ব্রেক্সিট নিয়ে অচলাবস্থা : শর্তসাপেক্ষে পদত্যাগের ঘোষণা তেরেসার
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে বলেছেন, ব্রেক্সিট নিয়ে সংসদে তার উত্থাপিত প্রস্তাব পাস হলেই তিনি পদত্যাগ করবেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার এই প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপে তিনি আর নেতৃত্ব দিতে চান না। গতকাল বুধবার ডাউনিং স্ট্রিটে নিজ দলের এমপিদের উদ্দেশে আবেগময়ী ভাষণে তেরেসা বলেন, তিনি চান নতুন প্রধানমন্ত্রী ব্রেক্সিট আলোচনায় নেতৃত্ব দিক।
তেরেসা বলেন, ‘দেশ ও দলের জন্য আমি কাঙ্ক্ষিত সময়ের আগেই পদ ছেড়ে দিতে চাই। আমি চাই সবাই চুক্তিতে সমর্থন দিক যাতে মসৃণ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে ইইউ থেকে ব্রিটেন বেরিয়ে আসতে পারে।’ তবে ভাষণে তিনি পদত্যাগের
কোনো সুনির্দিষ্ট তারিখ জানাননি। এ সময় তেরেসার কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে আসছিল। খবর বিবিসি, নিউইয়র্ক টাইমস, ইনডিপেনডেন্ট ও ডেইলি মেইলের।
পৌনে তিন বছর আগে সামান্য ব্যবধানে যুক্তরাজ্যের জনগণ ব্রেক্সিটের পক্ষে ভোট দিলে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান ডেভিড ক্যামেরন। তার স্থলাভিষিক্ত হন তেরেসা। তবে সম্প্রতি এই ইস্যুতে তিনিও বেশ নাকাল হয়েছেন। তেরেসা দল ও সংসদে আস্থা হারিয়েছেন। তার মন্ত্রিসভায় ভাঙন ধরেছে। দলীয় এমপিরাও সংসদে তার বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। এসবই ছিল তেরেসার জন্য দারুণ অবমাননাকর। ব্রিটেনের আধুনিক ইতিহাসে কোনো প্রধানমন্ত্রী এভাবে নাস্তানাবুদ হননি।
ব্রেক্সিট নিয়ে গতকাল ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এক অভিনব পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ব্রেক্সিটে কোন অপশন (বিকল্প) বেছে নেওয়া হবে তা নিয়ে এ দিন সংসদে ভোট হয়। সংসদে ভোটাভুটির জন্য ৮টি অপশন বাছাই করেন স্পিকার জন বারকাউ। এমপিরা কাগজে-কলমে ভোট দেন যে তারা এর মধ্যে কোন অপশনটি বেছে নিতে চান। এই প্রক্রিয়া শেষ হতে আরও কয়েকদিন লেগে যেতে পারে।
এমপিরা ব্রেক্সিট চুক্তির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর তিনটি বিকল্প নিয়ে আলোচিত হয়। প্রথমত, তেরেসার চুক্তি পাস কিন্তু পদ থেকে তার বিদায়ের ঘোষণা। দ্বিতীয়ত, চুক্তি ছাড়াই ব্রিটেনের ইইউ ত্যাগ এবং তৃতীয়ত, ব্রেক্সিটকে বিদায় জানিয়ে এই জোটে যুক্তরাজ্যের অবস্থান। এ ছাড়া ব্রিটেনে আগাম নির্বাচনের কথাও জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছে।
ব্রিটেন যখন এই সংকট নিয়ে উত্তেজনাকর মুহূর্ত পার করছে, তখন তাতে আরও পারদ ঢেলেছেন ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক। ব্রিটেন ইইউতে থাকবে ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ‘ইইউ সাংসদরা সেই ৬০ লাখ মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারেন না যারা আর্টিকেল ৫০ (ইইউ থেকে বিচ্ছেদ) বাতিল করার আবেদন করেছেন, সেই ১০ লাখ লোক যারা আবার ভোটের (ব্রেক্সিট নিয়ে গণভোটের) জন্য পদযাত্রা করেছেন এবং ক্রমবর্ধমান সেই জনগণ যারা ইইউতে থাকতে আগ্রহী।’
২৯ মার্চ ব্রিটেনের ইইউ ত্যাগ করার কথা ছিল। দুই বছর ধরে আলোচনার পর ব্রিটেন ও ইইউর মধ্যে এই সমঝোতা হয়েছিল। পরে তেরেসার আবেদনে চূড়ান্ত চুক্তির জন্য ১২ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বাড়িয়েছে ইইউ। বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রেক্সিট নিয়ে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট পড়েছে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি ব্রিটেন।
সর্বশেষ হিসাবে, তেরেসার ব্রেক্সিট চুক্তি পাস করতে নিজ দলের বিদ্রোহী এমপিসহ অন্তত ৭৫ জন বিরোধী আইন প্রণেতার সমর্থন প্রয়োজন, যারা এর আগে দুই দফায় প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ওই দু’দফাতেই বিপুল ভোটে তেরেসার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হয়।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
পাকিস্তানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ১৯ জনের মৃত্যু
পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে শক্তিশালী ৫ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের আঘাতে ১৯বিস্তারিত পড়ুন
২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় হিক্কা
ধেয়ে আসছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিক্কা। এর ফলে ঝড়ের পাশাপাশি ভারীবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন