বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪

কলারোয়া নিউজ

প্রধান ম্যেনু

সাতক্ষীরার সর্বাধুনিক অনলাইন পত্রিকা

বিশ্বে জনসংখ্যা বাড়ছে, কিন্তু খাদ্য আসবে কিভাবে?

২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের জনসংখ্যা এক হাজার কোটিতে দাঁড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সীমিত জমিতে যে পরিমাণে চাষ ইতিমধ্যে হয়েছে আর তাতে পরিবেশের যে ধরনের ক্ষতি হয়ে গেছে, ভবিষ্যতে যতটুকু আর সম্পদ বাকি থাকবে তা দিয়ে বিশাল সেই জনসংখ্যার খাদ্যের যোগান কিভাবে হবে?

এই প্রশ্নটি বেশ ভাবনা তৈরি করেছে। যেমন ভিয়েতনামের কথাই ধরা যাক। সেখানে এখন চলছে ফসল লাগানোর মৌসুম। সেখানকার গ্রামগুলোতে এখন যেদিকে দুচোখ যায় দেখা যাবে বিখ্যাত ভিয়েতনামিজ হাতে বোনা ত্রিভুজ আকারের ঝাঁপি মাথায় দিয়ে কৃষকরা মাটিতে চারা গুঁজছেন।

দেশটির অর্থনীতি এবং খাদ্যের যোগানের জন্য ধান চাষ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশটিতে কৃষকরা বেশি ফলনের জন্য নাইট্রোজেন রয়েছে এমন সারের ওপর খুব নির্ভরশীল। কিন্তু সেই নাইট্রোজেন পানিতে মিশে যাচ্ছে। নদী আর সমুদ্র দূষিত হচ্ছে। বাষ্পীভূত হয়ে মিশে যাচ্ছে বায়ুমণ্ডলে।

ভিয়েতনামের রাজধানী প্রাণচঞ্চল হ্যানয় শহর থেকে দুই ঘণ্টা গেলে তিয়েন হাই। ছোট এই শহরে রয়েছে আন্তর্জাতিক এক গবেষণা কেন্দ্র। সরাসরি প্রকৃতি থেকে গাছে নাইট্রোজেন নিতে সহায়তা করে এমন একটি ব্যাকটেরিয়া দিয়ে এখানে ধান চাষ করে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে সেটি কৃষকদের সারের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে পারে কিনা। যা ভবিষ্যতে দূষণ কমাতে সাহায্য করবে।

এই গবেষণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভিয়েতনামের ফিল্ড ক্রপ রিসার্চ ইন্সটিটিউটের ড. ফ্যাম থি থু হুয়ং। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘অন্য আরো অনেক ফসলের মতো ধান দরকারি নাইট্রোজেনের জন্য সারের ওপর নির্ভরশীল। যার ৫০ শতাংশই বাষ্প হয়ে যাচ্ছে বা ধুয়ে যাচ্ছে। যা থেকে নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড তৈরি হচ্ছে। যা গ্রিনহাউস গ্যাস হিসেবে কার্বন ডাই-অক্সাইডের চেয়ে তিন শ গুণ বেশি ক্ষতিকর।’

ড. হুয়ং ওই বিশেষ ব্যাকটেরিয়া মেশানো ১৫ দিন বয়সী ধানের চারা এবং ব্যাকটেরিয়াবিহীন চারা রোপণ করছেন এবং তার ফলনের ওপরে নজর রাখছেন। চারাগুলোর ওজন ও উচ্চতা পর্যবেক্ষণ করছেন। এই ব্যাকটেরিয়া বিশেষ করে আখ গাছে পাওয়া যায়। যা আখ গাছকে সরাসরি প্রকৃতি থেকে তার দরকারি নাইট্রোজেন নিতে সহায়তা করে।

মৃত বলয়

এই নাইট্রোজেন প্রধান সারের ও কীটনাশক ব্যবহার শুরু হয়েছিল ষাটের দশকে। যখন ‘সবুজ বিপ্লব’ শুরু হয়েছিল। সেই সময় এর ব্যবহার লক্ষ লক্ষ মানুষের খাদ্যের যোগান দিয়েছিল।

কিন্তু এর মারাত্মক বেশি ব্যবহারে তা সমুদ্রে ও অন্যান্য পানিতে মিশে যেতে থাকে। একপর্যায়ে এর গুণাবলী অকার্যকর হয়ে ওঠে। বাড়তি নাইট্রোজেন এক ধরনের শ্যাওলার জন্ম দেয়। যা পচে গিয়ে এতটাই বেশি অক্সিজেন ব্যবহার করে যে আশপাশের অন্যান্য জলজ জৈববৈচিত্রের জন্য তা শ্বাসরোধী হয়ে ওঠে।

পৃথিবীজুড়ে এখন এরকম ৫০০টি এলাকা রয়েছে যাকে বলা হয় ‘ডেড জোন’। গত ৫০ বছরে এর পরিমাণ চারগুণ বেড়েছে।

কৃষকের কথা

ভিয়েতনামে বছরে তিনবার লক্ষ লক্ষ কৃষক কোটি কোটি চারা বপন করছেন। বছরে তা থেকে ১৩০০ কোটি ডলার আয় হয়। ভালো ফলনের ওপর নির্ভরশীল বুই থি সুয়টের পরিবার। তিনি বলেন, ‘সার ব্যবহারে পরিবেশের ক্ষতির কথা সম্পর্কে আমরা জানি। কিন্তু ফসলের তো সার দরকার হয়। আমরা কৃষক। আমাদের আর কোনো উপায় নেই।’

সুপার ব্যাকটেরিয়া সমাধান?

এখন প্রশ্ন হচ্ছে বিশ্বের অর্ধেক কৃষক ও ফসল যখন কৃত্রিম সারের ওপর নির্ভরশীল তখন পরিবেশের আর ক্ষতি না করে পৃথিবীর বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য খাবারের যোগান কিভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব?

ড. হুয়ং এর ব্যাকটেরিয়া চিকিৎসা নিয়ে পরীক্ষা হয়তো তার একটি সমাধান হতে পারে। এই অভিনব ব্যাকটেরিয়া সম্ভাবনা প্রথম বের করেন যুক্তরাজ্যের ক্রপ নাইট্রোজেন ফিক্সেশান সেন্টারের জীববিজ্ঞানী ড. টেড ককিং। যা পরীক্ষাগারে সফল হয়েছে। ড. ককিং এর প্রচেষ্টা ছিল মাঠে কীভাবে এই পদ্ধতি সফল করার যায় সেদিকে।

২০১১ সালে কৃষি উদ্যোক্তা পিটার ব্লেজার্ডের সঙ্গে মিলিত হয়ে কাজ শুরু করেন ড. ককিং। তারা অ্যাজোটিক নামের একটি কম্পানি গড়ে তোলেন যা ভিয়েতনামে ড. হুয়ং এর পরীক্ষার জন্য অর্থ সহায়তা দিচ্ছে। ব্লেজার্ডের আশা. আগামী বসন্ত মৌসুম থেকে পাউডার অথবা তরল আকারে এই সুপার ব্যাকটেরিয়া বাজারে পাওয়া যাবে।

ব্লেজার্ড বলেন, ‘এখন আমরা যুক্তরাষ্ট্র ও ইওরোপে ভুট্টা ও সয়া শস্যের ওপর কাজ করছি। ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড ও ফিলিপিন্সে ধানের ওপর পরীক্ষা চালাচ্ছি। ভিয়েতনামে আমরা লক্ষ্য করছি নাইট্রোজেন সার ৫০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ধান উৎপাদনও ১৫ শতাংশ বেড়েছে।’

কিন্তু সবাই খুশি নন

যুক্তরাজ্যের রথামস্টেড রিসার্চের অণুজীব বিজ্ঞানী ড. টিম মশলাইন। পৃথিবীর সব এলাকায় সকল প্রকার ফসলে এই সুপার ব্যাকটেরিয়া পদ্ধতি কাজে আসবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করছেন এই বিজ্ঞানী। তাঁর মতে, ‘এই পৃথিবীটা বিশাল একটা যায়গা। এর বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশ, আবহাওয়া, মাটি ও ফসল। একটা ওষুধেই যদি সব অসুখ সেরে যেতো তাহলে খুবই দারুণ হতো।’

ওদিকে, ড. হুয়ং তাঁর পরীক্ষায় দেখতে পেয়েছেন যে সবচেয়ে অনুকূল পরিস্থিতিতে কিছু জাতের ধান এই ব্যাকটেরিয়া চিকিৎসায় ভালো কাজ করছে। তাঁর ধৈর্য্য ও নির্ভুল দক্ষতার ফল হয়তো তিনি পাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রথম পরীক্ষা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছিল। এরপর আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত না সঠিকভাবে কাজটি হয়েছে ততক্ষণ পরীক্ষাগারে বারবার চেষ্টা করে গেছি।’

ড. হুয়ং আরো বলেন, ‘আশা করি আমার কাজ একদিন বিশ্বে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখবে। একইসঙ্গে প্রাকৃতিক সম্পদ’- এমন আশা করছেন এই বিজ্ঞানী।

একই রকম সংবাদ সমূহ

পাকিস্তানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ১৯ জনের মৃত্যু

পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে শক্তিশালী ৫ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের আঘাতে ১৯বিস্তারিত পড়ুন

২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় হিক্কা

ধেয়ে আসছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিক্কা। এর ফলে ঝড়ের পাশাপাশি ভারীবিস্তারিত পড়ুন

টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী

টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন

  • সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
  • রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় যুক্ত হচ্ছে চীন
  • ৩য় বারের মতো কাশ্মীর ইস্যুতে মধ্যস্ততার প্রস্তাব ট্রাম্পের
  • এক রাজার ১০০ স্ত্রী ও ৫০০ সন্তান! (ভিডিও)
  • মুখে মাকড়সা চড়লে ‘রিল্যাক্স’ অনুভূত হয় এই নারীর! (ভিডিও)
  • পানির নিচে বিয়ের প্রস্তাব দিতে গিয়ে মার্কিন নাগরিকের মৃত্যু
  • মাথায় ৪ ইঞ্চি লম্বা শিং নিয়ে হাসপাতালে বৃদ্ধ!
  • ১৩০টির বেশি দেশ ঘুরে বেড়ানো এক অন্ধ পর্যটকের গল্প
  • হেলমেট ঢোকেনি মাথায়, জরিমানা নিতে ব্যর্থ ট্রাফিক পুলিশ!
  • ৪ বছর প্রেম শেষে ৩০০ বছর বয়সী ভূতকে বিয়ে! (ভিডিও)
  • ছাগল চুরির ৪১ বছর পর ধরা পড়ল চোর!
  • যে গ্রামে প্রতিটা বাড়িই দরজাহীন, ব্যাংকে নেই তালা!