সম্পাদককে গুলি করে হত্যাই হলো কাল
সত্যিই কি মোদির হেলিকপ্টারে করে জেলে যান ধর্ষক রাম রহিম?
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ার ছবি দুটি ভাইরাল। একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে হেলিকপ্টারে বসে সদ্য ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত গুরু রাম রহিম সিং।
তার পরনে সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবি, পায়ে সাদা জুতা। মুখে হাত (নখ কামড়াচ্ছেন?) দিয়ে বসে আছেন। যে হেলিকপ্টারে তিনি বসে আছেন তার গায়ে লেখা AW139 ।
আরেকটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে- হেলিকপ্টার থেকে নামছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। হেলিকপ্টারের গায়ে লেখা AW139। এই ছবিটি অবশ্য এক বছর পুরনো। ছবি দুটিতে একটাই কমন বিষয়। আর সেটা হল হেলিকপ্টারের গায়ে লেখা সংখ্যাটা। AW139 আসলে অগষ্টা ওয়েস্টল্যান্ডের হেলিকপ্টার। এই কপ্টারের মালিক আবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ উদ্যোগপতি আদানি।
এই হেলিকপ্টারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে মাঝে মধ্যেই চড়তে দেখা যায়। সেই হেলিকপ্টারে কিনা ধর্ষণের মতো গুরুতর অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত এক অপরাধীকে উড়িয়ে জেলে নিয়ে যাওয়া হল। সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে। ইতিমধ্যে ছবিটি ভাইরাল হয়ে গেছে।
সূত্র: কলকাতা টুয়েন্টিফোর।
সম্পাদককে গুলি করে হত্যাই হলো কাল
মহিলা ভক্তকে ধর্ষণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত ভারতের কথিত ধর্মীয়গুরু রাম রহিম সিংয়ের বিরুদ্ধে রয়েছে সাংবাদিক হত্যার অভিযোগ। ২০০২ সালে ধর্ষণের তথ্য ফাঁস করায় সাংবাদিক রামচন্দ্র ছত্রপতিকে হত্যা করেন রাম রহিম।
রামচন্দ্র ছিলেন ভারতের স্থানীয় সংবাদপত্র ‘পুরা সাচ সত্য)’ পত্রিকার সম্পাদক। ২০০২-এর ২৪ অক্টোবর তাকে গুলি করা হয়। এর এক মাস আগে থেকেই পত্রিকায় রাম রহিমের বেআইনি কাজকর্মের খবর ফাঁস করে আসছিলেন রামচন্দ্র। প্রায় এক মাস মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে ২১ নভেম্বর দিল্লির এ্যাপোলো হসপিটালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তারপর রাম রহিমের শাস্তির দাবিতে বৃহত্তর আন্দোলনে নামে পাঞ্জাব ও হরিয়ানার সাংবাদিক মহল। রামচন্দ্র ছত্রপতি হত্যা মামলার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্ট। যেখানে ধর্মগুরু রাম রহিমকে মূল আসামি করা হয়। প্রমাণের অভাবে আজও সেই মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। নিহত রামচন্দ্র ছত্রপতির ছেলে আজও মৃত বাবার ছবি হাতে দ্বারে দ্বারে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। আসলে কী ঘটেছিল ১৫ বছর আগে? আসুন জেনে নেই। ১৫ বছর আগে রাম রহিম কর্তৃক ধর্ষণের খবর ছেপেছিলেন সিরসার ‘পুরা সাচ’ পত্রিকার সম্পাদক রামচন্দ্র ছত্রপতি। তখনই ছত্রপতিকে হত্যার নীল নকশা করা হয় রাম রহিমের আশ্রমে। পত্রিকার সে খবরে ধর্মগুরু রাম রহিম কীভাবে নারী ভক্তদের ধর্ষণ করছেন তা প্রকাশ করা হয় বিস্তারিতভাবে। সংবাদ প্রতিবেদনটি ভিত্তি ছিল কথিত সেই ধর্মগুরু কর্তৃক ধর্ষণের শিকার এক নারী ভক্তের লেখা চিঠি। চিঠিটি তত্কালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ি এবং পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের প্রধানের বরাবর লেখা হয়েছিল। চিঠির কপি পাঠানো হয় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছেও। তিন পৃষ্ঠার ওই চিঠিতে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছিল রাম রহিম কীভাবে অসংখ্য নারী ভক্তকে ধর্ষণসহ নানাভাবে যৌন নির্যাতন করতেন। পত্রিকায় ওই খবর প্রকাশের পরই পুরো রাজ্যজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন শুরু হয়ে ?যায়। পাঞ্জাব ও হরিয়ানা আদালত সেই চিঠি আমলে নিয়েছিল। তত্কালীন সিরসা জেলা ও সেশন জজকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। বিচারক তখন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে তদন্ত চালানোর সুপারিশ করলে হাই কোর্ট সিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। অবস্থা বেগতিক দেখে নড়েচড়ে বসে কথিত ধর্মগুরু রাম রহিম। ‘পুরা সাচ’ পত্রিকার সম্পাদকের ওপর ভীষণ চটে যায় রাম রহিম। শুরু হয় রামচন্দ্র ছত্রপতির ওপর পাল্টা চাপ আর হুমকি। খবরটি সম্পূর্ণ অসত্য এমন দাবি করে একের পর এক হত্যার হুমকি আসতে থাকে রামচন্দ্র ছত্রপতির ওপর। কিন্তু এতে দমে না গিয়ে উল্টো নিয়মিত রাম রহিমের আশ্রমের নানা কুকীর্তি তার পত্রিকায় প্রকাশ করতে থাকেন রামচন্দ্র ছত্রপতি। আশ্রম থেকে নানা তথ্য দিয়ে পত্রিকাটিকে সাহায্য করছিলেন রণজিৎ ও তার বোন। এরা দুজনই ছিলেন রামচন্দ্র ছত্রপতির সোর্স। রাম রহিমের আশ্রমের দশ প্রধানের একজন ছিলেন রণজিৎ এবং তার বোন ছিলেন আশ্রমের একজন ভক্ত। পত্রিকাটির তথ্য পাওয়ার ‘সোর্স’ কে খোঁজাখুঁজি শুরু হলে পালিয়ে যান ভাইবোন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আততায়ীর গুলিতে প্রাণ দিতে হয় রণজিেকও। এ ঘটনার পরপর রামচন্দ্র পুলিশের কাছে নিরাপত্তার আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সেসময় পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার সাহায্য-সহযোগিতা পাননি তিনি। এ ঘটনার এক মাস পরই ২০০২ সালের ২৪ অক্টোবর নিজ বাড়ির সামনেই সাংবাদিক রামচন্দ্র ছত্রপতিকে খুব কাছ থেকে গুলি করে এক বাইক আরোহী। টানা ২৮ দিন সংকটাপন্ন থাকার পর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন রামচন্দ্র ছত্রপতি। কিন্তু মৃত্যুর আগে পুলিশের কাছে এ ঘটনার জন্য রাম রহিমকে দায়ী করে যান। বাবার মৃত্যুর বিচারের দাবিতে লড়ে ?যাচ্ছেন রামচন্দ্রের ছেলে সাংবাদিক অংশুল। তিনি দাবি করেন পুলিশ এফআইআর থেকে প্রধান আসামি রাম রহিমের নাম মুছে দেন। পর্যাপ্ত প্রমাণের অভাবে ১৫ বছর ধরে মামলাটি ঝুলে রয়েছে। গত শুক্রবার কথিত এই ধর্মগুরু রাম রহিমকে ধর্ষণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
পাকিস্তানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ১৯ জনের মৃত্যু
পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে শক্তিশালী ৫ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের আঘাতে ১৯বিস্তারিত পড়ুন
২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় হিক্কা
ধেয়ে আসছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিক্কা। এর ফলে ঝড়ের পাশাপাশি ভারীবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন