ধ করে রেখে ভাষা শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তের সাথে বেঈমানি করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ভাষায় আন্দোলনের চেতনা ছিল মূলত গণতান্ত্রিক চেতনা এবং ১৯৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চেতনাটা ছিলো গণতান্ত্রিক চেতনা। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর যে আশা আকাঙ্ক্ষা, তাকে সম্পূর্ণরূপে পদদলিত করে আজকে তারা দেশে একটা একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে, বন্দুক-অস্ত্র ব্যবহার করে জনগণের যে ন্যায্য দাবিগুলো, তা তারা দাবিয়ে রাখছে।
সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব বলেন।
একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহিদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্যে দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি খন্দকার মোস্তাহিদুর রহমান, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মাহবুবউল্লাহ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।
দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর পরিচালনায় মঞ্চের সামনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় আনোয়ার হোসাইন, এম এ মালেক, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, খন্দকার মাশুকুর রহমান মাশুক সহ নেতাকর্মী।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই- তারা ভাষা আন্দোলনের চেতনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, তারা ভাষা আন্দোলনের রক্তের সাথে বেঈমানি করেছে। একইসাথে মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তের সাথে বেঈমানি করেছে।
ভাষা দিবস শুরুর প্রাক্কালে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার শপথ নেয়ার জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, অবশ্যই আমরা আমাদের হারানো অধিকার ফিরিয়ে নিয়ে আসবো। বাংলাদেশের ইতিহাস বলে, কখনো জোর করে, শক্তি দিয়ে, অস্ত্র দিয়ে জনগণের ন্যায়সঙ্গত দাবিকে দাবিয়ে রাখা যায়নি এবং কখনোই যাবে না।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই ছিল গণতন্ত্র। অথচ এই জায়গাগুলোতেই আদর্শের সংঘাত। কারণ এখনকার শাসকগোষ্ঠি বৃহত্তর জনগোষ্ঠির যে আশাআকাঙ্খা তা সম্পূর্ণরূপে পদদলিত করে আজকে তারা একদলীয় শাসক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা ও তথাকথিত কিছু বুদ্ধিজীবী আছেন দেখবেন যারা সব সময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং ভাষা আন্দোলনে চেতনা এই কথাগুলো খুব ব্যবহার করে। কিন্তু একবাবের জন্য তারা বলেন না, বলতে পারেন না। যে ভাষা আন্দোলনের মূল চেতনাই ছিল গণতন্ত্রের চেতনা। এবং ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধের চেতনাও ছিল গণতন্ত্রের চেতনা।
নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে বিএনপির মহাসচিব বলেন, যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে তার আগে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই সার্চ কমিটি তাদের মনোনীত লোকদের দ্বারাই গঠিত হয়েছিল। গঠিত নির্বাচন কমিশনের প্রধান যাকে নিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগ দলীয় ব্যক্তি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন দেশের মানুষ অগ্রাহ্য করেছে তারা তা গ্রহণ করেনি, বিশ্ববাসীও গ্রহণ করেনি। আগামীতে যদি আবারো চতুরতার সঙ্গে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে সেই একদলীয় নির্বাচন করতে চায় তা দেশের মানুষ ও বিশ্ববাসী গ্রহণ করবে না।
তিনি আরো বলেন, আগামী যে নির্বাচন আসবে, আমরা চাই, যে নামেই হোক তা হতে হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিবার্চন কমিশন নিরপেক্ষ থেকে সেই নির্বাচন পরিচালনা করে। তাহলেই তা দেশের মানুষ গ্রহণ করবে।
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, অর্থনীতিকে ধ্বংস করা হয়েছে মিথ্যা কথা বলে। মিথ্যা প্রবৃদ্ধির কথা বলে জনগণ ও বিশ্ববাসীতে বুঝানো হচ্ছে বাংলাদেশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে।
তিনি দলের নেতাকর্মীদেও ওপর নির্যাতন প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের হাজার হাজার ভাইরা কিভাবে রক্ত দিয়েছে, হাজারের ওপর আমাদের ভাইয়ের এই শাসকগোষ্ঠির নির্যাতনে প্রাণ হারিয়েছে। ৫ শ’র ওপরে আমাদের ভাই-বন্ধু গুম ও নিখোঁজ হয়ে গেছে। হাজার হাজার নেতা-কর্মী পঙ্গু হয়ে গেছে। নিপীড়ন নির্যাতনে কেউ বাসা-বাড়িতে থাকতে পারে না।
আমাদের অনেক কর্মী নিজের বাড়িতে থাকতে পারে না, অন্য বাড়িতে থাকে, নেতা-কর্মীরা নিজেদের পাড়ায় থাকতে পারে না, অন্য পাড়ায় গিয়ে থাকে। এই হচ্ছে রাজনৈতিক নিপীড়নের চিত্র।
ভোলায় সদ্য অনুষ্ঠিত বিএনপির জেলা সম্মেলনে বিভিন্ন থানা-উপজেলা থেকে নেতাকর্মীদের আসতে না দেয়ার জন্য বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়ার ঘটনার কথা বলেন মহাসচিব।
স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আজকে ভাষা আন্দোলনের চেতনা ভাষার চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা স্বাধীনতার চেতনা সেই ধূলিস্যাৎ করে দিয়েছে বর্তমান সরকার। এই যে চেতনা ও মূল্যবোধের কথা বলেন যারা কিন্তু কার্যক্রমে দেখা যাচ্ছে দেশে একটি একদলীয় সরকার দেশে শাসন করছে। ভাষার চেতনা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফেরাতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে শপথ নিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান মওদুদ আহমদ।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
ট্রাম্পের হয়ে প্রচারণা চালানো মোদি’র তা ভারতের পররাষ্ট্রনীতির পরিপন্থী
২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ডবিস্তারিত পড়ুন
ছাত্রদলের কাউন্সিল: ৮ভোটে হেরে গেলেন কেশবপুরের সেই শ্রাবণ
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কাউন্সিলে সভাপতি পদে মাত্র ৮ ভোটে হেরে গেছেনবিস্তারিত পড়ুন
ছাত্রদলের নতুন সভাপতি খোকন, সম্পাদক শ্যামল
কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে নতুন নেতৃত্ব পেল বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল।বিস্তারিত পড়ুন