বেনাপোল চেকপোষ্টে পাসপোর্ট যাত্রীরা বিড়ম্বনায়
যশোরের বেনাপোল চেকপোষ্টে বৈধ পাসপোর্টযাত্রীরা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। নানাভাবে হয়রানি হচ্ছে তারা। এসব ব্যাপারে সাংবাদিকদের কাছে একাধিক অভিযোগ করেছেন তারা। আন্তর্জাাতিক চেকপোষ্ট বেনাপোল দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার দেশী বিদেশী পাসপোর্টযাত্রী বাংলাদেশ ভারত যাতায়াত করছে।তল্লাশীর নামে পথে কয়েক জায়গায় বিজিবি তাদের বিড়ম্বনায় ফেলে।এমন কি হয়রানিও হতে হয় বিজিবির কাছে। যাত্রীদের মালামাল কেড়ে নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে বিজিবি’র বিরুদ্ধে।
ঢাকার কেরানিগঞ্জের পাসপোর্টযাত্রী মোং আব্দুর রাজ্জাক ( পাসপোর্ট নং- ০২৪৭৩৬৭) অভিযোগ করেন তার কিনে আনা শার্ট প্যান্টের পিস্ ও পুরাতন ব্যবহার করা আয়রন করা শার্ট বেনাপোল চেকপোষ্ট বিজিবি রেখে দিয়েছে। তারকথা ১০০ শত ডলারের মাল ক্রয় করেছি । তাও তারা রেখে দিয়েছে। সে জানায় কাষ্টমস ৪ শত ডলারের পন্য ভারত থেকে শুল্ক বাদে আনার অনুমতি দিলে ও বিজিবি তা মানছে না। এ ছাড়া যশোরের রেলগেট এলাকার শিরিনা বেগম কান্নার সুরে বলেন তার ৫ জোড়া জুতা , দুটি শাড়ি, ৩টি থ্রিপিছ বিজিবি জোর করে ক্যাম্পে নিয়ে গেছে। এরকম শিরিনার মত কয়েকজন একই ধরনের অভিযোগ করেন বেনাপোল চেকপোষ্ট বিজিবি’র বিরুদ্ধে।
ঢাকার পাসপোর্টযাত্রী আলমগীর কবির বলেন, কাষ্টস স্কানিং করার পরেও ব্যাগ খুলে চেক করা হয়। কাষ্টমস শুল্ক গোয়েন্দারা ব্যাগ তল্লাশি করে এরপর গেট পার হলে রাস্তার উপর বিজিবি ঐ একই ব্যাগ খুলে তল্লাশি শুরু করে। আবার ক্যাম্পে পাঠায়। এটা কোন সভ্য সমাজের কাজ হতে পারে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বেনাপোল চেকপোষ্টের একটি সুত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে প্রতিদনি ভারত থেকে মদ, গাজা , ফেনসিডিল, চকলেট, বিস্কুট, কসমেটিক সহ নানা ধরনের পন্য বাজার ছেয়ে ফেলছে। আবার বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার স্বর্ন পাচার হলে ও বিজিবি আশনুরূপ কোন সফলতানেই। মাঝে মাঝে দুই একটি চালান আটক করলে সিংহ ভাগ চলে যাচ্ছে ভারতে। সম্প্রতি বিজিবি পুটখালী সীমান্তের ৮ কিলোমিটার ফ্রি ক্রাইম জোন ঘোষনা করলে ও সেখানে থেমে নেই স্বর্ন ও মাদক পাচার। পাসপোর্ট যাত্রীর নিকট থেকে বিজিবি যে সব পন্য রেখে দিচ্ছে। তার কোন ডিএম স্লিপ দেয়া হয়না। এ পন্য গুলো কোথায় কিভাবে যাচ্ছে বা কাষ্টমসে সঠিক ভাবে জমা হচ্ছে কিনা তার কোন সঠিক প্রমানাদি নেই।এর আগে পাসপোর্টযাত্রীদের নিকট থেকে যে সব মাল বিজিবি রেখে কাষ্টমসে জমা করত সেসব পন্যর স্লিপ দেয়া হতো। ইদানিং এসব স্লিপ তারা দিচ্ছে না।
পাসপোর্টযাত্রীদের নিকট থেকে যে পন্য রেখে দেয়াহয় তার পুরোটা শুল্ক গুদামে জমা দেয়া হয় না। কিছু পন্য তারা আত্মসাৎ করছে বলে অভিযোগ পাসপোর্ট যাত্রীদের ।কথাহয় ঢাকার পাসপোর্টযাত্রী ফারুক হোসেনের সাথে, তিনি অভিযোগের সুরে বলেন সরকারের কাষ্টমস বিভাগ ব্যাগ স্কানিং ও তল্লাশি করে ছেড়ে দেওয়ার পর সরকারি আর ও একটি সংস্থা একই ব্যাগ কাষ্টমস গেটে, আমড়াখালী চেকপোষ্টে, ট্রেন ষ্টেশনে ও মাঝে মাঝে ঝিকারগাছার লাউজানি, নতুনহাট ও খাজুরা এলাকায় চেক করে থাকে। এতে করে হয়রানী হতে হতে ধৈর্য্যর বাধ ভেঙ্গে যায়। মানুষের সহ্যেরও একটা সীমা আছে। আমরা সবাই জিম্মি হয়ে গেছি প্রশাসনের লোকদের কাছে।
বেনাপোল কাষ্টমসের একটি সুত্র জানায় বন্ডেড এলাকার ৫ কিলোমিটারের ভিতর বিজিবির বৈধ পাসপোর্টযাত্রীদের কোন পন্য দেখার নিয়ম নেই
তবুও তারা এটা দেখছে আমাদের কিছু করার নেই। এ নিয়ে বার বার বৈঠক হওয়া সত্বেও বিজিবি তা মানছে না বলে সুত্র জানায়।
বেনাপোল সিএন্ড এফ এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান স্বজন এ ব্যাপারে বলেন এনবিআর চেয়ারম্যন সহ বার বার বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করলেও কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না বলে তিনি জানান। দেশী বিদেশী পাসপোর্ট যাত্রীরা বেনাপোল চেকপোষ্টে এসে অসম্মানিত হচ্ছে বলেও তানার অভিমত।
এফএস পরিচয়ের সদস্য বলে বিজিবি আমড়াখালি চেকপোষ্টের সুবেদার মিজানুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমাদের উপরের নির্দেশ আছে বৎসরে একজন পাসপোর্টযাত্রী ৩ বার ৪ শত ডলারের পন্য আনতে পারবে। আর যে সব পন্য আমরা আটক করছি তা মালিক বিহীন করা হচ্ছে। পাসপোর্ট প্যাজেঞ্জারদের এসব আটক পন্য কাষ্টমস শুল্ক গুদামে জমা করা হয় বলে তিনি জানান।
বেনাপোল বাজার নাভারন বাজার ঘুরে দেখা গেছে বিভিন্ন দোকানে ভারতীয় ইমিটেশন, কসমেটিক্স, চকলেট, বিস্কুট, হরলিক্স সহ নানা ধরনের পন্য সয়লাব। এসব পন্য চেরাইপথে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে বলে বিভিন্ন সুত্রের দাবি । বেনাপোলের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে প্রতিদিন ফেনসিডিল আসছে ঈদ উপলক্ষে। বেনাপোল চেকপোষ্ট যাত্রী টার্মিনালে প্রশাসনের নাকের ডগায় ফেনসিডিল বেচাকেনা হলে ও প্রশাসন রয়েছে নীরব। শুধু নজর পাসপোর্ট যাত্রীদের দিকে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বেনাপোলে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক বর্জন করলো সাংবাদিকরা
বেনাপোল স্থলবন্দর আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের দ্বিতীয়তলায় নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও স্থলবিস্তারিত পড়ুন
ঝিকরগাছায় বাস চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী শিশুসহ দু’জন নিহত
যশোরে বাস চাপায় এক শিশু ও এক মোটসাইকেল আরোহীর মৃত্যুবিস্তারিত পড়ুন