বেনাপোল পৌরসভার উন্নয়ন কাজে চলছে শুভঙ্করের ফাকি
দীর্ঘ এক বছর ধরে উন্নয়ন কাজের নামে যশোর-কোলকাতা মহাসড়কের বেনাপাল পর্যটন মোটেল থেকে চেকপোস্ট সাদিপুর পাকা রাস্তার মোড় পর্যন্ত দু’পাশের প্রায় ৬ কিলোমিটার রাস্তার উন্নয়ন কাজে ব্যাপব অনিয়ম হচ্ছে।এতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেনন এলাকার সাধারণ জনগন।
এ বিষয়ে বেনাপোল পৌর ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন উন্নয়ন কাজটির প্রথমে পাথর আর বালি দিয়ে রোলার করার কথা জানালেও সরেজমিনে তা ভিন্ন। নাম্বার বিহীণ ইট আর কাদামাটিসহ দো-আশ মাটির মিশ্রণে প্রথমাবস্থার রোলারের কাজ চলছে। দ্বিতীয়ার্ধে মাটি মিশ্রিত সাদা পাথর আর নিম্নমানের বালি দিয়ে হালকা রডের বোননে সিডিউল পরিপন্থী সিমেন্ট ব্যবহার করে করা হচ্ছে ঢালাইকরণ। যা সহ্য করতে না পেরে বেনাপোলের প্রত্যক্ষদর্শী সচেনত নাগরিকরা বলেন ছবি তুলে লাভ নেই, এখানে সরকারের শতশত কোটি টাকার উন্নয়ন কাজের বরাদ্ধ থেকে নামে-বেনামে ঠিকাদার সেজে বেনাপোল পৌর সচিব রফিকুল ইসলাম পৌরবাসির মাথার উপর কাঁঠাল থুয়ে কোষ তুলে খেয়ে যাচ্ছেন যা স্থানীয়দের মধ্যে দেখার কেউ নেই বলেই মগজ বিহীন বেনাপোল বলে মন্তব্য করেন স্থানীয় সাধারণ জনগণ।
দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে ভারতসহ কয়েকটি দেশের পর্যটকরা যাতায়াত করেন।প্রতিদিন বেনাপোল বন্দরে জমা হয় দু’দেশের আমদানি-রপ্তানিবাহী ট্রাক ও দূরপাল্লার পরিবহন। সপ্তাহের ৭দিনই ২৪ ঘন্টা বেনাপোল বন্দরের কার্যক্রম সচল থাকায় ব্যস্ততম বন্দর নগরীর রাস্তাথাকে যানযটে ভরা।
একদিকে ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্য নিয়ে বেনাপোল বন্দরের ঢুকছে শতশত ভারতীয় ৬ চাকা থেকে ৩২ চাকার ভারী পণ্যবাহী ট্রাক। এখানে আনলোড হচ্ছে আবার এখান থেকে বাংলাদেশের ট্রাক পণ্য বোঝাই নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলে যাচ্ছে। অপরদিকে বাংলাদেশ থেকে পাট ও পাটজাত দ্রব্যসহ বিভিন্ন ধরণের পণ্য সামগ্রী নিয়ে ভারতে রপ্তানির জন্য প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে যাচ্ছে শতশত রপ্তানীবাহী ট্রাক। সেসাথে ভারত-বাংলাদেশসহ বিশে^র কয়েকটি দেশের নাগরিক বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্টযোগে যাতায়াত করায় দূরপাল্লার ও স্থানীয় পরিবহন বেনাপোল পৌর এলাকায় যাতায়াত করে। সেকারণে এখানকার রাস্তা প্রশ^স্ত ও মজবুত করার জন্য পর্যটন মোটেল থেকে চেকপোস্ট (সাদিপুর পাকা রাস্তার মোড়) পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারের (৩ +৩) ৬ কিলোমিটার রাস্তার উন্নয়ন কাজের জন্য ইতিমধ্যে সরকার ১১ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয় বেনাপোল পৌরসভার। যা দেখার কেউ না থাকায় রাস্তার দু’ধারের ইটের সলিং তুলে তা খোয়া বানিয়ে ময়লা আবজনা ভর্তি পলিথিন, কাদামাটি, দো-আশ মাটি ও যতসামান্য বালি দিয়ে উন্নয়ন করা হচ্ছে প্রথমাবস্থার বেজ। পরে মাটি যুক্ত সাদা পাথর বালির সাথে দেওয়া হচ্ছে সামান্য পরিমাণে মোটা বালি। ঢালাই করা হচ্ছে সিডিউল বহির্ভূত রড ও সিমেন্ট দিয়ে।ঢালাইয়ের দু’ধারে সিডিল মোতাবেক ঢালাই হলেও মাঝখানের ঢালাইগুলো খুবই সরু। বেনাপোলে যে পরিমাণের ভারী যানবাহন চলাচল করে তা সহ্য করার ক্ষমতা এ রাস্তার নেই বলেও মন্তব্য করেন প্রত্যক্ষদর্শীসহ বেনাপোল পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারি ও রাস্তা উন্নয়নে কাজ করা শ্রমিকরা।
সরেজমিন পরিদর্শণকালে বেনাপোল পৌর এলাকা উন্নয়নের কাজ করা মোবারেক আলী নামের এক বয়জৈষ্ঠ্য ব্যক্তি নিজেকে উল্লেখিত কাজের ঠিকাদার তথা বেনাপোল পৌরসভার সচিব রফিকুল ইসলামের নিযুক্ত লেবার পরিচয় দিয়ে বলেন, বালু ও পাথর দিয়ে রাস্তার বেজ ও ঢালাই করার কথা মোতাবেক কাজ করা হচ্ছে। এসময় কাদামাটি আর নাম্বার বিহীন ইটের উপর রোলার করা হচ্ছে তা দেখিয়ে ওই ভদ্র লোককে এগুলো কি বলা হলে তিনি সদুত্তর দিতে পারেনি। বলে, এই কাজের ঠিকাদার তথা পৌরসভার সচিব রফিকুল ইসলাম যেভাবে কাজ করতে বলেছে সেভাবেই করা হচ্ছে।
রোলার চালক জসিম উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি চাকরি হারানোর ভয়ে এ প্রতিবেদকের কাছে কোন তথ্য দিতে রাজি হয়নি। একে একে রাস্তা উন্নয়নের কাজ করা সকল শ্রমিকদের কাছে উল্লেখিত কাজে শুভঙ্করের ফাঁকি ও ভয়াবহতা নিয়ে আলোচনা করলে কিছু সময়ের জন্য হলেও দেশ প্রেম এবং বিবেকের তাড়নায় হাফ ছেড়ে বলেন বেনাপোল পৌর নগরীর এই ৬ কিলোমিটার উন্নয়নের কাজসহ এ এলাকার সকল কাজের পরীক্ষা করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।
এ বিষয়ে কথা হয় বেনাপোল পৌর সভার এই উন্নয়ন কর্মকান্ডের ইঞ্জিনিয়ার মোশারেফ হোসেন’র সাথে। তিনি বলেন বেনাপোল পর্যটন মোটেল থেকে চেকপোস্ট(সাদিপুর পাকা রাস্তার মোড়) পর্যন্ত তিন তিন ৬ কিলোমিটার রাস্তাসহ আরো ছোট খাট ৫টি উন্নয়ন কাজে ১১ কোটি টাকার বরাদ্ধ মোতাবেক কাজ করা হচ্ছে। তবে কাদামাটি, দো-আশ মাটি আর ইটের খোয়ার মাধ্যমে বেজের কাজ নিয়ে তিনি বিষ্ময় প্রকাশ করেন। বলেন, বালু আর পাথরের খোয়া দিয়ে বেজের কাজ হওয়ার কথা। বিষয়টি ক্যামেরা বন্দি করা হয়েছে বলে জানালে তিনি ভালো তথ্য দেওয়া হয়েছে এবং সরেজমিন পরিদর্শণ করবে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে বেনাপোল পৌরসভার সচিব রফিকুল ইসলামের মোবাইলে বারংবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বেনাপোলে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক বর্জন করলো সাংবাদিকরা
বেনাপোল স্থলবন্দর আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের দ্বিতীয়তলায় নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও স্থলবিস্তারিত পড়ুন
ঝিকরগাছায় বাস চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী শিশুসহ দু’জন নিহত
যশোরে বাস চাপায় এক শিশু ও এক মোটসাইকেল আরোহীর মৃত্যুবিস্তারিত পড়ুন