মণিরামপুরে নৌকার প্রার্থী ফুরফুরে মেজাজে, ধানের শীষে নেতৃত্ব সংকট
যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনের নির্বাচনী মাঠ বিগত বছরের ন্যায় এবার জমে উঠেনি। এখানকার নির্বাচনী মাঠ অনেকটাই নিরুত্তাপ। আওয়ামীলীগের প্রার্থী ফুরফুরে মেজাজে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। আর ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীর দেখা দিয়েছে নেতৃত্ব সংকট। তবে কিছু এলাকার সাধারণ জনগণের মাঝে ভোটের আলোচনা সবেমাত্র সরব হতে শুরু করেছে। গুঞ্জন চলছে ৩০ ডিসেম্বর কে হচ্ছেন মনিরামপুর উপজেলাবাসীর প্রতিনিধি।
আসন্ন সংসদ নির্বাচন করতে প্রার্থী তালিকায় ৭ জন থাকলেও জনগণের আলোচনায় স্থান পাচ্ছে মাত্র ৫ প্রার্থীর নাম। এ পাঁচ প্রার্থী হচ্ছেন মহাজোট প্রার্থী (আ’লীগ দলীয়) স্বপন ভট্টাচার্য্য (নৌকা), ঐক্যফ্রন্টের (জমিয়তে উলাময়) মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস (ধানের শীষ), স্বতন্ত্র প্রার্থী (আ’লীগ বিদ্রোহী) আলহাজ্ব কামরুল হাসান বারী (ট্রাক), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ইবাদুল ইসলাম খালাসী (হাতপাখা), জাতীয় পার্টি এম এ হালিম (লাঙ্গল)। এছাড়াও রয়েছেন জাকের পার্টির রবিউল ইসলাম (গোলাপ ফুল) এবং জাগপার নিজামুদ্দিন অমিত (হুক্কা)।
উপজেলা ব্যাপী নির্বাচনী প্রচারণা কমবেশি দেখা মিলছে পাঁচ প্রার্থীর। এ পাঁচ প্রার্থীকে নিয়েই জনগণের মুখে পক্ষে বিপক্ষে আলোচনা চলছে। চায়ের দোকান থেকে মাঠে-ঘাটে, অফিস পাড়ায় সবখানে ভোটের আলোচনা চলতে শুরু করেছে সবেমাত্র। তবে প্রধান দু’ জোটের মধ্যে এখনো মান-অভিমান বিরাজ করছে। বড় দু’জোটের মধ্যে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী মুফতি মুহাম্মাদ ওয়াক্কাসকে নির্বাচনী মাঠে পাননি সাধারণ জনগণ। যে কারণে ক্ষোভ-হতাশা দু’টোই বিরাজ করছে এ প্রার্থীকে নিয়ে। এ জোটের মধ্যে দেখা দিয়েছে নেতৃত্ব সংকট।
দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যেও ক্ষোভের বহি: প্রকাশ ঘটেছে ব্যাপক ভাবে। অনেকে মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হয়ে চলতি এ নির্বাচনে তিনিসহ কর্মীরা নিস্ক্রীয়তা অবস্থান করছেন। তবে বিভিন্ন সূত্র জানায়, স্থানীয় বিএনপির হাইকমান্ডের নির্দেশনার অপেক্ষায় কর্মীরা বসে রয়েছেন। যে কোন মুহূর্তে নেতাদের নির্দেশ পেলেই তারা নির্বাচনী কার্যক্রমে ঝাপিয়ে পড়বে। অপর দিকে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস এখনও নির্বাচনী মাঠে না আসার কারণে তাদের নির্বাচনী কার্যক্রমটা অনেকটাই মুখথুবড়ে পড়েছে। ফলে তারা ভোটের মাঠের কার্যক্রম গুছিয়ে আনতে হিমশিম খাচ্ছে।
আওয়ামীলীগের দলীয় একক প্রার্থী স্বপন ভট্টাচার্য্য নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন ফুরফুরে মেজাজে। তিনি দলীয় নেতাকর্মদের নিয়ে কাকডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন প্রত্যান্ত অঞ্চলে নির্বাচনী গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। বৃহত দলের একক প্রার্থী হওয়ায় নির্বাচনী মাঠে তারই সরবটা বেশি লক্ষ্যনীয়। কর্মীরাও ছুটছেন মাঠের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে।
ইসলামী আনন্দোলন বাংলাদেশ (হাতপাকা) মাইকিং প্রচারণাও চলছে খুব জোরেসরে। ইসলামী আনন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থী ইবাদুল ইসলাম খালাসী হালকা শীতের মাঝে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যতদূর পারছেন প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। উপজেলাব্যাপী হাতপাখা মার্কার পক্ষে যথেষ্ট নির্বাচনী প্রচার লক্ষ্য করা গেছে। অপরদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম হালিম (লাঙ্গল) গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন খুব জোরেসরে। কর্মীদের তৎপরতা কম থাকলেও পোষ্টার এবং প্রচার মাইকিং চলছে খুব সরবভাবে।
তবে হঠাৎ চমকে দিয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামীলীগ ঘরোনার আলহাজ্ব কামরুল হাসান বারী। গত ১৩ ডিসেম্বর দুপুরে দুই শতাধিক মোটরসাইকেল বহর নিয়ে বের হন উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে। এদিন সন্ধ্যা পূর্ব মুহুর্তে সাবেক তিনবার সংসদ সদস্য মরহুম বীরমুক্তিযোদ্ধা এড. খাঁন টিপু সুলতানের মাজার জিয়ারত করতে যান। তাঁর নির্বাচনী মাঠ বেশ সরগরম হওয়ায় গত ১৪ ডিসেম্বর রাত ১০ টার দিকে একদল দূর্বৃত্তরা পৌর শহরের জি এন ফিলিং ষ্টেশনের সন্নিকটে কামরুল হাসান বারীর প্রধান নির্বাচনী কার্য্যালয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এ আসন থেকে ৩ লক্ষ ১৯ হাজার ৮৪ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লক্ষ ৫৯ হাজার ৬’শ ৩৩ জন এবং মহিলা ভোটার ১ লক্ষ ৫৯ হাজার ৪’শ ৫১ জন। এ সকল ভোটাররা ১’শ ২৬টি ভোট কেন্দ্রে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। আর এ নির্বাচনকে সামনে রেখে মান-অভিমানটাও লক্ষ্যনীয় হয়ে উঠছে প্রতিনিয়ত।
গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হওয়ার দৃষ্টান্তও রয়েছে। যে কারনে এবছর স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল হাসান বারী অওয়ামীলীগের ঘরোনার ব্যক্তি হওয়ায় তিনি এখন নৌকা মার্কার দলীয় প্রার্থীর বিষফোড়া হয়ে দাড়িয়েছেন।
প্রার্থী হিসেবে এখনো দেখা মেলেনি জাকের পার্টির দলীয় প্রার্থী রবিউল ইসলাম এবং জাগপার নিজামুদ্দিন অমিতকে। তবে নির্বাচনী দিন যত নিকবর্তী হচ্ছেন ততই সরব হচ্ছেন নির্বাচনী মাঠ। বড় ধরনের কোন দূর্ঘটনা এড়াতে প্রশাসনও শক্ত অবস্থানে রয়েছেন সবখানে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বেনাপোলে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক বর্জন করলো সাংবাদিকরা
বেনাপোল স্থলবন্দর আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের দ্বিতীয়তলায় নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও স্থলবিস্তারিত পড়ুন
ঝিকরগাছায় বাস চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী শিশুসহ দু’জন নিহত
যশোরে বাস চাপায় এক শিশু ও এক মোটসাইকেল আরোহীর মৃত্যুবিস্তারিত পড়ুন