মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪

কলারোয়া নিউজ

প্রধান ম্যেনু

সাতক্ষীরার সর্বাধুনিক অনলাইন পত্রিকা

সুইজারল্যান্ড প্রবাসী সেই রওফিকে সন্তানের দাবি রফিতন বেওয়ার

মা-বাবার খোঁজে আসা সুইজারল্যান্ডের নারী রওফির মায়ের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন কুড়িগ্রামের রফিতন বেওয়া (৬৫)। ঘটনার অনেক অমিল থাকলেও তার দাবি প্রায় ২৮-৩০ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া তার নাড়িছেঁড়া ধন শাহেরাই বর্তমানে সুইজারল্যান্ডের রওফি।

তবে রওফির দাবি প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে হারিয়ে যাওয়ার সময় তার নাম ছিল খোতেজা। সে হারিয়ে যাওয়ার পর চিলমারী ছিন্নমুকুলে (বেসরকারি সাহায্য সংস্থা) তার আশ্রয় মেলে। এখানে চার বছর থাকার পর ১৯৭৮ সালের দিকে সুইজারল্যান্ডের এক দম্পতি তাকে দত্তক নিয়ে চলে যায়।এর পর দীর্ঘ ৪২ বছর ধরে সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে বেড়ে উঠেন রওফি ওরফে খোতেজা। সম্প্রতি নাড়ির টানে জন্মভূমি বাংলাদেশে এসেছিলেন হারিয়ে যাওয়া বাবা-মা বা বংশধরদের খোঁজে। সপ্তাহখানেক বিভিন্ন জায়গায় চষে বেড়িয়ে দুঃখ-ভারাক্রান্ত মনে শূন্যহাতে ফিরে যান সুইজারল্যান্ডে বর্তমানে পালিত বাবা-মায়ের কাছে।

তার ফিরে যাওয়ার তিন দিন পর শুক্রবার সকালে মায়ের দাবিতে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন চত্বরে খুঁজে ফিরছেন সন্তান হারানো মা রফিতন। রওফি ওরফে খোতেজাকে নিজের সন্তান বলে দাবি করছেন তিনি। এ জন্য তার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য সহায়তা চান সাংবাদিকদের কাছে।

মায়ের দাবিদার রফিতন বেওয়া জানান, কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের অর্জুন গ্রামের বাসিন্দা তিনি। তার স্বামীর নাম ছাত্তার আলী।২২ বছর আগে স্বামী মারা যান। স্বামীর দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন তিনি। তার সংসারে দুটি মেয়ে ও একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। বড় সন্তান শাহেরা ১৯৭৪ সালে দুর্ভিক্ষের সময় হারিয়ে যায়।

তিনি আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, ‘ঘরোত খাবার নাই। চারপাকোত মঙ্গা। খাবার দিবের পাং না। ছওয়াটা মোড় হারি গেইল।’ সেই সময় ৭-৮ বছরের বড় মেয়ে খাবাবের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে গিয়ে হারিয়ে যায়। এর পর অনেক খুঁজেও তাকে আর পাওয়া যায়নি।

সুজারল্যান্ডের অধিবাসী রওফি থেথরাইয়ে আসার সময় তিনি ছোট মেয়ের বাড়িতে অবস্থান করায় তার সঙ্গে দেখা হয়নি। পরে ফেসবুকে ঘটনা জানাজানি হলে প্রতিবেশীরা তাকে খবর দেন। শুক্রবার সকালে অনেক আশা নিয়ে ছেলে রফিকুলসহ তিনি কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আসেন।সেখানে তখন সুনসান নীরবতা। বড় বড় তালা ঝুলছে অফিসগুলোতে। চারদিকে ফ্যালফ্যাল চোখে লোকজন খুঁজছিলেন তিনি। কাকে কি বলবেন বুঝতে পারছিলেন না। পরে বিষয়টি সাংবাদিকদের নজরে এলে তিনি চোখের পানি মুছতে মুছতে বলেন, ‘মোর বেটি কই? একনজর তাক মুই দেখিম। তোমরা একনা ব্যবস্থা করি দেও।’

বর্তমানে থেথরাই বাজারে ঝালবুটের দোকানদার রফিতন বেওয়ার পুত্র রফিকুল জানান, হারিয়ে যাওয়া শাহেরা ছিল সবার বড় বোন। সে কয়েক মাস স্কুলেও পড়েছিল। তার বাবা ছাত্তার আলী ছিলেন ধবধবে ফর্সা লোক। তার মাও ফর্সা। তারা প্রথমে দলদলিয়ার অর্জুন গ্রামে থাকলেও তিস্তার ভয়াবহ ভাঙনে সেই বাড়ি বিলীন হয়ে যায়। এর ছয় বছর পর (২০১৩ সালে) তারা থেথরাই শেখের খামার গ্রামে ওয়াপদা বাঁধে আশ্রয় নেন। এখন মাকে নিয়ে সেখানেই অবস্থান করছেন রফিকুল।রফিতন বেওয়া ও পুত্র রফিকুলের কথার সঙ্গে সুজারল্যান্ডের অধিবাসী রওফির কথার অনেক অমিল পাওয়া যায়। রওফি শ্যামবর্ণের হলেও রফিতন ও তার স্বামী ছিলেন অনেক ফর্সা। রওফি সাড়ে তিন বছর বয়সে হারিয়ে যাওয়ার কথা বললেও রফিতন বেওয়ার মেয়ে শাহেরা হারিয়ে যায় ৭-৮ বছর বয়সে। দুজনের নামের মধ্যেও রয়েছে গরমিল।

এ ছাড়া ১৯৭৪ সালে তারা ছিলেন পার্শ্ববর্তী দলদলিয়া ইউনিয়নের অর্জুন গ্রামে। দুপক্ষের বর্ণনার মধ্যে যথেষ্ট ফারাক থাকলেও এক হারিয়ে যাওয়া কন্যার আঁকুতি আর মেয়ের জন্য মায়ের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়ানো এলাকায় এখন চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।

এ ব্যাপারে থেথরাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল জলিল শেখ জানান, আমরা এলাকাবাসী রফিতনের হারিয়ে যাওয়া মেয়ের ঘটনার কথা সবাই জানি। এর আগেও চট্টগ্রামে হারিয়ে যাওয়া মেয়ের খোঁজে গিয়েছিলেন তিনি।বর্তমানে সুজারল্যান্ডের অধিবাসী রওফির সঙ্গে রফিতনের মেয়ের অনেক মিল পাওয়া যায়। বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে প্রয়োজনে উভয়ের ডিএনএ টেস্ট করে দেখা দরকার। তা হলে বিধবা রফিতন মনে একটু শান্তি পাবেন।

রওফির বক্তব্য ও ঘটনার আদ্যোপান্ত

কুড়িগ্রামের উলিপুর ও চিলমারীতে হারানো বাবা-মায়ের খোঁজে হন্যে হয়ে পথেপ্রান্তরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক সুইজারল্যান্ডবাসী কন্যা। স্বামী ও প্রবাসী বন্ধুদের সহযোগিতা নিয়ে এক সপ্তাহ ধরে অনুসন্ধান করেও কোনো সূত্র না পেয়ে হতাশ পরিবারটি। তার পরও মনের কোনে আশা হয়তো ফিরে পাবেন হারানো বাবা-মাকে। পরিবারটির সঙ্গে কথা বলে জানা গেল তাদের অতীত ইতিহাস।

মেয়েটি জানান, দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে অপেক্ষার প্রহর গুণছেন তিনি। বিদেশ বিভুঁইয়ে মানুষ হয়েছেন দত্তক সন্তান হিসেবে। কোনো কিছুর ঘাটতি রাখেননি সেই বাবা-মা। তার পরও কোথাও যেন একটু রক্তক্ষরণ! চিনচিনে ব্যথা মনে দাগ বসিয়ে দিয়েছিল।

সংসার-স্বামী-সন্তানকে নিয়ে সুখে থাকলেও একটা বিনা সুতোর টান অনুভব করতেন মনের খাঁচায়। বড় হয়ে যখন জানলেন তার দেশ সুইজারল্যান্ড নয়। জন্ম বাংলাদেশে। তখন থেকেই খচখচ করছিল মনটা। এক সময় স্বামীকে বলেই ফেললেন আরাধ্য কথাটি। স্বামীও রাজি হলেন তার কথায়। তার পর বাংলাদেশে খুঁজতে এলেন হারিয়ে যাওয়া বাবা-মায়ের খোঁজে। এই হল পৃথিবীর স্বর্গরাজ্য বলে পরিচিত সুইজারল্যান্ডের নাগরিক রওফি ওরফে খোদেজার জীবন কাহিনী। প্রবাসী খোদেজা এখন চষে বেড়াচ্ছেন কুড়িগ্রামের উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামগঞ্জ। তার সফরসঙ্গী ও অন্যান্য লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে সাড়ে তিন বছর বয়সী খোদেজাকে উলিপুর উপজেলার থেথরাই বাজারে কাঁদতে দেখে পার্শ্ববর্তী চিলমারী উপজেলায় অবস্থিত বেসরকারি শিশু সংগঠন টেরেডেস হোমসের একটি নোঙরখানায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত ছিল সে।

এর পর সুইজারল্যান্ডের রওফি পরিবার তাকে দত্তক নেয়। ছোটবেলার স্মৃতি একটি সাদাকালো ছবি নিয়ে সে নতুন বাবা-মায়ের সঙ্গে পাড়ি দেয় জেনেভা শহরে। সেখানেই সন্তান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। পড়াশোনা শেষ করে জেনেভার সাইকেল ডেলা গোলেহে স্কুলের শিক্ষক হিসেবে ২০০১ সাল থেকে কাজ করছেন। মা-বাবা হারানোর সময়ের স্মৃতি হিসেবে তার কোনো কিছু মনে নেই।তবে তিনি জানান এতটুকু মনে রয়েছে আমি তখন অন্য কোনো শহরে চলে এসেছি। এতদিন পর আমি আমার নিজের জন্মভূমিতে এসেছি শুধু আমার প্রকৃত মা-বাবার খোঁজে। কিন্তু আমি তাদের নাম-ঠিকানা কিছুই জানি না। আছে শুধু আমার নিজের একটি ছোটবেলার সাদাকালো ছবি। শেষ বয়সে এসে যদি আমার মা-বাবা এবং বংশধরদের খুঁজে পাই। জানি না পাব কিনা। তবে পেলে আমার থেকে বড় খুশি আর কেউ হবে না।

খোদেজা সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় পড়াশোনা শেষ করে সেখানকার এক কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার জিইয়াস মরিনোকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে ৫ বছরের ইলিয়াস নামের একটি পুত্রসন্তান রয়েছে।

খোদেজার সফরসঙ্গী হিসেবে ইনফ্যান্টস ডু মনডের কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর রাকিব আহসান জানান, প্রাথমিকভাবে আমাদের সোর্সদের কাজে লাগিয়ে আমরা খোদেজার মা-বাবা এমনকি তার স্বজনদের বিষয়ে খোঁজ নিয়েছি। কিন্তু কেউ কোনো তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করতে পারেনি। তবে কেউ যদি কখনও খোদেজার মা-বাবার পরিচয় দাবি করেন সে বিষয়ে আমরা সঠিক তথ্য-উপাত্তসহ ডিএনএ টেস্ট করিয়ে শতভাগ নিশ্চিত হব। কেননা আমরা চাই না এই সময় এসে খোদেজা কোনো প্রতারণার শিকার হোক।অপর সফরসঙ্গী জেনেভা বাংলা পাঠশালার পরিচালক ও সুইস বাংলাদেশ কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রিয়াজুল হক বলেন, খোদেজার সঙ্গে আমার পাঠশালাতেই পরিচয় হয়। সেখানে আলাপচারিতায় তার শৈশবের কথা জানালে আমিও তার মা-বাবার খোঁজে এসেছি। কিন্তু বিষয়টি খুবই জটিল। কেননা কোনো ডকুমেন্টস আমাদের হাতে নেই। কিন্তু তার পরও যদি মিরাক্কল কিছু ঘটে।

স্থানীয় এনজিও কর্মী নুরুল হাবীব পাভেল জানান, সেই সময় কুড়িগ্রামে খুবই দুর্ভিক্ষ ছিল। তখনকার পরিস্থিতি দেখে চিলামারীর নুরন্নবী চৌধুরী, দেলোয়ার মাস্টার, ছমচ হাজীসহ অনেকেই একটি নোঙরখানা খোলেন। পরবর্তী টিডিএইচ নোঙরখানাটি নেন। সেখানে ১২০০ শিশু ছিল নোঙরখানায়। প্রতি ৫০ শিশুকে দেখার জন্য একজন করে টিম লিডার ছিল। খোদেজার টিম লিডার আনিসুর ছিলেন। সে খোদেজার ছবি দেখে চিনতে পেরেছে। কিন্তু তার মা-বাবার বিষয়ে কিছুই বলতে পারেনি। তিনি আরও জানান, ১৯৭৮ সালে আমার জানামতে ৩৬ জন এতিম শিশুকে অনেক বিদেশি দত্তক নিয়েছিল।

খোদেজার সঙ্গে তার সমবয়সী পিপিজ ও কুরানী নামের আরও দুটি শিশু বিদেশে গিয়েছিল। সেই সময় টিডিএইচে যেসব শিশু বড় হয়েছিল, তাদের মধ্যে যাদের মাতাপিতা মারা গেছে তাদেরই শুধু বিদেশে দত্তক দিয়েছে। আর যাদের পিতামাতা ছিল তাদের স্বাবলম্বী করে দেয়া হয়। আর খোদেজাকে রাস্তা থেকে নিয়ে আসায় তার পিতামাতা সম্পর্কে কেউ কোনো তথ্য দিতে পারছে না।

একই রকম সংবাদ সমূহ

সেই ৩৫ বস্তা টাকা জ্বালানী বানালেন স্থানীয়রা

বগুড়ার শাহজাহানপুরে রাস্তার পাশে পাওয়া বস্তা ভর্তি কুচি কুচি করাবিস্তারিত পড়ুন

টাকার স্তূপ নিয়ে হুলুস্থুল, যুবকের কাণ্ড মুহূর্তে ভাইরাল

বগুড়ার শাজাহানপুরের জালশুকা এলাকার খাউড়া ব্রিজের পূর্ব দিকের সড়ক ওবিস্তারিত পড়ুন

বগুড়ায় রাস্তার পাশে ৩৫ বস্তা ছেঁড়া টাকা!

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার জালশুকা গ্রামের খাওড়া ব্রিজের কাছ থেকে ৩৫বিস্তারিত পড়ুন

  • নবম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র গ্রেফতার
  • কিডনি রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকারের উপায়
  • কুড়িয়ে পাওয়া সোনার ব্যাগ ফেরত দিল চার যুবক
  • ২০১৯ দুর্গাপুজোয় মায়ের আগমন-গমন কিসে! এর ফলাফলে কোন প্রভাব পড়তে পারে
  • রুপা আক্তারের কবিতা : অর্থের প্রয়োজনে
  • কলারোয়া উপজেলায় সুশীলনের উদ্যোগে ৯০টি পরিবারের মাঝে গাছের চারা বিতরণ
  • জামিন পেল সেই পুলিশ কনস্টেবল মিমি
  • জামিন পেয়েছে মিন্নি
  • ফেসবুকে নতুন ফিচার চালু, ডিলিট হবে সবকিছু
  • পুলিশের অপকর্ম দেখে ফেলাই সাংবাদিকের নামে মিথ্যা মামলা
  • এবার যুক্তরাষ্ট্রেও ‘প্লাস্টিক বৃষ্টি’!
  • সাগরে লঘুচাপ, বন্দরসমূহে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত