যশোরের রাজগঞ্জ অঞ্চলে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে অধিকাংশ ধান ক্ষেতে ব্যাপক হারে দেখা দিয়েছে গিটব্লাস্ট রোগ।

গিটব্লাস্ট রোগ আক্রমণের ফলে ক্ষেতের ধানগাছ কালো রং ধারণ করার পর শীষ শুকিয়ে যাচ্ছে। তবে এ রোগ থেকে ধান বাঁচাতে কৃষকেরা ছুটছেন স্থানীয় কীটনাশকের দোকানে।

এ সুযোগে এ অঞ্চলের বিভিন্ন হাট-বাজারের এক শ্রেণির মুনাফালোভী ব্যবসায়ী, কৃষকদের সাথে প্রতারণা করছে। তাঁরা চড়ামূল্যে বিভিন্ন কোম্পানির নিম্নমানের কীটনাশক বিক্রি করে ফায়দা লুটছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নিম্নমানের কীটনাশক ব্যবহার করে গিটব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধের পরিবর্তে কৃষকেরা আরো ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছেন। ইউনিয়ন ভিত্তিক উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলা, নিয়মিত মাঠ পরিদর্শন না করায় ইরি-বোরো ধানের এ অবস্থা বলে মন্তব্য করছেন ক্ষতিগ্রস্থ্য কৃষকেরা।

ঝাঁপা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান সহ ক্ষতিগ্রস্থ্য কৃষক এ প্রতিনিধিকে জানান, ইউনিয়ন ভিত্তিক উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা, কারা, তাঁরা দেখতে কি-রকম ভাই ? আমরা জানি না। আমাদের সাথে তাদের কোনো দিন দেখা হয়নি।

কৃষকরা আরো জানিয়েছেন, গিটব্লাস্ট রোগের আক্রমণ এতটাই ভয়াবহ যে, বিভিন্ন কীটনাশক জমিতে প্রয়োগ করেও রোগ দমন করা যাচ্ছে না।

পূর্বে প্রকাশিত খবরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বোরো মৌসুমে পশ্চিম মণিরামপুর তথা রাজগঞ্জ অঞ্চলের রোহিতা, খেদাপাড়া, হরিহরনগর, ঝাঁপা, চালুয়াহাটী, মশ্বিমনগর ও শ্যামকুড় এই ৭টি ইউনিয়নে এবছর ইরি-বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৯ হাজার ১শ’ হেক্টর জমিতে। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে এবছর চাষ করা হয়েছে ২৯ হাজার ৯শ’ হেক্টর জমিতে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রাজগঞ্জ অঞ্চলের বিভিন্ন মাঠ এখন সবুজ ধানে ভরে উঠেছে। কোনো কোনো জায়গার ধান লালছেও হয়েছে। কিন্তু গিটব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত মাঠের পর মাঠ ধান। কৃষকদের মাথায় হাত উঠার অবস্থা প্রায়। এলাকার কৃষকেরা চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলনের আশা করলেও গিটব্লাস্ট রোগের তীব্র আক্রমণের ফলে তাদের সেই আশা এখন নিরাশায় পরিণত হতে যাচ্ছে।

উল্লেখিত ৭ ইউনিয়নে এবছর প্রায় ১০ হাজার হেক্টর ইরি-বোরো ধানে গিটব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে বলে কৃষকেরা দাবি করেছেন।

স্থানীয় অনেক চাষি বলেন, সম্প্রতি আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় গিটব্লাস্ট রোগের আক্রমণ ব্যাপক হারে দেখা দিয়েছে।
তাঁরা আরো জানান, তাদের ইরি-বোরো ক্ষেত গিটব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ায় এবর উৎপাদন খরচ ঘরে উঠবে না। এছাড়া ধার-দেনা পরিশোধ করা তো দূরের কথা, চলতি মৌসুমে ইরি-বোরো চাষ করে আর্থিক ভাবে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখিন হতে হবে।

Kalaroa News

---

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)

---