মঞ্চে ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকা দুই পুলিশ প্রত্যাহার
বরেণ্য শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবালের নিরাপত্তায় থাকা যে দুই পুলিশ সদস্য মঞ্চে দাঁড়িয়ে মোবাইল ফোন ঘাঁটাঘাটি করছিলেন, তাদেরকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। সিলেটের মহানগর পুলিশ কমিশনার এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে হামলাকারী ফয়জুল ইসলামের বাবা ও মাকেও আটক করা হয়েছে।
শনিবার জাফর ইকবাল তার কর্মস্থল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে এক অনুষ্ঠানে হামলার শিকার হন। হামলার আগে তোলা এক ছবিতে দেখা যায়, হামলাকারী ফয়জুর তার ঠিক পেছনেই দাঁড়িয়ে আছেন। আর মঞ্চে জাফর ইকবালের পেছনে ডাক দিকে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনজন পুলিশ সদস্য। এদের মধ্যে দুজন মোবাইল ফোন ঘাঁটাঘাঁটি করছিলেন।
আর হামলার পর পুলিশ সদস্যরা হামলাকারীকে আটকাতে না পারলেও সাধারণ ছাত্ররা ঠিকই তাকে আটকে ফেলে।
হামলার পরপরই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ জানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা। সিলেটের পুলিশ কর্মকর্তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান।
পরদিন রবিবার সকালে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল দাবি করেন, জাফর ইকবালের নিরাপত্তায় কোনো ঘাটতি ছিল না।
জাফর ইকবালের স্ত্রী শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষক ইয়াসমিন হকও পুলিশকে কোনো দোষারোপ করেননি। তিনিও বলেন, ‘২৪ ঘণ্টাই আমাদের সঙ্গে পুলিশ থাকে। মঞ্চেও আমি ফিল করি না যে এটার জন্য সঙ্গে সঙ্গে সরকারকে ব্লেম করা, সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে ব্লেইম করা ঠিক হবে।
ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) একজন সদস্য হামলাকারীকে বাধা দিতে গিয়ে আহত হন জানিয়ে ইয়াসমিন বলেন, ‘পুলিশ বেস্ট চেষ্টা করেছে, বাধা দিয়েছে।’
জাফর ইকবালের স্ত্রী পুলিশকে দোষারোপ না করলেও এই শিক্ষাবিদের ভক্ত এবং অনুসারীরা পুলিশের মোবাইল ফোন ঘাঁটার সেই ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে তীব্র সমালোচনা করে আসছেন।
এই পরিস্থিতিতেই দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে নেয় বাহিনীটি। তবে এই দুই জন কারা, তাদের নাম জানানো হয়নি।
জানতে চা্ইলে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়া ঢাকাটাইমসকে এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ‘দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে দুই পুলিশকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে নেয়া হয়েছে।
জাফর ইকবাল এখন ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতালের প্রধান কার্ডিয়াক অ্যান্ড কনসালটেন্ট সার্জন মেজর জেনারেল মুন্সি মো. মজিবুর রহমান জানিয়েছেন, এই শিক্ষাবিদ এখন সম্পূর্ণ শঙ্কামুক্ত। তবে সংক্রমণের আশঙ্কায় তাকে কয়েকদিন হাসপাতালে রাখতে হবে।
এই চিকিৎসক জানান, জাফর ইকবালের মাথার পেছনে ছোট চারটি, পিঠের ওপরের দিকে একটি এবং বাম হাতে একটি আঘাত করা হয়েছে। মাথার আঘাত স্কিন (চামড়া) ও মাসলে (পেশী) লেগেছে, ব্রেনে (মগজ) লাগেনি। পেটেও কোনো আঘাত নেই। সকালে (রবিবার) তিনি পানি জাতীয় খাবার খেয়েছেন।
হামলাকারী ফয়জুলের বাবা-মা আটক
এদিকে সিলেটের জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, রবিবার রাত ১১টার দিকে নগরীর মদিনা মার্কেট এলাকা থেকে ফয়জুলের বাবা আতিকুর রহমান ও মা মিনারা বেগম আটক করেছেন তারা।
আতিকুরের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায়। তিনি সিলেটের টুকেরবাজার এলাকায় একটি মহিলা মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন।
বিশ্ববিদ্যায় সংলগ্ন শেখপাড়া এলাকায় একটি বাড়িতে গত এক বছর ধরে থাকে ফয়জুলের পরিবার। তবে হামলার পর সেখানে অভিযান চালালেও তার বাবা-মাকে পাওয়া যায়নি।
পরে ফয়জুরের মামা ফজলুর রহমান ফজলুকে আটক করে নিয়ে আসে পুলিশ। আর সুনামগঞ্জের দিরাই থেকে আটক হন ফয়জুলের চাচা আবুল কাহার লুলই।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
এনামুল-সম্রাটসহ ৪ জনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ
ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ততা ও অবৈধ অর্থ লেনদেনের অভিযোগে সংসদবিস্তারিত পড়ুন
‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন