মনিরামপুরের রাজগঞ্জে গোল্ড ব্রিকস ভাংচুর ও কর্তৃপক্ষকে হুমকির ঘটনায় মানববন্ধন
মাসে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা না দিলে ভাটার ব্যবসা করতে দেয়া হবে না বলে হুমকি দিচ্ছে বিতর্কিত এক নারীর ছত্রছায়ায় থাকা সন্ত্রাসীরা।
গত ১৫ এপ্রিল তারা যশোরের মনিরামপুর উপজেলার শাহপুর মাঠে অবস্থিত গোল্ড ব্রিকস-৩ এর কার্যালয়ে এসে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে হুমকিসহ ভাটায় কর্মরত কর্মচারিদের মারপিট ও ভাটা ভাংচুরের ঘটনা ঘটিয়েছে। এমনকি যেভাবে হোক এখান থেকে ইটভাটাটি উচ্ছেদ করার ও পায়তারা চালাচ্ছে তারা।
বৃহস্পতিবার সকালে শাহপুর মোড়ের গোল্ড ব্রিকস-৩ এর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন ও এক মানববন্ধনে এ অভিযোগ করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসানুর রহমান হাসান ও ভুক্তভোগী ভাটা কর্তৃপক্ষ।
এসময় ভুক্তভোগী ভাটা কর্তৃপক্ষের সাথে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, গোল্ড ব্রিকস- ৩ এর মহাব্যবস্থাপক মোঃ আবুল হাসেম মন্টু, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ ওয়াজেদ আলী ও আমিনুর রহমান, ভাটা ম্যানেজার হাসান, সমাজসেবক আছির উদ্দিন ঝন্টু, মতিয়ার সানা, স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা সমাজসেবক শাহী সরোয়ার মুকুল, আব্দুর রশীদ টুকু ও সালাউদ্দিন প্রমূখ।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ২০১৬ সালে ৩১ নভেম্বর স্থানীয় চালুয়াহাটি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে গোল্ড ব্রিকসের পক্ষে ট্রেড লাইসেন্স ও প্রত্যায়নপত্রসহ অনাপত্তিপত্রের সনদ গ্রহন করা হয়। সেই সাথে জেলা প্রসাশকের অনুমোতি গ্রহনের জন্য আবেদন ও করা হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক গোল্ড ব্রিকস-৩ নির্মাণসহ ভাটার সার্বিক কাজ পরিচালনা করার জন্য ২০১৭ সালে ৫ নভেম্বর অনুমোতি প্রদান করেন। একই সাথে ২০১৭ সালে ৭ ডিসেম্বর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরে ছাড়পত্র পাইবার জন্য ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে আবেদনও করা হয়। সকল প্রস্তুুতি শেষে ২০১৬ সালের স্থানীয় শাহপুর গ্রামের শাহী সরোয়ার মুকুল, মো ঃ মতিয়ার সানা, আব্দুর রশীদ টুকুসহ ১২ জনের নিকট থেকে ৯ একর পরিত্যাক্ত জমি বন্দোবস্ত নিয়ে গোল্ড ব্রিকস এর কার্যক্রম শুরু করা হয়।
কিন্তু এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন কিসমত আরা বেগী নামের নারীর নেতৃত্বে থাকা স্থানীয় একটি গ্রুপ। তারা সরাসরি গোল্ড ব্রিকস -৩এর কার্যালয়ে এসে ইটভাটার সার্বিক কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য প্রকাশ্যে হুমকি দেয়। এরপর ভাটা কর্তৃপক্ষ কিসমত আরা বেগীর কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন তার পৈত্রিক সম্পত্তির উপর কোন ইটভাটা নির্মাণ করতে দিবে না। সঙ্গে সঙ্গে ভাটা কর্তৃপক্ষ কিসমত আরা বেগীর কাছে তার দাবিকৃত সম্পত্তির কাগজপত্র চাইলে তিনি কোন কাগজপত্র ভাটা কর্তৃপক্ষকে দেখাতে পারেনি। অথচ ওই সম্পত্তির মূল মালিক হচ্ছেন শাহপুর গ্রামের মৃত তছির সানা। তিনি জীবিত থাকা অবস্থায় মৃত সোবহান সানার ছেলে শাহী সরোয়ার মুকুল ও মৃত রহিম সানার ছেলে আব্দুর রশীদ টুকুর নামে ১৪ বিঘা জমি দলিল করে দেন। এরপর দলিলকৃত ওই সম্পত্তি তারা নিজেদের নামে রেকর্ড করে নেন। অথচ এই রেকর্ডকৃত সম্পত্তি ভূয়া দাবি করে কিসমত আরা বেগী গোল্ড ব্রিকস কর্তৃপক্ষকে জীবন নাশের হুমকি ও মিথ্যা মামলাসহ একের পর এক হয়রানী করে আসছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসানুর রহমান হাসান।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ আরো অভিযোগ করা হয় যে, গোল্ড ব্রিকসের বিরুদ্ধে কিসমত আরা বেগী আদালতে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করে। ইটভাটা কর্তৃপক্ষের সকল কাগজপত্র দেখে আদালত বেগীর অভিযোগটি মিথ্যা বলে খারিজ করে দেন। এরপর বেগী ভাটার বিরুদ্ধে ওই একই অভিযোগে হাই কোর্টে আপিল করেন। তার আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ২২ জুলাই হাইকোর্ট ডিভিশন পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত গোল্ড ব্রিকসের পক্ষে কার্যক্রম পরিচালানার জন্য অনুমোতি প্রদান করেন।
কিন্তুু এতে ও ভাটার পক্ষে রায় আসায় কিসমত আরা বেগী বেসামাল হয়ে পড়ে। ওই রায়ের বিরুদ্ধে বেগী সুপ্রীম কোর্টের আপিল ডিভিশনে রিট আবেদন করেন। সুপ্রীম কোর্টের আপিল ডিভিশন কিসমত আরা বেগীর রিট আবেদনটি আমলে না নিয়ে হাই কোটের দেয়া পূর্বের ওই আদেশই বহাল রাখেন। এরপর কিসমত আরা বেগী স্থানীয় একাধিক নাশকতা মামলার আসামী ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান মেজর এর নেতৃত্বে ইটভাটায় এসে ভাটায় কর্মরত শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে মাসে ৫০ হাজার টাকা চাঁদার দাবিতে প্রতিনিয়ত প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। ওই চাঁদার টাকা না দিলে ভাটায় কর্মরত শ্রমিকদের মারপিটসহ ভাটার ক্ষতিসাধন করছে।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয় গোল্ড ব্রিকস কর্তৃপক্ষের পক্ষে মাসে কিসমত আরা বেগীকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দেয়া সম্ভব নয়। চাঁদার টাকা না দিলে গোল্ড ব্রিকস প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করার হুমকি দেয় ধুরন্ধর কিসমত আরা বেগীর নেতৃত্বে থাকা ওই বাহিনী। সেই সাথে এখনও গোল্ড ব্রিকস কর্তৃপক্ষে বিরুদ্ধে কিসমত আরা বেগী সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা অভিযোগসহ নানা ষড়যন্ত্র অব্যাহত চালিয়ে যাচ্ছে।
এব্যাপারে ভুক্তভোগী গোল্ড ব্রিকস কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বেনাপোলে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক বর্জন করলো সাংবাদিকরা
বেনাপোল স্থলবন্দর আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের দ্বিতীয়তলায় নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও স্থলবিস্তারিত পড়ুন
ঝিকরগাছায় বাস চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী শিশুসহ দু’জন নিহত
যশোরে বাস চাপায় এক শিশু ও এক মোটসাইকেল আরোহীর মৃত্যুবিস্তারিত পড়ুন